পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার নিভৃত গ্রাম নাঙ্গুলি। একসময় সেখানে সুপারিগাছের খোল ফেলনা হিসেবে পোড়ানো হতো। এখন সেই খোলই জীবিকার ভরসা হয়ে উঠেছে।

ফেলনা বস্তুটি থেকে তৈরি হচ্ছে একবার ব্যবহারযোগ্য থালা, বাটি, পিরিচসহ নানা তৈজস। পরিবেশবান্ধব এ উদ্যোগ বদলে দিচ্ছে গ্রামের অর্থনৈতিক দৃশ্যপট।

প্রাচীন ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে কাউখালী উপজেলার একসময় সুখ্যাতি ছিল দূরদূরান্তে। বিশেষ করে এখানকার শীতলপাটি আজও দেশজুড়ে প্রশংসিত। কাউখালী শহরে যাওয়ার আগে মূল সড়ক থেকে পূর্ব দিকে প্রশস্ত খালপাড় ধরে একটি সরু রাস্তা চলে গেছে। রাস্তা ধরে প্রায় আড়াই কিলোমিটার এগোলেই নাঙ্গুলি গ্রাম।

খালপাড়েই বড় একটি টিনশেড ঘর। সামনে ছোট্ট সাইনবোর্ডে লেখা, ‘ন্যাচারাল বিউটি’। এটিই সেই কারখানা। ২০২৩ সালের শেষ দিকে গ্রামের গৃহবধূ নিলুফা ইয়াসমিন ও তাঁর মামা ফরিদুল ইসলাম মিলে ছোট্ট কারখানাটি তৈরি করেন।

সম্প্রতি কারখানার ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে বিশাল কর্মযজ্ঞ। এক পাশে স্তূপ করে রাখা সুপারির খোল। অন্য পাশে সারিবদ্ধভাবে মোড়কজাত করে রাখা হয়েছে উৎপাদিত পণ্য। ঘরের এক পাশে সারিবদ্ধ কয়েকটি আধা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র (সেমি-অটো হাইড্রোলিক মেশিন)।

খালপাড়েই বড় একটি টিনশেড ঘর। সামনে ছোট্ট সাইনবোর্ডে লেখা, ‘ন্যাচারাল বিউটি’। এটিই সেই কারখানা। ২০২৩ সালের শেষ দিকে গ্রামের গৃহবধূ নিলুফা ইয়াসমিন ও তাঁর মামা ফরিদুল ইসলাম মিলে ছোট্ট কারখানাটি তৈরি করেন।

এই যন্ত্রে কিছু কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে হলেও কিছু কাজ হাতেই করতে হয়। যন্ত্রের বিভিন্ন ছাঁচ (ডাইস) দিয়ে উচ্চ তাপে তৈরি হচ্ছে নানা সামগ্রী।

উদ্যোগের শুরু যেভাবে

নিলুফা ইয়াসমিন থাকেন বরিশাল শহরে। তাঁর স্বামী রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বছর পাঁচেক আগে নিলুফা স্বামীকে নিয়ে কাউখালীতে মামা ফরিদুল ইসলামের বাড়িতে বেড়াতে যান। তখন প্রচুর সুপারিগাছ দেখে খোল দিয়ে কিছু বানানোর ভাবনা মাথায় আসে তাঁর। ফরিদুল ইসলামকে জানালে তিনি সম্মতি দেন। সেই অনুযায়ী নিলুফা তাঁর স্বামীর মাধ্যমে যন্ত্রপাতির খোঁজখবর নেন। ভারতে তাঁর এক বন্ধুর মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে আধা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রটির খোঁজ পান। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় আনতে পারেননি। পরে তাঁরা গাজীপুরের একটি ওয়ার্কশপে ভারতের ওই যন্ত্রের আদলে যন্ত্র তৈরির উদ্যোগ নেন। এক বছরের মাথায় তাঁদের উদ্যোগ সফল হয়।

বছর পাঁচেক আগে নিলুফা স্বামীকে নিয়ে কাউখালীতে মামা ফরিদুল ইসলামের বাড়িতে বেড়াতে যান। তখন প্রচুর সুপারিগাছ দেখে খোল দিয়ে কিছু বানানোর ভাবনা মাথায় আসে তাঁর।

উদ্যোক্তারা জানান, ২০২৩ সালের শেষ দিকে দুটি যন্ত্র সংযোজন করে কারখানাটি চালু করেন। শুরুতে খুব একটা সাড়া না পাওয়ায় মামা-ভাগনি কিছুটা হতাশ হন। স্থানীয় বাজারে পণ্যের চাহিদা না থাকায় প্রায় এক বছর লোকসান গুনতে হয়। এরপর তাঁরা অনলাইনে পণ্য বিক্রির চেষ্টা চালাতে থাকেন। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি ঢাকার একজন অনলাইন উদ্যোক্তা অল্প কিছু ফরমাশ দেন এবং ভালো সাড়া পেয়ে চাহিদা বাড়তে থাকে। এরপর ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় শহর থেকে ফরমাশ আসতে থাকে। কিন্তু বিপত্তি বাধে ফরমাশের বিপরীতে পণ্য উৎপাদন করা যায় না। পরে আরও দুটি যন্ত্র সংযোজন করেন।

বর্তমানে মাসে ৬০ হাজার পণ্য উৎপাদনে সক্ষম কারখানাটি। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন আকারের থালা, বাটি, পিরিচ, খাবারের বাক্স ইত্যাদি। প্রতিটি ২ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি হয়, যা হোটেল, বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজক ও ক্যাটারিং সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলো কিনে থাকে।

বর্তমানে মাসে ৬০ হাজার পণ্য উৎপাদনে সক্ষম কারখানাটি। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন আকারের থালা, বাটি, পিরিচ, খাবারের বাক্স ইত্যাদি। প্রতিটি ২ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি হয়, যা হোটেল, বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজক ও ক্যাটারিং সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলো কিনে থাকে।

পরিবেশবান্ধব এ পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে ফরিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমে ভাবিনি এত সাড়া পাব। আমাদের যে পরিমাণ চাহিদা বাড়ছে, তাতে কারখানার পরিধি বাড়াতে হবে। কিন্তু সেই পরিমাণ পুঁজি আমাদের নেই।’ তিনি আরও বলেন, অনেকেই এই কারখানা কীভাবে করতে হয় শিখতে আসছেন। এতে ব্যক্তি যেমন লাভবান হয়, তেমনি কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পরিবেশেরও উপকার করা সম্ভব। প্লাস্টিক দূষণমুক্ত দেশ গড়তে হলে এর বিকল্প নেই।

প্রথমে ভাবিনি এত সাড়া পাব। আমাদের যে পরিমাণ চাহিদা বাড়ছে, তাতে কারখানার পরিধি বাড়াতে হবে। কিন্তু সেই পরিমাণ পুঁজি আমাদের নেই।ফরিদুল ইসলামফেলনা থেকে সম্ভাবনা

মামা-ভাগনির কারখানাটিতে বর্তমানে ছয়জন কর্মচারীর একটি ছোট দল কাজ করেন। মাসিক ৬ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা বেতনে তাঁরা কাজ করছেন। প্রতি মাসে কারখানায় প্রক্রিয়াজাত হয় প্রায় ২০ হাজার সুপারির খোল, যা স্থানীয় বাগানমালিকদের কাছ থেকে প্রতি ১০০টি ১৫০ টাকা দরে কেনা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফর দ ল ইসল ম আম দ র উদ য গ পর ম ণ উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষি বিবর্তনের গল্প বলে যে জাদুঘর

বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির মূলে রয়েছে কৃষি। এই কৃষির বিবর্তনের গল্প, এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষের জীবন, প্রযুক্তির বিকাশ এবং গ্রামীণ সমাজের ঐতিহ্য যেন এক অমূল্য উত্তরাধিকার।

সময়ের প্রবাহে অনেক কিছুই হারিয়ে যাচ্ছে, ভুলে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। সেই হারানো ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ ও তুলে ধরার প্রয়াসেই গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম কৃষি জাদুঘর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি জাদুঘর।

আরো পড়ুন:

জাপানের এনইএফ বৃত্তি পেলেন বাকৃবির ২০ শিক্ষার্থী

গোপনে বাকৃবি ছাত্রীদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি তুলে সাবেক ছাত্রকে দিতেন আরেক ছাত্রী

বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে, বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) ঠিক সামনেই সবুজ দেবদারু গাছে ঘেরা এক মনোরম পরিবেশে দাঁড়িয়ে আছে এই কৃষি জাদুঘর। প্রকৃতির কোলে যেন কৃষির ইতিহাস কথা বলে এখানে।

২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মু. মুস্তাফিজুর রহমানের হাত ধরে জাদুঘরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়, যার মূল স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হোসেন। পরবর্তীতে ২০০৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম এর উদ্বোধন করেন।

নানা প্রতিবন্ধকতা ও জনবল সংকটের কারণে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও, ২০০৭ সালের ৩০ জুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোশাররফ হোসাইন মিঞাঁ এটি পুনরায় দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এটি দেশের কৃষি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির এক জীবন্ত সংগ্রহশালা হিসেবে পরিচিত।

৫ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত এই অষ্টভুজ আকৃতির ভবনটি স্থাপত্যগত দিক থেকেও দারুণ দৃষ্টিনন্দন। প্রবেশদ্বার পেরিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে রঙিন মাছের অ্যাকুয়ারিয়াম, পাশে প্রাচীন সাতটি খনার বচন। প্রবেশমুখের ঠিক পরেই দুটি অফিস কক্ষ, আর একটু ভেতরে এগোলেই দেখা যায় একটি ছাদহীন বৃত্তাকার বাগান, যা প্রাকৃতিক আলোর ছোঁয়ায় উজ্জ্বল। সেই বাগানের চারপাশেই রয়েছে সংরক্ষণশালার বিভিন্ন কক্ষ। প্রতিটি কক্ষই যেন কৃষির একেকটি অধ্যায়।

জাদুঘরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো বীজ সংগ্রহশালা। এখানে রয়েছে ধান, গম, ভুট্টা, তিসি, চিনাবাদাম, কাউনধান, ফ্রেঞ্চ বিন, ফাবা বিনসহ নানা ফল ও সবজির বীজ। দেখা মেলে বিরল প্রজাতির তৈকর ফলের বীজ, যা একসময় আচার ও জেলি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। রয়েছে বহুল পরিচিত ভ্যান্না বীজ, যার তৈল দিয়ে কসমেটিক ও ঔষধি পণ্য তৈরি হয়।

মাটির নানা প্রকার নমুনা, প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম সার, এমনকি পাহাড়ি চাষাবাদের মডেলও স্থান পেয়েছে এখানে।

শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও দর্শনার্থীদের শিক্ষার জন্য প্রদর্শিত হয়েছে বিভিন্ন ফসল রোগের চিত্র, আক্রান্ত বীজ, ও ব্যাকটেরিয়ার নমুনা। এ অংশের এক বিশেষ আকর্ষণ আড়াই কেজি ওজনের এক বিশাল মিষ্টি আলু, যা দর্শনার্থীদের বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

জাদুঘরের আরেক অংশ যেন এক ক্ষুদ্র প্রাণিবিজ্ঞান জাদুঘর। এখানে প্রদর্শিত আছে বুনো মহিষ, হরিণের শিং, গরু, অজগর ও গোখরা সাপের কংকাল। রয়েছে সংরক্ষিত কালো মেটো ইঁদুর, ধারাই সাপ, এবং কচ্ছপের খোল ও কঙ্কাল।

উপরে তাকালে দেখা যায় এক বিশাল প্রিজার্ভড শকুন, সে যেন আকাশে ডানা মেলে উড়ছে। রয়েছে প্লাটিপাসের কংকালও, যা এক বিরল প্রাণীর বাস্তব নিদর্শন। প্রতিটি নমুনাই যেন দর্শনার্থীকে স্মরণ করিয়ে দেয়, কৃষি কেবল ফসল বা জমির নয়, এটি প্রকৃতি ও প্রাণের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।

গ্রামীণ জীবনের বৈচিত্র্যও এখানে তুলে ধরা হয়েছে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে। এক কক্ষে সাজানো আছে ঢেকি, কুলা, পানের ডাবর, হুকা, হারিকেন, কুপি বাতি, গরুর গাড়ির মডেল, এমনকি মাছ ধরার পুরোনো যন্ত্রও। রয়েছে তবলা, বেহালা, আদুরী, ক্রাম ও নাতকসহ বিভিন্ন দেশীয় বাদ্যযন্ত্র।

এক পাশে দেখা যায় ‘গিলা’, যা একসময় বর-কনের গোসল অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হতো। এখনকার তরুণ প্রজন্ম হয়তো নামটিও জানে না, অথচ এটি ছিল গ্রামীণ সংস্কৃতির এক অপরিহার্য অংশ।

আরো রয়েছে কৃষকের বসতবাড়ির পূর্ণাঙ্গ মডেল, যা দেখতে যেন একেবারে বাস্তব কৃষকের ঘর। এখানে দেখা যায় কৃষকের হালচাষের দৃশ্য, রান্নাঘর, ধান রাখার গোলা, গরুর খোঁয়াড় এবং গৃহিণীর সাজানো রান্নার জায়গা। যেন একবারে গ্রামের জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে দেয়াল আর মডেলের মধ্যে।

প্রযুক্তির ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য জাদুঘরে স্থান পেয়েছে পুরনো মাইক্রো কম্পিউটার, ডট প্রিন্টার, পাওয়ার টিলার, ধান মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র, ঘাণি, ডিঙি নৌকা, কাঁঠের তৈরি গরুর গাড়ি, তালগাছের কুন্দা ও উপজাতিদের পোশাক। এক পাশে ঝুলছে হরিণের চামড়া, অন্য পাশে সাজানো উপজাতীয় কৃষি উপকরণ, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এই উপকরণগুলো কেবল প্রযুক্তির বিবর্তনের ইতিহাস নয়, বরং কৃষির সঙ্গে মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনধারার মেলবন্ধনের প্রতীক।

জাদুঘরের আরেক বিশেষ প্রদর্শনী হলো প্রাচীন থেকে আধুনিক সময়ের মুদ্রার সংগ্রহ। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের মুদ্রা এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। এগুলো দেখে কৃষিনির্ভর অর্থনীতির বিকাশ ও সামাজিক পরিবর্তনের চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

জাদুঘরের প্রতিটি কোণ যেন বলে, কৃষিই বাংলাদেশের প্রাণ। এখানকার প্রতিটি উপকরণ, প্রতিটি মডেল, প্রতিটি নমুনা কৃষির বিকাশ ও মানুষের সংগ্রামের গল্প বহন করে। দর্শনার্থীরা এখানে এসে কৃষির অতীত ঐতিহ্য থেকে বর্তমান প্রযুক্তির রূপান্তর পর্যন্ত এক নজরে দেখতে পান।

বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, “এটি দেশের প্রথম এবং সবচেয়ে উপকরণসমৃদ্ধ কৃষি জাদুঘর। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে এটিকে দোতলা ভবনে রূপান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে, যেখানে কৃষি ভিত্তিক ১৪টি জেলার ঐতিহ্যবাহী কৃষি উপকরণ সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।”

তিনি আরো বলেন, “দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য ভবিষ্যতে টিকিট ব্যবস্থা চালুর কথাও ভাবা হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এবং জাদুঘরের রক্ষণাবেক্ষণেও ভূমিকা রাখবে।”

এই কৃষি জাদুঘর শুধু কৃষি উপকরণের প্রদর্শনী নয়, বরং এটি বাংলাদেশের কৃষি সভ্যতার ইতিহাস, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি ও মানুষের সম্পর্কের এক সজীব দলিল। শহরের কোলাহল আর কংক্রিটের ভিড় থেকে বেরিয়ে কেউ যদি এখানে আসে, তবে মুহূর্তেই যেন হারিয়ে যায় মাটির গন্ধে, কৃষকের ঘামে, বাংলার গ্রামীণ জীবনের সহজ সরল সৌন্দর্যে।

জাদুঘরটি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে এবং প্রতি শনিবার বন্ধ থাকে। সময় সুযোগে একবার ঘুরে গেলে দেখা মিলবে বাংলাদেশের কৃষির হাজার বছরের গল্প, যা মাটি, ঘাম, বীজ আর ঐতিহ্যের বন্ধনে গাঁথা এক অনবদ্য ইতিহাস।

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কৃষি বিবর্তনের গল্প বলে যে জাদুঘর
  • একসময় ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ভবিষ্যৎ তারকা, এখন ক্লাব খুঁজে বেড়াচ্ছেন