দক্ষিণ কোরিয়ায় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির ব্ল্যাক বক্সে শেষ চার মিনিটের ডেটা নেই
Published: 11th, January 2025 GMT
দক্ষিণ কোরিয়ায় গত মাসে বিধ্বস্ত যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটির ব্ল্যাক বক্স দুটিতে শেষ চার মিনিটে কোনো ডেটা রেকর্ড হয়নি। ব্ল্যাক বক্সে ফ্লাইটের তথ্য ও ককপিটের হওয়া কথাবার্তা ধারণ করা থাকে। দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় আজ শনিবার এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু এয়ারের একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত হন। দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা। এ দুর্ঘটনায় মাত্র দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁরা দুজনই ক্রু।
তদন্তকারীরা আশা করেছিলেন, রেকর্ডারগুলো দুর্ঘটনার আগের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোর বিষয়ে বিশেষ ধারণা দেবে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, কী কারণে ‘ব্ল্যাক বক্সের’ রেকর্ডিং বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে।
রেকর্ডারগুলো মূলত দক্ষিণ কোরিয়াতেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
যখন দেখা গেল ব্ল্যাক বক্সগুলোতে শেষ চার মিনিটের তথ্য নেই, তখন সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয় এবং সেগুলো দেশটির নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো খতিয়ে দেখে।
গত ২৯ ডিসেম্বর উড়োজাহাজটি ব্যাংকক থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাচ্ছিল। পথিমধ্যে এটি দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের চেষ্টা করে। অবতরণের চেষ্টাকালে উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে একটি দেয়ালে ধাক্কা খায় এবং সঙ্গে সঙ্গে সেটিতে আগুন ধরে যায়।
দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক দুর্ঘটনা তদন্তকারী সিম জাই-ডং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ শেষ চার মিনিটের ডেটা না থাকাটা বিস্ময়কর। এসব ডেটা না থাকাটা এটা ইঙ্গিত করে যে সব ধরনের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এমনকি এই বিকল্প বিদ্যুতের উৎসও (ব্যাকআপ) বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
দক্ষিণ কোরিয়ার এই উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা নিয়ে এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। পাখির আঘাত বা আবহাওয়া দুর্ঘটনার পেছেন কোনো ভূমিকা রেখেছিল কি না, তা বুঝতে চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
জেজু এয়ারের দুর্ঘটনার শিকার উড়োজাহাজটি ছিল বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের। উড়োজাহাজটি রানওয়ে স্পর্শ করার সময় ল্যান্ডিং গিয়ার ব্যবহার করেনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ
সাগরে এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ১৭০ মণ ইলিশ মাছ। দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে এই ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাইফ ফিশ আড়তে এই মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানো হয়। মাছগুলো ডাকের মাধ্যমে বিক্রি হয় ৪০ লাখ টাকায়। ট্রলারটিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ ইলিশ তুলে দেওয়া হয়।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সূত্রে জানাগেছে, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সাইফ কোম্পানির এফবি সাফওয়ান-৩ মাছ ধরার ট্রলার গত ২৯ অক্টোবর সকালে পাথরঘাটা থেকে ১৯ জন জেলে নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়।
ওই দিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার পরই রাতে মাছগুলো ধরা পড়ে। ট্রলারটিতে জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ তুলে দেওয়া হয়। জেলেরা বলছে, সব মিলিয়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে।
এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের মাঝি রুবেল হোসেন বলেন, “আমরা ২৯ অক্টোবর সাগরে যাই। বিকেলে লম্বা জাল (ইলিশ জাল) ফেলার পর রাত আটটার দিকে জালের অবস্থা দেখে বুঝতে পারি প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। রাত আটটা থেকে জাল টানা শুরু করে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল ট্রলারে উঠানো শেষ হয়।”
সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম জানান, অনেক দিন ধরে সাগরে খুব কম মাছ ধরা পড়ছিল। ইলিশ মৌসুমে কাঙ্খিত মাছ ধরা না পড়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছিল। সাগরে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধ করা হলে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মোস্তফা আলম বলেন, “মাছগুলো আমার আড়তে বিক্রি হয়েছে। ইলিশের প্রকারভেদ ২৭ হাজার, ২২ হাজার, ১২ হাজার টাকায় মণ দরে সব মিলিয়ে ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় এই মাছ বিক্রি হয়।”
বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, “২২ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছে- এটা খুশির খবর। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মেলেনি। হঠাৎ এক ট্রলারে ১৪০ মণ ইলিশ পাওয়ায় আমরাও খুশি।”
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে।”
তিনি বলেন, “জেলেরা সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ মানলে এবং অবৈধ জাল বন্ধ তাদের জেলেদের সুদিন ফিরবে।”
ঢাকা/ইমরান/এস