দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে আধুনিক রূপে চালু হলো বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)। আজ সোমবার দুপুরে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর নতুন সিসিইউ বিভাগের উদ্বোধন করেন।

আগে এই হাসপাতালে আট শয্যার একটি সিসিইউ বিভাগ থাকলেও সেখানে শয্যার তুলনায় বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় মেঝেতে ঠাঁই নিতে হতো। শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রগুলো ছিল বিকল। এ ছাড়া চিকিৎসক-নার্সসংকটে সেবা ও চিকিৎসার মান খুবই নাজুক অবস্থায় পৌঁছেছিল বিভাগটি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৩৩ বছর আগে এই হাসপাতালে সিসিইউ ইউনিট চালু হয়। এরপর ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল নতুন আইসিইউ ভবন উদ্বোধনের পর দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তর করা হয় সিসিইউ বিভাগ। তবে আধুনিয়কায়নের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এটি দীর্ঘদিন ধরেই ছিল অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত। মাত্র আটটি শয্যা থাকলেও ভর্তি থাকতে চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি রোগী। অতিরিক্ত রোগীর চাপ, চিকিৎসক ও নার্সসংকট এবং সরঞ্জামের অভাব মিলিয়ে সিসিইউর অবস্থা ছিল একেবারে নড়বড়ে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নতুনভাবে সাজানো আধুনিক সিসিইউতে এখন রয়েছে ২৪টি শয্যা। প্রতিটি শয্যায় রয়েছে কার্ডিয়াক মনিটর ও অক্সিজেন সংযোগ। স্থাপন করা হয়েছে সেন্ট্রাল এসি, চারটি নতুন শৌচাগার এবং উন্নত মানের আসবাব।

উদ্বোধন শেষে সার্জারি সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত সভায় সিসিইউ বিভাগের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক অসীম বিশ্বাস বলেন, হাসপাতাল পরিচালকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সিসিইউ বিভাগটি আধুনিক মানে গড়ে তোলা হয়েছে। এতে রোগীরা আগের চেয়ে উন্নত সেবা পাবেন। আগে যেভাবে চরম দুর্ভোগের মধ্যে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হতো, এখন আর সেই দুর্ভোগ হবে না।

সভায় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মশিউল মুনীর বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য আনন্দের দিন। হৃদ্‌রোগীরা আর গরমে কষ্ট পাবেন না। আধুনিক সিসিইউতে এখন সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি।’

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সবচেয়ে বড় এই সরকারি হাসপাতালে দীর্ঘদিন অব্যবস্থাপনার কারণে রোগীদের নানা ধরনের অসুবিধায় পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মশিউল মুনীর বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যাতে এই হাসপাতালকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে এনে সব বিভাগকে উন্নত ও আধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে সাজিয়ে উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে। এ জন্য সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’

হাসপাতালে অনেক সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে হাসপাতালের পরিচালক জানান, অবকাঠামোগত সমস্যা প্রকট। কারণ এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। বহির্বিভাগে কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসা নেন। এখানে শুধু বরিশাল বিভাগের পাঁচ জেলা নয়, পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বাগেরহাটের রোগীরাও এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন। তিনি বলেন, ‘সীমাহীন সংকটের মধ্যেও আমরা চেষ্টা করছি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উন্নত সেবা নিশ্চিত করার। এ জন্য এরই মধ্যে হাসপাতালের শৃঙ্খলা ফিরেছে। বিভাগগুলোর আধুনিকায়ন, চিকিৎসা সরঞ্জাম সচল করা ও নতুন সরঞ্জাম সংযোজন করাসহ বিভিন্ন সংস্কারমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আধুনিক সিসিইউ বিভাগ চালু এর মধ্যে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’

আধুনিক সিসিইউ চালুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের উপপরিচালক এ কে ‍এম নজমুল ‍আহসান, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহামুদ হাসান, কার্ডিওলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ এ বি এম ইমাম হোসেন, মাহামুদুল হাসান ও আফজাল হোসেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স স ইউ ব ভ গ সরঞ জ ম র চ লক

এছাড়াও পড়ুন:

নাহার চেস একাডেমির বিশ্ব শিশু দিবস দাবায় সৌর অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন সাম্য রানার আপ

বিশ্ব শিশু দিবস দাবা প্রতিযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের প্রথম শ্রেণির রূপান্তর সৌর অপরাজিত চ্য্ম্পিয়ন হয়েছে। সাত খেলায় পূর্ণ ৭ পয়েন্ট অর্জন করে সৌর একক কৃতিত্ব দেখিয়েছে। রানার আপ হয়েছে।

একই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির সমাদধীত সাম্য। তার সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট। তৃতীয় থেকে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে যথাক্রমে আদর্শ শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির অরুণ রায়, নারায়ণগঞ্ছ আইডিয়াল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির আলী সায়ের আহমাদ।

প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন পোলস্টার ক্লাবের সভাপতি এস এম বাতেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রবাসী ও প্রবাস ফেরত কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু রায়হান ও দাবানুরাগী মো. শহীদুল ইসলাম স্বপন।

নাহার চেস একাডেমি আয়োজিত দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতাটি পরিচলানা করেন জাতীয় দাবা বিচারক ও একাডেমির প্রশিক্ষক মোহাম্মদ নাজমুল হাসান (রুমি)। সাত রাউন্ড রবিন লীগ পদ্ধতির এ প্রতিযোগিতাটি শহরের আমলাপাড়াস্থ নাহার চেস একাডেমি ক্রীড়াকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ