শর্ত না মানায় ঝুঁকিপূর্ণ দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ
Published: 12th, January 2025 GMT
সংরক্ষিত বনের মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে রেলপথ। কাটা পড়ে কয়েক লাখ গাছ। রেলপথ বসানোর জন্য একের পর এক পাহাড় কেটে সমতল করা হয়। এর ফলে বিপন্নপ্রায় এশিয়ান হাতি চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ করতে গিয়ে পদে পদে পরিবেশের ক্ষতি করা হয়। সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকায় থাকায় বন বিভাগ কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তর কেউ-ই প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা দেয়নি। উল্টো সংরক্ষিত বনের তালিকা থেকে প্রকল্প এলাকাকে বাদ দেওয়া হয়। অবশ্য প্রকল্পের কাজ করার জন্য পরিবেশ সংরক্ষণে চারটি শর্ত বেঁধে দিয়েছিল বন বিভাগ। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা কাজ প্রায় শেষ করলেও শর্তগুলো পুরোপুরি প্রতিপালন করেনি।
শর্ত না মেনে কাজ শেষ করায় বিপন্নপ্রায় হাতি চলাচলে ঝুঁকি রয়ে গেছে। ইতিমধ্যে ট্রেনের ধাক্কায় একটি বাচ্চা হাতি মারা গেছে। খাড়াভাবে কাটার কারণে ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের ঘটনাও ঘটছে। এতে ট্রেন চলাচলও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চারটি শর্তে সংরক্ষিত বনকে ‘ডি রিজার্ভ’ (সংরক্ষিত তালিকা থেকে বাদ) ঘোষণা করে ২০১৯ সালের ৬ জুন প্রজ্ঞাপন জারি করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। নির্মাণকাজ শেষে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
এ প্রকল্পের মেয়াদ আগামী জুন মাসে শেষ হবে। এতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ।
শর্ত মানেনি রেল, চিঠি বনেরচট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের ২৭ কিলোমিটার গেছে সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে। লোহাগাড়ার চুনতি, ফাঁসিয়াখালী ও মেধাকচ্ছপিয়া সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে এই রেলপথ গেছে। রেললাইন নির্মাণ করার জন্য বনের ২০৭ একর জায়গাকে সংরক্ষিত বন থেকে বাদ দেওয়া হয়।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চারটি শর্ত হচ্ছে: ১.
এসব শর্তের সূত্র ধরে একটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি হয়। বনায়ন এবং বন্য প্রাণীর আবাসস্থল সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ১৬টি শর্ত নির্ধারণ করে দেওয়া হয় চুক্তিতে।
তবে এসব শর্ত ও সমঝোতা চুক্তি রেলওয়ে যথাযথ বাস্তবায়ন করেনি উল্লেখ করে গত ১৭ অক্টোবর রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন তৎকালীন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। চিঠিতে বলা হয়, বন্য হাতিসহ সব বন্য প্রাণীর চলাচলের জন্য ২টি ওভারপাস ও ২টি আন্ডারপাস নির্মাণ করার কথা থাকলেও বাস্তবে একটি ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। দুটি আন্ডারপাস করা হলেও তা ঠিকভাবে নির্মাণ করা হয়নি। একটি আন্ডারপাস দিয়ে হাতি চলাচল করতে পারে না। এ ছাড়া সাউন্ড ব্যারিয়ার নির্মাণ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি।
এদিকে রেললাইন করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২ লাখ ৩৯ হাজার গাছ কাটা হয়। প্রজ্ঞাপনের শর্ত অনুযায়ী, তিন গুণ গাছ রোপণ করার কথা। অর্থাৎ রোপণ করা গাছের পরিমাণ হওয়ার কথা ৭ লাখ ২০ হাজার। কিন্তু এখন পর্যন্ত বন বিভাগের হিসাবে গাছ লাগানো হয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার। আবার যে ধরনের গাছ লাগানো হয়েছে, তা নিয়ে বন বিভাগের আপত্তি রয়েছে।
প্রজ্ঞাপন ও সমঝোতা চুক্তির শর্ত না মানার বিষয়ে জানতে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. সবুক্তগীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। নগরের সিআরবিতে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে তাঁর কার্যালয়ে অন্তত চার দফা গিয়ে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সভায় ব্যস্ত আছেন বলে জানান।
ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় হাতিটির। গত ১১ ডিসেম্বর চুনতি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
বায়ার্ন মিউনিখ ৩–১ চেলসি
২০১২ সালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতিহাস গড়েছিল চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পরেছিল ইউরোপসেরার মুকুট।
তবে এরপর থেকে বায়ার্নের সঙ্গে মুখোমুখি সব ম্যাচেই হেরেছে চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটি পারল না আজও। হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন।
আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে বায়ার্ন প্রথম গোলটা পেয়েছে উপহারসূচক। চেলসির সেন্টার–ব্যাক ট্রেভোহ চালোবাহ নিজেদের জালে বল জড়ালে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা।
কিছুক্ষণ পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেইন। এবার ভুল করে বসেন চেলসির মইসেস কাইসেদো। নিজেদের বক্সে কেইনকে কাইসেদো অযথা ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
নতুন মৌসুমে গোলের পর গোল করেই চলেছেন হ্যারি কেইন