প্রায় তিন মাস ধরে কারাগারে থাকা সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক জামিনে মুক্তি পেতে আবেদন করেছেন হাইকোর্টে।

পৃথক পাঁচটি মামলায় নিম্ন আদালতে বিফল হয়ে উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে করা তাঁর আবেদন আজ সোমবার বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিন ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় ১০২৭ থেকে ১০৩১ নম্বর ক্রমিকে ওঠে। আগামী সপ্তাহে আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।

খায়রুল হকের আইনজীবী আজ সকালে আবেদনের বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী। পরে আবেদনকারীপক্ষের অন্যতম আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ মামলায় পৃথক পাঁচটি আবেদন গতকাল রোববার আদালতে জমা দেওয়া হয়, যা আদালতের আজকের কার্যতালিকায় ওঠে। সকালে আবেদনের বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করা হয়। আদালত বলেছেন, আবেদনগুলো শুনানির জন্য আগামী রোববার কার্যতালিকায় আসবে। সেদিন আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে যুবদলের কর্মী আবদুল কাইয়ুম হত্যা মামলা এবং রায় জালিয়াতি এবং বিধিবহির্ভূতভাবে একটি প্লট গ্রহণের মামলায় জামিন চেয়ে আবেদনগুলো করেন বিচারপতি খায়রুল হক।

আরও পড়ুনআসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট৩০ জুলাই ২০২৫

এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন। ওই রায়ের মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়।

জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক বছর পর গত ২৪ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর বেআইনি রায় দেওয়া ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে গত বছরের ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে করা একটি মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাঁকে।

আরও পড়ুনসাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক রিমান্ড শেষে কারাগারে০৭ আগস্ট ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার–সংক্রান্ত রায় জালিয়াতির অভিযোগে গত বছরের ২৭ আগস্ট শাহবাগ থানায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন একটি মামলা করেন। একই অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় গত ২৫ আগস্ট আরেকটি মামলা করেন জনৈক নুরুল ইসলাম মোল্লা। এ ছাড়া বিধিবহির্ভূতভাবে প্লট গ্রহণের অভিযোগে চলতি বছরের আগস্টে একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই পাঁচ মামলায় জামিন চাওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহীন।

যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম হত্যা মামলা বাতিল ও জামিন চেয়ে গত ৭ আগস্ট হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন খায়রুল হক। গত ১৭ আগস্ট তাঁর আইনজীবীরা আদালতে সময়ের আরজি জানান, যা মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। ওই আবেদন এখন শুনানির অপেক্ষায়।

আরও পড়ুনসাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ, অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক২৪ জুলাই ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব আবদ ল আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবিসহ ভারতীয় ৪ নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আবার পেছাল

অনুপ্রবেশের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে মুক্ত অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবিসহ চার ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে আজ বুধবার আদালতে অভিযোগ গঠনের দিন ছিল। তবে আজ শুনানি হয়নি।

২৩ ডিসেম্বর অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (তৃতীয়) বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম। এ নিয়ে তিনবার অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছানো হলো।

আরও পড়ুনএখনই দেশে ফিরতে পারছেন না বিএসএফের পুশ ইন করা ভারতীয় ৬ নাগরিক২৪ অক্টোবর ২০২৫

আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক জানান, গত সোমবার আসামিরা আদালত থেকে জামিন পান। এদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তির দেড় ঘণ্টা পর আবারও ছয় ভারতীয় নাগরিককে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে সবাইকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় এক জিম্মাদারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ছয়জনের মধ্যে দুটি শিশু আছে, তাই তাদের আসামি করা হয়নি। তিনি জানান, আজ আদালতে তিন আসামি হাজির হয়েছিলেন।

ছয় ভারতীয় নাগরিক হলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ধিতোরা গ্রামের দানিশ শেখ (২৮), তাঁর স্ত্রী সোনালি বিবি (২৬), তাঁদের ৮ বছর বয়সী ছেলে এবং সুইটি বিবি (৩৩) ও তাঁর ১৬ ও ৬ বছর বয়সী ছেলে। তাঁদের মধ্যে সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা। আত্মীয়তার সূত্রে তাঁদের জিম্মাদার হয়েছেন ফারুক হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা। তিনি জানান, ভারতীয় নাগরিকেরা এখন ভালো আছেন।

আসামিদের জিম্মায় দেওয়ার বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন আকন্দ জানিয়েছিলেন, স্থানীয় ফারুক হোসেনের কাছে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়। তবে তাঁরা ২৪ ঘণ্টা পুলিশের পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকবেন। এ ছাড়া আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ১০ দিন পরপর তাঁদের অবস্থান বিষয়ে আদালতে লিখিত প্রতিবেদন দিতে হবে জিম্মাদারকে।

পুলিশ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই ভারতীয় নাগরিকেরা দিল্লিতে কাগজ কুড়ানোর কাজ করতেন। দিল্লি পুলিশ তাঁদের আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মাধ্যমে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আটক হলে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

ভারতীয় নাগরিক হওয়ার যাবতীয় প্রমাণ সাপেক্ষে প্রথমে ভারতের কলকাতা হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্ট সোনালি বিবিদের ফেরত আনার নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার তেমন উদ্যোগী হচ্ছিল না।

এ পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার দেশটির প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী মানবিক কারণে সোনালি বিবিদের দ্রুত ফেরত আনার নির্দেশ দেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্তর এজলাসে বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন সোনালি বিবি ও তাঁর ছেলেকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিচ্ছে ভারত৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরোনো হাতিয়ার ব্যবহার করে কি নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে, প্রশ্ন সারা হোসেনের
  • সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশের মাধ্যমে দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে: প্রধান বিচারপতি
  • বিচার বিভাগ কাগজে স্বাধীন, এখন বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখতে চায় মানুষ: মাহবুব উদ্দিন খোকন
  • নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে রিটে বিভক্ত রায়
  • পর্যবেক্ষণসহ লিভ টু আপিল খারিজ, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন বৈধ
  • অন্তর্বর্তী সরকার বৈধ: আপিল বিভাগ
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের নির্দেশ–সংবলিত হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
  • অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবিসহ ভারতীয় ৪ নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আবার পেছাল
  • ট্রাইব্যুনালে ক্ষমা চাইলেন জেড আই খান পান্না
  • ট্রাইব্যুনালে ডেকে আনার পর ক্ষমা চাইলেন জেড আই খান পান্না