জাতীয় নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়বে বলে মনে করে গণ অধিকার পরিষদ। তাই তাদের দাবি, আগামী জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলছে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন দল গণ অধিকার পরিষদ মনে করে, নির্বাচন বানচালের জন্য সাম্প্রতিককালে অগ্নিসংযোগে লিপ্ত হয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা। এভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে আরেকটি এক-এগারো সৃষ্টির চক্রান্ত শুরু হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর বিজয়নগরে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।

‘দেশের সাম্প্রতিক নানা অঘটন, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চক্রান্ত ও চলমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য সাম্প্রতিককালে অগ্নিসংযোগে লিপ্ত হয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা। এভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে আরেকটি এক–এগারো সৃষ্টির চক্রান্ত শুরু হয়েছে। নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়বে। সুতরাং আগামী জানুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানাচ্ছে গণ অধিকার পরিষদ। যেহেতু জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই ‘জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’ জারি করে এর আইনগত ভিত্তি দিতে হবে।

সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, ডিসি, এসপি, ইউএনও ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান রাশেদ। তিনি বলেন, বর্তমান প্রশাসনকে পরিবর্তন না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে পরিষ্কার করতে হবে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেউ নির্বাচনে কোনোভাবেই অংশ নিতে পারবে না এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলও নির্বাচন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের মতো তাদেরও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে একটি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান গণ অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র হাসান আল মামুন। এতে বলা হয়, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গণ অধিকার পরিষদ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করতে হবে। এ ছাড়া দেশের বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যেও আগামী জানুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম, সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২২ বছর বয়সে সিরাজউদ্দৌলা নবাব হন

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

সৃজনশীল প্রশ্ন: অধ্যায়–১

শহীদ মিয়া তরুণ বয়সে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রথম থেকেই কিছু আত্মীয় নিজেদের সুবিধার জন্য শহীদ মিয়াকে জনগণের কাজে বাধা সৃষ্টি করে। সুযোগ বুঝে একসময় তারা তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সক্ষম হয় এবং হত্যা করে।

প্রশ্ন

ক. সম্রাট আকবরের সেনাপতি কে ছিলেন?

খ. বাংলায় নবজাগরণ কী, ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের শহীদ মিয়ার ঘটনার সঙ্গে ঐতিহাসিক কোন ঘটনার মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উক্ত ঘটনা কি বাংলার স্বাধীনতা হারানোর কারণ? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর

ক. সম্রাট আকবরের সেনাপতি ছিলেন মানসিংহ।

খ. বাংলায় ইংরেজ শাসনের প্রভাবে এ দেশের মানুষের মধ্যে যে সচেতনতা তৈরি হয়, তাকেই নবজাগরণ বলে। ইংরেজরা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ভারতবর্ষে এলেও একসময় তারা এখানে বিভিন্ন সমাজসংস্কার, শিক্ষা বিস্তার প্রভৃতি কাজ করে থাকে। আধুনিক শিক্ষার কারণে এখানকার মানুষের মধ্যে অধিকার নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়। তারা সমাজের কুসংস্কার থেকে মুক্ত হয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ইতিহাসে এটাই বাংলায় নবজাগরণ।

আরও পড়ুনজুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা—বিজ্ঞান : টিকটিকি সরীসৃপ কেন০১ ডিসেম্বর ২০২৫

গ. উদ্দীপকের শহীদ মিয়ার ঘটনার সঙ্গে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে হত্যার সঙ্গে মিল রয়েছে। নবাব আলীবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর তাঁর প্রিয় নাতি সিরাজউদ্দৌলা মাত্র ২২ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। তখন তাঁর সামনে একদিকে ইংরেজ শক্তি, পাশাপাশি বড় খালা ঘসেটি বেগম ও সিপাহশালার মীর জাফর আলী খানের ষড়যন্ত্রে আক্রান্ত হন। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে তিনি নিহত হন। তখন বাংলায় শাসন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ইংরেজদের প্রভাব প্রতিষ্ঠা পায়। শহীদ মিয়ার তরুণ বয়সে চেয়ারম্যান হওয়ার সঙ্গে সিরাজউদ্দৌলার কম বয়সে নবাব হওয়ার মিল দেখা যায়।

অন্যদিকে সিরাজউদ্দৌলার পরিবারের লোকজনও এই ক্ষমতা গ্রহণকে নেতিবাচক বলে মনে করে। উদ্দীপকের শহীদ মিয়াও ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তাঁর পরিবারের আত্মীয়েরা বিরোধিতা করে, যা শহীদ মিয়ার ঘটনার সঙ্গে মিলে যায়। তাই পারিবারিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সিরাজউদ্দৌলার পতনের ঘটনার মিল রয়েছে।

ঘ. হ্যাঁ, সিরাজউদ্দৌলার ক্ষমতা হারানো ও মৃত্যু বাংলার পরাধীনতার কারণ। এ ঘটনায় শাসন ক্ষমতায় ইংরেজরা প্রভাব রাখতে শুরু করে।

মীর জাফর ও পরবর্তী সময়ে মীর কাশিমকে ইংরেজরা বাংলার নবাব মনোনীত করলেও নানা কারণে তাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভ ১৭৬৫ সালে দিল্লির সম্রাটের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে খাজনা ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন শুরু করেন। অন্যদিকে নবাব ভাতা ভোগ করেন। নবাব শাসন ও বিচারের দিকটি দেখার সুযোগ পান। ক্লাইভ কর্তৃক এ অদ্ভুত শাসনই ইতিহাসে ‘দ্বৈত শাসন’ নামে পরিচিত। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে শাসন ক্ষমতা সুদৃঢ় করে। কিন্তু ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিজেরাই শাসন শুরু করে। ব্রিটিশদের এই শাসন ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত চলতে থাকে। ফলে ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বাংলার স্বাধীনতা ছিল ইংরেজদের হাতে। তাই সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃত্যু বাংলার স্বাধীনতা হারানোর বড় কারণ।

মো. আবুল হাছান, সিনিয়র শিক্ষক, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, ঢাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশের ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার বেঁচে থাকা প্রয়োজন: বাবর
  • ‘হাসিনার ষড়যন্ত্রে খালেদা জিয়া বারবার হেনস্থার শিকার হয়েছেন’
  • ট্রাম্পের ক্ষমায় যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট
  • ২২ বছর বয়সে সিরাজউদ্দৌলা নবাব হন