দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাবেক এমপি হেনরীকে
Published: 13th, January 2025 GMT
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোছা. জান্নাত আরা হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন (গালিব) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি হেনরীকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে আবেদন করে দুদক। আদালত আসামির উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য ৬ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। তবে ওই দিন হেনরীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এজন্য আদালত শুনানির জন্য ১৩ জানুয়ারি ঠিক করেন।
আজ হেনরীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ বলেন, “আসামি হেনরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপরাধমূলক অসদাচারণ এর মাধ্যমে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকা টাকা জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন ও নিজ ভোগ দখলে রাখায় এবং ৩৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ হাজার ২ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭০ টাকার এবং ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ মার্কিন ডলারের সন্দেহজনক লেনদেন করেন।”
এদিকে, গতকাল রবিবার একই আদালত হেনরীর নামে থাকা ৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ৯২ টাকার সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেন। এর মধ্যে ১৯ দশমিক ৮২ একর জমি, তিনটি বাড়ি, দুইটি ফ্ল্যাট, ১৯ টি ব্যাংক একাউন্ট ও ১৬টি গাড়ি আছে।
হেনরী একসময় স্কুলশিক্ষক ছিলেন। ওই চাকরি করা অবস্থায় ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার অংশ নিয়ে তিনি পরাজিত হন। পরবর্তী সময়ে ২০০৯ সালে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পান হেনরী। তাঁর এ দায়িত্ব পালনকালে আলোচিত হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
তিনি ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য মনোনীত হন।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট ভেঙে দেওয়া হয় সংসদ। অন্যান্যদের সঙ্গে সংসদ সদস্য হিসেবে তিনিও কার্যকারিতা ও বৈধতা হারান।
হেনরী ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় তিনটি হত্যা ও একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে। গত ১ অক্টোবর মৌলভীবাজার গ্রেপ্তার হয়ে হেনরী ও তাঁর স্বামী শামীম তালুকদার কারাগারে রয়েছেন।
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা: নাহিদের জবানবন্দি পেশ
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি পেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জবানবন্দি পেশ শেষ করেন নাহিদ। তিনি গতকাল জবানবন্দি পেশ শুরু করেন।
আরো পড়ুন:
মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন নাহিদ ইসলাম
মালয়েশিয়া যাচ্ছেন নাহিদ ইসলাম
আজ বিকেলে তাকে জেরা করবেন এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
এ মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে আজ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে এ মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীকালে এ মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।খবর বাসসের।
এ মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরো দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
ঢাকা/এসবি