খামারে যাচ্ছিলেন উমেপ্রু, হঠাৎ গুলি এসে লাগে পেটে
Published: 13th, January 2025 GMT
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার হিমাগ্রীপাড়ায় আজ সোমবার সকালে উমেপ্রু মারমা (৩৪) নামের এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। পাড়াবাসী তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কে বা কারা ঘটনা ঘটিয়েছেন এবং কেন তাঁকে গুলি করা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।
পাড়াবাসী জানিয়েছেন, সকাল ১০টার দিকে উমেপ্রু হিমাগ্রীপাড়ার বাড়ি থেকে বের হয়ে খামারবাড়িতে যাচ্ছিলেন। সে সময় একটি গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। গুলির শব্দের সঙ্গে সঙ্গে উমেপ্রু মারমা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তিনি তলপেটে গুলিবিদ্ধ হন এবং গুলি সামনে থেকে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। তাঁকে পাড়াবাসী তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হিমাগ্রীপাড়া বান্দরবান-ওয়াইজংশন-রুমা সড়কের মুরুংবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ উমেপ্রু মারমার ভাই ক্যচিংনু মারমা জানিয়েছেন, কে বা কারা গুলি করেছেন, তাঁরা তা জানতে পারেননি। বান্দরবান জেলা শহরের বালাঘাটা এলাকার রুমেল তঞ্চঙ্গ্যার সঙ্গে তাঁর বোন উমেপ্রু মারমার বিয়ে হয়েছে। গতকাল রোববার বালাঘাটার বাড়ি থেকে তাঁদের বাড়িতে (বাবার বাড়ি) বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। স্বামী রুমেল তঞ্চঙ্গ্যা একজন গাড়িচালক। তিনি ঘটনার সময় তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন না।
উমেপ্রু মারমাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আহত উমেপ্রু মারমাকে অজ্ঞান অবস্থায় চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ্র মুকুল চৌধুরী জানিয়েছেন, হিমাগ্রীপাড়ায় নারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গেছে। কে, কারা বা কেন ওই নারীকে গুলি করেছেন, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।