জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গসংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) প্রেসিডেন্ট ও শীর্ষ বিচারক নাওয়াফ সালামকে লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। তাকে নতুন মন্ত্রিসভা ও সরকার গঠনের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

সৌদি আরবের জোরালো চাপের জেরে গত ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে এমপিদের ভোটের ভিত্তিতে লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন আউন। তারপর নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণের জন্য সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ফের ভোট দেন এমপিরা।

লেবাননের পার্লামেন্টের মোট আসনসংখ্যা ১২৮টি। এক প্রতিবেদনে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, এই এমপিদের মধ্যে ৮৪ জন নাওয়াফ সালামের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

চুক্তি লঙ্ঘন করে লেবাননে ফের ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১১

লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি

কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, লেবানন দীর্ঘদিন ধরেই সংকটে জর্জরিত একটি দেশ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাওয়াফ সালামের নিয়োগকে সেখানে বড় ধরনের চমক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে প্রায় দুই বছর ধরে প্রেসিডেন্টের পদও খালি ছিল। এতদিন তত্ত্বাবধায়ক সক্ষমতার ভিত্তিতে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত হতো। শেষমেশ প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদে দুই ব্যক্তির নিয়োগ হওয়ার লেবাননের সরকার ব্যবস্থায় দুই বছর ধরে চলা অচলাবস্থার অবসান হলো।

লেবানন মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত দেশ। মুসলিমদের মধ্যে সুন্নিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তবে দেশটিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিয়াপন্থি মুসলিমও রয়েছেন। এ কারণে দেশটির সংবিধানে শিয়া-সুন্নি মুসলিম এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় প্রতিনিধিত্ব ও ভারসাম্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সংবিধান অনুসারে, লেবাননের প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন একজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী এবং মন্ত্রিসভায় শিয়া-সুন্নিদের ভারসাম্য অবশ্যই থাকতে হবে।

সুন্নী অনুসারী মুসলিম নেতা নাওয়াফ সালাম এর আগেও দুইবার প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি লেবাননে সংস্কারবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত।

আইসিজের প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যা মামলা এবং অন্যান্য ট্রাইব্যুনালের নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে এই বিচারক আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন।

কিছু সংবাদমাধ্যম নাওয়াফ সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার বিষয়টিকে ‘সুনামির’ সঙ্গে তুলনা করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, গত রোববার সকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেন। এর আগ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতিকে ওই পদের জন্য সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছিল।

সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্র হিসেবে পরিচিত শিয়া রাজনৈতিক দল আমালের জন্য একটি বড় ধাক্কা। প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নাজিব মিকাতির প্রতি তাদের সমর্থন ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হিজবুল্লাহর সংসদীয় ব্লকের নেতা মোহাম্মদ রাদ সাংবাদিকদের বলেন, সালামকে মনোনীত করার পদক্ষেপ দেশে ‘বিভাজনের’ বীজ বপন করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।

উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।

ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।

এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ