‘বিশ্বাস করে দিঘির কাছে কিছু চাইলে পাওয়া যায়’
Published: 14th, January 2025 GMT
জোড়া কবুতর হাতে শুক্লাম্বর দিঘির পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন দেবাশীষ দাশ (৫৬)। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থেকে এসেছেন তিনি। বললেন,‘আমার ছেলে শুভ দাশ খুব অসুস্থ ছিল অনেক দিন। কিছুতেই রোগ সারছিল না। ছেলের আরোগ্যলাভের জন্য কবুতর মানত করেছিলেন তার মা। ছেলে এখন সুস্থ। তাই সপরিবার মানত পূরণ করতে এসেছি।’
চট্টগ্রামের চন্দনাইশের বরমা বাইনজুরীতে অবস্থিত শুক্লাম্বর দিঘি। প্রতিবছর পৌষসংক্রান্তিতে দিঘির পাড় ঘিরে মেলা বসে। লোকমুখে মেলাটির নাম ‘বিশ্বাসের মেলা’। মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত, এমনকি পাশের দেশ ভারত, নেপাল থেকেও জড়ো হন বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ। এখানে যাঁরা আসেন, তাদের ভাষ্যমতে, বিশ্বাস করে দিঘির কাছে কিছু চাইলে তা পাওয়া যায়। মানত পূরণ করতে সংক্রান্তির শুভদিনে বিশ্বাসীদের সমাগম ঘটে দিঘির পাড়ে। সেই থেকেই মেলার নাম বিশ্বাসের মেলা।
আজ মঙ্গলবার সকালে শুক্লাম্বর দিঘির পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, পুণ্যার্থীরা কেউ দিঘিতে স্নান করছেন। কেউ দুধ ঢালছেন দিঘিতে। কেউ কবুতর ও ছাগল গোসল করিয়ে পাশের লালসালু বাঁধা অশ্বত্থগাছের সামনে ছেড়ে দিচ্ছেন। গাছের সামনে বসে প্রার্থনাও করতে দেখা যায় অনেককে। দিঘির পাড়েই রয়েছে একটি মন্দির। মন্দির কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য অমর কান্তি ভট্টাচার্য (৬০) জানান শুক্লাম্বর দিঘির গল্প।
অমর কান্তি ভট্টাচার্য বলেন, শুক্লাম্বর ভট্টাচার্য নামের এক সাধকের নামে এ দিঘির নাম। কথিত আছে, প্রায় ৭০০ বছর আগে ভারতের নবদ্বীপ বা নদীয়া থেকে এসে শঙ্খ নদের পাড়ে সাধনায় বসেন শুক্লাম্বর ভট্টাচার্য। সাধনার জন্য তিনি সেখানে একটি দিঘি খনন ও দিঘির পাড়ে একটি অশ্বত্থগাছ রোপণ করেন। পরে শঙ্খ নদ একসময় পাড় ভাঙতে ভাঙতে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে চলে যায়। নদী দিয়ে একটি মরা গরু ভেসে এলে সাধকের অলৌকিক শক্তিতে গরুটি জীবিত হয়ে যায়। প্রায় ৫০ বছর সাধনাজীবন শেষে তিনি দিঘির পাড় থেকে অলৌকিকভাবে লুপ্ত হয়ে যান। সাধনাকালে এই অঞ্চলের অনেকেই বিভিন্ন আধ্যাত্মিক শক্তি দেখে তাঁর ভক্ত হন।
মেলা উপলক্ষে আসা পুণ্যার্থীরা দিঘির জলে স্নান করেন। চট্টগ্রামের চন্দনাইশের বরমা বাইনজুরীতে অবস্থিত শুক্লাম্বর দিঘির পাড়ে বিশ্বাসের মেলায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে ইয়াবাসহ চিহ্নিত মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১০০ পিস ইয়াবাসহ রিয়াজ (২৯) নামে এক চিহ্নিত মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার (২ নভেম্বর) গভীর রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত রিয়াজ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার মোকশাইল গ্রামের আব্দুল ছাত্তার মিয়ার ছেলে। সে বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকায় মিজানের বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছিল।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জহুরুল ইসলাম জানান, থানা এলাকায় মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও বিশেষ অভিযান চলাকালীন সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারি যে, মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকায় মিজানের বাসার সামনের পাকা রাস্তার ওপর রিয়াজ নামে ওই ব্যক্তি ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছালে রিয়াজ পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ সদস্যরা তাকে ধাওয়া করে আটক করতে সক্ষম হন। পরে তার দেহ তল্লাশি করে লুঙ্গির ভাঁজ থেকে সাদা পলিথিনে মোড়ানো ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনূর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত রিয়াজ একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় মাদকদ্রব্য ইয়াবা বিক্রি করে আসছিল বলে স্বীকার করেছে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।