আবারো পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ইংলিশ ক্রিকেটারের ভিসা আটকাল ভারত
Published: 14th, January 2025 GMT
ইংল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলে এখন চারজন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার আছেন। তারা হলেন- আদিল রশিদ, শোয়েব বাশির, রেহান আহমেদ ও শাকিব মাহমুদ। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার হলেও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হওয়ায় তাদের ভিসা নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে নতুন করে হেয়ালির অভিযোগ উঠেছে।
গত বছর শোয়েব বাশিরকে ভিসা দিতে দেরি করেছিল ভারত। যে কারণে হায়দরাবাদে সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলতেই পারেননি তিনি। এর আগে রেহানকেও একই ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। এবার পেসার শাকিব মাহমুদকে ভিসা দিতে বিলম্ব করছে ভারত।
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্য পেসাররা ক্যাম্প করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন। শুক্রবার তারা ভারতে আসবেন। কলকাতায় মঙ্গলবার শুরু হবে টি-২০ সিরিজ। অথচ শাকিবের ভিসা জটিলতার সমাধান হয়নি এখনো।
ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে কেউ রাজি হননি। তবে কর্মকর্তারা আশা করছেন, শুক্রবারের আগে সমাধান হয়ে যাবে শাকিবের ইস্যুটি। ইংল্যান্ডের দলে থাকা আদিল রশিদ ও রেহান অবশ্য ভারসের ভিসা পেয়ে গেছেন দাবি করেছে সংবাদ মাধ্যম ক্রিকইনফো। ভারতের ভিসা পাওয়ার আবেদন সঙ্গে শাকিবের পাসপোর্ট রেখে দেওয়ায় তিনি আরব আমিরাতে জেসন অ্যান্ডারসনের অধীনে পেস বোলিং ক্যাম্পে অংশ নিতে পারেননি।
শাকিব ইংল্যান্ডের হয়ে ২৯ ম্যাচ খেলেছেন। তবে ভারতের বিপক্ষে এখনো ম্যাচ খেলা হয়নি তার। পূর্বে ভারত সফরেও আসেননি তিনি। যে কারণে আদিল রশিদরা ভিসা পেলেও তারটা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। অবশ্য ছয় বছর আগে ইংল্যান্ড লায়ন্সের হয়ে ভারত সফরে আসার কথা ছিল তার। সেবারও ভিসা জটিলতার কারণে দল থেকে তার নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি