নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, “ভোটাধিকার নাগরিকের একটি মৌলিক অধিকার। সুন্দর, নির্ভুল ও হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করাই বর্তমান কমিশনের প্রধান লক্ষ্য।”

তিনি আরো বলেন, “কেবল নির্ধারিত স্থানে বসে নয় বরং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ফরম পূরণ করে তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। ভোটার হওয়ার যোগ্য, বিশেষ করে নারী ও তরুণ প্রজন্মের কেউ যেন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে বাদ না পড়ে সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। তথ্য গোপন করে একাধিক স্থানে ভোটার হওয়ায় চেষ্টা করা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে তথ্য লুকিয়ে ভোটার হওয়া সম্ভব নয়।”

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) খুলনা সিএসএস আভা সেন্টারে ‘ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জ এবং চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। 

নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আইসিটি ব্যবহারে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি (সিবিটিইপি) প্রকল্প এই কর্মশালার আয়োজন করে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, “গণতন্ত্রের সুদীর্ঘ আন্দোলন, ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ ও পরিবর্তনের নতুন প্রত্যাশাই হলো ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া। এই প্রত্যাশার মধ্যে রয়েছে একটি সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন। ভোটাধিকার নাগরিকের একটি মৌলিক অধিকার। এ অধিকারের সাথে অনেক কিছু জড়িত। আমাদের সার্বিকভাবে সামাজিক স্থিতিশীলতা, সৌহার্দ্য, সামাজিক সম্পর্ক, উন্নয়ন, রাষ্ট্র ও জাতি হিসেবে সম্মানের সাথে টিকেথাকা নির্ভর করবে সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের উপরে। নির্বাচন আয়োজন একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ। যেখানে আমরা সবাই সম্পৃক্ত।” 

তিনি আরো বলেন, “বিশেষ করে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্বটা সঠিক ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এটা শুধু ভোটার তালিকা তথ্য সংগ্রহ নয়, উপরন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এই তথ্য কাজে লাগে। জাতীয় পরিচয়পত্র পাসপোর্ট প্রাপ্তি, নাগরিকসেবা গ্রহণ, সন্তানদের স্কুলে ভর্তিসহ বিভিন্ন কাজে লাগে। এতে ভুল থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পদে পদে ভোগান্তির শিকার হবেন। তাই তথ্য সংগ্রহকারীদের সঠিক তথ্য দিয়ে ভোটার হওয়া বাঞ্ছনীয়। এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদ বা যাচাইকরণ আগের চেয়ে একটু ভিন্নতর গুরুত্ব বহন করে।” 

খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো.

ফিরোজ সরকারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও সিবিটিইপি এর প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা হাসান। 

স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারাজী বেনজীর আহম্মেদ। কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের ডিপিডি মো. মিজানুর রহমান। 

কর্মশালায় অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা এবং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-মাদ্রাসার শিক্ষক, প্রোগ্রামার, সিস্টেম এনালিস্ট, নারী ভোটার, মহিলা সংগঠন, নতুন ভোটার, সমাজকর্মী, এনজিও, ধর্মীয় নেতা ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ ট র হওয়

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের  নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”

মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” 

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ