সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন স্ট্যাটাস ও ডকুমেন্ট শেয়ারের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘সতর্কতা’ অবলম্বনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিধিমালা অনুযায়ী এর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

উপসচিব জামিলা শবনমের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১১’ অনুযায়ী পরিহারযোগ্য বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট দিচ্ছেন বা বিভিন্ন ডকুমেন্টস শেয়ার করছেন এবং ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকারকে বিব্রত করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। যা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সার্ভিস রুলস পরিপন্থী ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ।

এতে আরো বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে এ ধরনের কর্মকাণ্ড আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। অনেকক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর এবং সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী অসদাচরণের পর্যায়ভুক্ত অপরাধ। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ ধরনের বিভিন্ন ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হওয়ায় রেগুলেটরি মন্ত্রণালয় হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পত্র পাঠানো হয়েছে।

এই অবস্থায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাদের অধীন দপ্তর ও সংস্থাসহ সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’ এর সুষ্ঠু ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক থাকতে নির্দেশনা প্রদানপূর্বক এ ধরনের প্রতিটি ব্যত্যয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯’, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯’ এবং ‘সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা, ২০১৮’ অনুসারে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ)’ এ উল্লিখিত নির্দেশিকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট তৈরি এবং এতে পরিহারযোগ্য বিষয়গুলোর উল্লেখ রয়েছে।

বিষয়গুলো হলো—

১.

সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

২. জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনোরকম তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩. কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন বা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি পরিপন্থী কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪. জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো সার্ভিস বা পেশাকে হেয় প্রতিপন্ন করে, এমন কোনো পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৫. লিঙ্গবৈষম্য বা এ-সংক্রান্ত বিতর্কমূলক কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না।

৬. জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো বিষয় লেখা, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি প্রকাশ বা শেয়ার করা যাবে না।

৭. ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশ্লীল তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে।

৮. অন্য কোনো রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

এ ছাড়াও, নির্দেশিকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ‘কন্টেন্ট’ ও ‘ফ্রেন্ড’ সিলেকশনে সকলকে সর্তকতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগ, রেফারেন্স বা শেয়ার করা পরিহারের কথা উল্লেখ রয়েছে। এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক কন্টেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন। সে জন্য প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ রয়েছে।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ এমন ক ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ