যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই শপথ নিতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন ডিসির স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে ট্রাম্পের অভিষেকের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এ উপলক্ষ্যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ওয়াশিংটনজুড়ে।

এর আগের দিন রোববার সেখানে বিশাল সমাবেশে হাজির হন তিনি। এসময় সমাবেশে আয়োজিত এক সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় তিনি ডিসকো ব্যান্ড ভিলেজ পিপলের সদস্যদের সঙ্গে গানের তালে তালে নাচতে শুরু করেন।

ট্রাম্পের এই সমাবেশে টিকটকের সিইও শাউ জি চিউ উপস্থিত ছিলেন। টিকটককে নিষেধাজ্ঞা থেকে রক্ষা করার জন্য নিজেকে কৃতিত্ব দেন ট্রাম্প। বিজয় সমাবেশে ট্রাম্পের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরাও মঞ্চে যোগ দেন, যার মধ্যে ছিলেন ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, এরিক এবং এরিকের স্ত্রী লারা ট্রাম্প।

পরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই তিনি ঐতিহাসিক গতিতে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও দেশটিতে অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ সূর্যাস্তের আগে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে বলেও বলেন তিনি।

নির্বাচনী প্রচারের সময় দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এটি হবে মার্কিন ইতিহাসের বৃহত্তম নির্বাসন প্রক্রিয়া। তবে বিশাল এই অপারেশন সম্পন্ন করতে বছরখানেক সময় এবং বিপুল অর্থের প্রয়োজন হতে পারে।  

এসময় ট্রাম্প বলেন, আমরা মার্কিন ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক আন্দোলন সৃষ্টি করেছি। আগামীকাল (আজ) থেকেই আমি দ্রুত ও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেব এবং আমাদের দেশের প্রতিটি সংকট সমাধান করব।

এদিকে হোয়াইট হাউজের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ট্রাম্প তার প্রথম দিনে ২০০টিরও বেশি নির্বাহী আদেশ জারি করবেন। এতে সীমান্ত নিরাপত্তা অগ্রাধিকার পাবে।

তিনি মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, মাদকচক্রকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করাসহ নানা নীতি পুনর্বহালের উদ্যোগ নেবেন।

অভিবাসন সংক্রান্ত তার পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এবং নাগরিক পরিবারের সঙ্গে থাকা অনেক অভিবাসীর মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।  

ট্রাম্প বলেন, তিনি সামরিক বাহিনী থেকে উগ্র মতাদর্শ দূর করবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নির্মাণের আদেশ দেবেন। তবে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি।

তিনি আরও বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট জন এফ.

কেনেডি, রবার্ট কেনেডি এবং মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত গোপন নথি প্রকাশ করবেন।

অন্যদিকে আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠান ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের ভেতরে স্থানান্তরিত হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে ২৫ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, শপথ নেওয়ার পর তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেবেন। তার ভাষণের মূল বিষয় হবে ঐক্য, শক্তি এবং ন্যায়বিচার।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩
  • টেকনাফে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ২