নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ সিরিজ খেলতে নিগার সুলতানা জ্যোতিরা ওয়েস্ট ইন্ডিজে। মালয়েশিয়ায় হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপ। সিনিয়র-জুনিয়র দুটি দলই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ত। বিদেশের মাটিতে সিরিজ এবং টুর্নামেন্ট খেলার মধ্যেই দেশ থেকে একটি সুখবরও পেলেন মেয়েরা। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে মাঠে গড়াচ্ছে নারী বিপিএল।
কোনো সন্দেহ নেই, নারীদের প্রথম বিপিএল এটি। রোমাঞ্চটাও তাই বেশি। বিদেশে খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের প্রতিক্রিয়া নেওয়া সম্ভব না হলেও উচ্ছ্বাসের বার্তা পাওয়া গেছে টিম ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে। খেলোয়াড়রা খোঁজখবর রাখছেন টুর্নামেন্ট সম্পর্কে। বিসিবি নারী বিভাগের পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত তিন দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ। নারী বিভাগের প্রধান হাবিবুল বাশার জানান, ফরচুন বরিশাল, রংপুর রাইডার্স ও ঢাকা ক্যাপিটাল খেলার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছে। খোঁজ করা হচ্ছে চতুর্থ দলের। শেষ পর্যন্ত কেউ রাজি না হলে তিন দল নিয়ে নারী বিপিএলের সূচনা হবে।
নারী বিপিএল আয়োজনের খবর শুনে খুশি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সালমা খাতুন। কারণ তারাই ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের বিপিএল আয়োজনের দাবি জানিয়ে এসেছেন। তাঁর মতে, ‘আমরা অনেক বছর ধরে ছেলেদের মতো মেয়েদের বিপিএল আয়োজনের অনুরোধ করেছি। যে কোনো কারণেই হোক, তা হয়নি। বর্তমান বোর্ড নারী ক্রিকেটকেও গুরুত্ব দিয়ে বিপিএলের মতো একটি টি২০ টুর্নামেন্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মেয়েদের টি২০ দলের উন্নতির জন্য এই বিপিএল সাহায্য করবে। ছোট পরিসরে হলেও শুরু হওয়া জরুরি। কয়েক বছরের ভেতর কলেবর বড় হবে। নারী বিপিএলটা বড় পরিসরে যখন হবে, তখন দেখবেন নারী ক্রিকেটের চর্চা দেশজুড়ে বেড়ে যাবে। মানসম্পন্ন ক্রিকেটার পাইপলাইনে বেশি থাকবে। বিসিবির এ উদ্যোগে আমি খুশি।’
হাবিবুল বাশার জানান, প্রতিটি দলে ১৫ জন করে ক্রিকেটার থাকবে। নীতিমালায় একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়মও রাখা হচ্ছে। তবে বিদেশি ক্রিকেটার কোন মানের হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তারও একটি গাইডলাইন থাকবে বলে জানান বাশার।
বিসিবি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ক্রিকেটারদের পাঁচটি ক্যাটেগরি করে দেওয়ার। তিন দলের তিনজন আইকন ক্রিকেটার থাকবেন। এ, বি, সি ও ডি বাকি চার ক্যাটেগরি। আইকন ক্রিকেটারদের জন্য পাঁচ লাখ, এ-ক্যাটেগরিতে চার লাখ, বি-ক্যাটেগরিতে তিন লাখ, সি-ক্যাটেগরিতে দুই লাখ আর ডি-ক্যাটেগরিতে এক লাখ টাকা সম্মানী নির্ধারণ করা হতে পারে।
বাশার বলেন, ‘আমরা আইকন রাখব একজন করে। এ গ্রেডে দু’জন, বি গ্রেডে দু’জন, সি গ্রেডে তিনজন, ডি গ্রেডে চারজন খেলোয়াড় রাখা হবে। ১৫ জনের স্কোয়াড থাকবে। যেহেতু ছেলেদের বিপিএল শেষ হওয়ার তিন দিনের মধ্যেই মেয়েদের বিপিএল, তাই আমরা চেষ্টা করছি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের ওপর যাতে চাপ না পড়ে। ৩২ থেকে ৩৩ লাখ টাকার মধ্যে খেলোয়াড় সম্মানী রাখতে পারলে সহনশীল হবে। ৫০ লাখের মধ্যে যাতে শেষ করতে পারে টুর্নামেন্ট। আমাদের লক্ষ্যই হলো বিপিএলটা করা। যাতে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা নিজ আগ্রহে পরের বছর অংশগ্রহণ করে।’
নারী বিভাগের প্রধান বাশার জানান, তিন দলের টুর্নামেন্ট হলে ১০ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি সাতটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল ন র ব প এল দ র ব প এল ত ন দল
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ