গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে অপহরণ থেকে রক্ষা পেলেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা নিঝুম রুবিনা। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাইট শেয়ারিং গাড়ি উবারে ওঠে রাজধানীর বনশ্রী থেকে ধানমণ্ডিতে যাওয়ার পথে ভয়াবহ এই ঘটনার মুখোমুখি হন বলে অভিযোগ করেছেন এই অভিনেত্রী।

গতকাল নিঝুম তার ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে পুরো ঘটনার বর্ণনা করে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমি আজকে (মঙ্গলবার) বাসা থেকে উবার কল দিয়েছি বনশ্রী থেকে ধানমন্ডি যাব। হাতিরঝিলে ওঠার পর ধানমন্ডির দিকে না গিয়ে সে আমাকে নিয়ে যাচ্ছিল গুলশানের দিকে। মঙ্গলবার থাকায় রাস্তা অনেকটাই খালি, তারমধ্যে দুপুরবেলা। তারপর আমি জিজ্ঞেস করলাম, সোজা না গিয়ে কেন আপনি আমাকে গুলশানে নিয়ে যাচ্ছেন? তখন সে আমাকে বলল, আপনার লোকেশনেই আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি, আপনি চুপ থাকেন। তখন তার গাড়ির স্পিড প্রায় ৮০ থেকে ১০০। হাইস্পিডে গাড়ি টেনে যাচ্ছিল।”

গাড়ি থেকে লাফ দিয়ে নামার ঘটনা বর্ণনা করে নিঝুম রুবিনা বলেন, “পরে আমি বললাম, ভাই আমাকে আপনি এখানেই নামিয়ে দেন। তখন সে আমাকে বলল, চুপ থাক কোনো কথা বলবি না…। তারপর আমি গাড়ির গ্লাসটা খুলে বাঁচাও, বাঁচাও বলে চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিই। কিন্তু কেউ আসলই না, সে গাড়ি যখন একটু স্লো করল, আমি জাম্প দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে যাই।”

আরো পড়ুন:

দুই নায়িকাকে নিয়ে জায়েদ খানের ডিগবাজি (ভিডিও)

সেই অটোচালককে বুকে জড়িয়ে ধরলেন সাইফ আলী খান

জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে নিঝুম রুবিনা বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা কি? আমরা কোন দেশে বসবাস করছি? দিনে-দুপুরে আমরা কি আমাদের সেফটি পাব না? উবারের মতো একটা অ্যাপও যদি এমন হয়, তাহলে আমরা কাকে ভরসা করব, সেই প্রশ্ন আপনাদের কাছে। আজকে যদি গাড়ি থেকে আমি না নামতাম, তাহলে কি আজকে আমাকে খুঁজে পাওয়া যেত?কোথায় যেতাম আজকে আমি?”

উবার চালকের ছবি পোস্ট করে নিঝুম রুবিনা বলেন, “এই সেই ড্রাইভারের ছবিসহ আপনাদের কাছে পোস্ট করে দিলাম। প্লিজ সবাই একটু পোস্টটা শেয়ার করে দেন, উবারে ওঠার আগে খুব চিন্তা করে উঠতে হবে।”

গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার ঘটনাটি এটি। গাড়ি থেকে লাফ দেওয়ার ফলে মাথায় আঘাত পেয়েছেন রুবিনা। ভয়ংকর এ ঘটনার পর ঢাকার হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন নিঝুম রুবিনা। সাধারণ ডায়েরি নম্বর ১২৩৭।

২০১৩ সালে নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এর বেশি ভালোবাসা যায় না’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন নিঝুম রুবিনা। এরপর অভিনয় করেন ‘অনেক সাধনার পরে’, ‘মেঘকন্যা’, ‘বেসামাল’ সিনেমায়। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘লিপস্টিক’। বর্তমানে তার হাতে দুটি সিনেমার কাজ রয়েছে। এগুলো হলো— ‘দুই মা’, ‘বন্ধু তুই আমার’।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ