‘প্রতিবছরই নতুন কিছুর পরিকল্পনা থাকে। সবসময় চ্যালেঞ্জিং কিছু কাজ করতে চেয়েছি। ‘পোলাপ’ সিনেমার কাজটি আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে। অভিনয় ক্যারিয়ারে নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছি কিন্তু রাজনৈতিক পটভূমির গল্পে আমাকে আগে কখনও দেখা যায়নি। সিনেমায় কাজের প্রস্তাব এলে আর না বলতে পারিনি।’
‘গোলাপ’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রসঙ্গে এভাবেই বললেন অভিনেতা ও মডেল নিরব। টানা কয়েক মাসের আন্তর্জাতিক সফর শেষে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন তিনি। ফিরেই বছরের শুরুতে দিলেন নতুন সিনেমার খবর। জানা গেছে, সিনেমাটি পরিচালনা করছেন শামসুল হুদা। এটি নির্মাতার প্রথম সিনেমা। গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপ অনিক বিশ্বাসের।
সিনেমার ফার্স্ট লুক পোস্টারে ধরা দিলেন অন্য এক নিরব। একটা হাত মাথায় ঝোলানো। ওই হাতে পিস্তলের ট্রিগারে রয়েছে আঙুল। গলায় রক্তের দাগ। চোখেমুখে হিংস্র অভিব্যক্তি। সবাই পোস্টারটির প্রশংসা করেছেন। সিনেমায় নিরবের বিপরীতে কে অভিনয় করবেন তা এখনও জানা যায়নি। শিগগিরই নির্মাতার তরফ থেকে সে ঘোষণা আসবে।
সাসপেন্স থ্রিলার এবং অ্যাকশন ঘরানার সিনেমাটি দৃশ্যধারণ শুরু হবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। ঢাকা ও সৈয়দপুরের বিভিন্ন লোকেশনে এর চিত্রায়ণ হবে। আসছে এরপর ঈদুল আজহায় এর মুক্তির পরিকল্পনাও করছেন নির্মাতা।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মডেলিং ও সিনেমায় অভিনয় করে নিজেরে জাত চিনিয়েছেন নিবর। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে প্রস্তুত করে পা দিয়েছেন এ অভিনেতা। জনপ্রিয়তার পেছনে না ছুটে অধ্যবসায় আর পরিশ্রম করে এগিয়ে গেছেন সাফল্যের পথে। একটু পেছনে ফিরে তাকালে আমরা দেখি ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’, ‘গুরুভাই’, ‘মন দিয়েছি তোমাকে’, ‘বলো না তুমি আমার’, ‘চার অক্ষরের ভালোবাসা’, ‘আব্বাস’, ‘কসাই’, ‘ক্যাসিনো’, ‘ফিরে দেখা’সহ আরও কিছু ভিন্ন ধাঁচের সিনেমায় অভিনয় করে দর্শক প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই অভিনেতা।
১৬ বছরের সিনেমা ক্যারিয়ারের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তাঁর কাছে স্পষ্ট হয়েছে জনপ্রিয়তা চিরস্থায়ী নয়। ভালো কাজই একজন অভিনেতাকে দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখতে পারে। নিরব বলেন, ‘শুধু ভালো কাজ দিয়েই দর্শকমনে যুগের পর যুগ বেঁচে থাকা যায়। তাই জনপ্রিয়তার দৌড়ে অংশ নেওয়ার চেয়ে ভালো কাজ করে যাওয়াই মুখ্য। যে কারণে আগামীতে যে কাজগুলো বেছে নিতে চাই, যেখানে ধাঁচের গল্প আর নতুন সব চরিত্রে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ থাকবে।’
নিরবের এই ভাবনা ও কাজের পরিকল্পনা শুনে এটা বুঝতে বাকি থাকে না যে, আগামীতে একটি পোক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে যাচ্ছেন তিনি। যে অধ্যায়ের প্রতিটি পরতে পরতে তাকে নতুনভাবে আবিষ্কারের সুযোগ পাবে দর্শক। ভালোমন্দ নিয়ে কেটে গেছে বিদায়ী বছরটি তাঁর। গেল বছর উল্লেখযোগ্যা কিছু কাজ করেছেন। পেয়েছেন দেশ ও দেশের বাইরের একাধিক অ্যাওয়ার্ড’। নতুন বছরে নতুন কিছু যুক্ত হবে প্রত্যাশা করছেন এই তারকা অভিনেতা।
বর্তমানে সিনেমার কাজ নিয়েই নিরবের ব্যস্ত সময় কাটছে। বেশ আগে তিনি কাজ শেষ করেছেন ‘কয়লা’ সিনেমার। আর হাতে রয়েছে সিনেমা ‘স্পর্শ’। এই সিনেমার বেশির ভাগ দৃশ্যধারণ হয়েছে। শিগগিরই বাকি কাজ শেষ করবেন তিনি। এ ছাড়া আর একটি নতুন সিনেমার কাজ করবেন এই অভিনেতা। যদিও এ বিষয়ে কিছু বলতে নারাজ তিনি। পাশাপাশি মানসম্পন্ন বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব পেলেও কাজ করছেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চারঘাটের নন্দনগাছীতে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে রেলপথ অবরোধ
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির (স্টপেজ) দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এতে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ।
এ সময় আন্দোলনকারীরা স্টেশন সংস্কার ও আন্তনগর ট্রেন থামানোর দাবি-সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন তুলে ধরেন। বেলা একটার দিকে কর্মসূচি শেষ হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। দাবির মধ্যে ছিল সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস, বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ও ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশনের সংস্কার।
১৯২৯ সালে উপজেলার নন্দনগাছী স্টেশনটি স্থাপিত হয় নিমপাড়া ইউনিয়নের বরকতপুর এলাকায়, যা নন্দনগাছী স্টেশন নামে পরিচিত। শতবর্ষী স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০১৫ সালের শেষের দিকে। নিয়ম অনুযায়ী এই স্টেশনে স্টেশনমাস্টার, টিকিট মাস্টার, পোর্টারম্যান, পয়েন্টসম্যান, গেটম্যানসহ জনবল ছিল ১২ জন। বর্তমানে শুধু পোর্টারম্যান পদে একজন কর্মরত আছেন। শুধু দুটি লোকাল ট্রেন সেখানে থামে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অবরোধে অংশ নেওয়া লোকজন ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে ট্রেন থামানোর দাবিতে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী থেকে ঈশ্বরদীগামী একটি মেইল ট্রেন এলে স্টেশনে প্রবেশের আগেই জাতীয় পতাকা ও লাল পতাকা নিয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেন আন্দোলনকারী। তাঁরা ট্রেনের চালকের রুমে গিয়ে ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নেন। তাঁরা কেউ রেললাইনে, কেউ ট্রেনের ছাদে উঠে আবার কেউ প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নেন। প্রায় ১০-১২ মিনিট পর ট্রেনটিকে যেতে দেওয়া হয়।
এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আসে চিলাহাটি থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর ট্রেন বরেন্দ্র এক্সপ্রেস। নন্দনগাছী রেলস্টেশনে ট্রেনটির নির্ধারিত যাত্রাবিরতি নেই। তবে দাবি আদায়ের জন্য রেললাইনে সাধারণ লোকজন অবস্থান নেওয়ায় ট্রেন দুটি সেখানে থামতে বাধ্য হয়। প্রায় ১৫ মিনিট ট্রেনটিকে আটকে থাকার পর আবু সাইদ চাঁদের সহযোগিতায় ট্রেনটি সেখান থেকে রাজশাহীর দিকে রওনা হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী রেলস্টেশনে