সামনের বুধবারই বত্রিশ পেরিয়ে তেত্রিশে পা রাখবেন নেইমার। আর সেই তেত্রিশ বছরে এসেই শৈশবের ক্লাব সান্তোসকে দেওয়া কথা রাখছেন তিনি। ওই দিনই সাদা-কালো জার্সিতে বোতাফোগোর বিপক্ষে মাঠে নামবেন। 

যে মাঠ তিনি ১৫ বছর আগে ছেড়ে গিয়েছিলেন, যে সাজানো বাগান রেখে গিয়েছিলেন, এবার এসে কিন্তু সেই অবস্থায় পাচ্ছেন না দলকে। বছর দুই আগে ব্রাজিলের ঘরোয়া আসরের প্রথম সারির লিগ থেকে ছিটকে সান্তোস এফসি এখন খেলছে দ্বিতীয় বিভাগ লিগ সিরিও-বি। দলে বিদেশি বলতে আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, গাম্বিয়া ও ভেনেজুয়েলার কিছু খেলোয়াড়; যারা কিনা জাতীয় দলেরও না! বর্তমানে ক্লাবটির ঐশ্বর্য না থাকলেও ঐতিহ্য তো রয়েছে। এখনও ফুটবলবিশ্ব সান্তোস বলতেই পেলের ক্লাব বলেই চেনে। মৃত্যুর পর তাঁর ইচ্ছাতেই ক্লাব প্রাঙ্গণের পাশেই সমাধি ভবনে তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে। 

গত শতকে ফিফার ভোটে এই ক্লাবটিই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ক্লাব নির্বাচিত হয়েছিল। স্মৃতিবিজড়িত সাও পাওলোর সেই ক্লাবে এবার পছন্দের সব ফুটবলারকে নিয়ে আসতে চান নেইমার। ফ্রান্সের পল পগবা ও স্পেনের সার্জিও রামোস এই মুহূর্তে ফ্রি এজেন্টে আছেন। তাই তাদের সঙ্গেই নাকি যোগাযোগ করেছেন নেইমার। ব্রাজিলের গণমাধ্যম ইউওএলের খবর,  ব্রাজিলিয়ান তারকা থিয়াগো সিলভা, মার্সেলো এবং পাওলো হেনরিককেও নাকি নিয়ে আসতে চাচ্ছেন সান্তোসের বাগান সাজাতে। ক্লাব কর্তৃপক্ষও নতুন কিছু খেলোয়াড় আনতে চাচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার লিয়ান্দ্রো পারদেস। আপাতত রোমায় খেলছেন তিনি।

নেইমার যে সান্তোসকে সাজাতে এসেছেন, সেটা ইনস্টাগ্রামে নেইমারের পোস্ট করা এক ভিডিও থেকেই স্পষ্ট হয়েছে। সেখানে সান্তোসের হয়ে তাঁর অভিষেক, বার্সা হয়ে পিএসজি এবং সেখান থেকে সৌদি আরব ঘুরে আবার শিকড়ে ফেরা; সব ফুটে উঠেছে। 

ওই ভিডিওতে নিজের কণ্ঠে ধারা বর্ণনায় নেইমার বলেন, ‘মনে হচ্ছে, আমি সেই সময়টায় ফিরে যাচ্ছি। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে এখানে আছি এবং তারা আমাকে সহায়তা করছে নতুন অধ্যায় রচনা করতে। আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারছি না আমি। তারা আমার সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে জানে। সান্তোস ফুটবল ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছি আমি।’ 

তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই মুহূর্তটির জন্য অনেক বছর ধরে অপেক্ষায় ছিলাম আমি। বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত ভিলা ছেড়ে যাওয়ার পর ১২টি বছর ব্যস্ত সময় কেটেছে আমার। যদিও মনে হয় যেন গতকালের ঘটনা। এই ক্লাব ও সমর্থকদের প্রতি আমার অনুভূতি কখনোই বদলায়নি। আমি এখানে আবার খেলতে চাই। সামনের বছরগুলোতে চ্যালেঞ্জ সামলাতে যে ভালোবাসার প্রয়োজন আমার, তা কেবল দিতে পারে সান্তোসের মতো একটি ক্লাবই।’

নেইমারের এই আগমনে ভীষণভাবে খুশি ক্লাব সভাপতি মার্সেলো তেসেইরা। ‘সময় এখন ঘরে ফেরার। নেইমার, এখন তোমার নিজের মানুষের কাছে ফিরে আসার সময়। তোমার ঘরে, যে ক্লাবটি তোমার হৃদয়ে।’ 

ভিডিও বার্তায় ক্লাব সভাপতি বুঝিয়ে দিয়েছেন, নেইমারকে বরণ করে নিতে তারা কতটা উদগ্রীব হয়ে আছেন। এরই মধ্যে তাঁর সান্তোসে আসার গুঞ্জন শুরু হওয়ার পর থেকেই ক্লাবটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর ফলোয়ারও বাড়তে শুরু করেছে। সোশ্যাল ব্লেড ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, ১ জানুয়ারি থেকে ইনস্টাগ্রামে সান্তোসের অনুসারীর সংখ্যা বেড়ে ৭ লাখ ২০ হাজার হয়েছে। টিকটকে বেড়েছে ৪ লাখ নতুন অনুসারী। 

তবে সৌদি থেকে পারিশ্রমিক অনেকটা ছাড় দিয়েই নেইমার সান্তোসে এসেছেন। ছয় মাসের চুক্তি অনুযায়ী সান্তোস থেকে মাসে ১ লাখ ৩৬ হাজার পাউন্ডের মতো পাবেন নেইমার। তবে নেইমার তাঁর ছবি এবং ভিডিওর কপি রাইটস থেকে বাড়তি যে অর্থটা পাবেন, তা দিয়ে নাকি আর্থিক ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে নিতে পারবেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। তবে নেইমার তো এখানে অর্থের জন্য আসেননি, তিনি এসেছেন ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয়ে খেলার ইচ্ছা নিয়ে। আর সেটা পূরণ করতে হলে সান্তোসের হয়ে আগামী ছয় মাস তাঁকে ফিট থেকে ম্যাচ খেলতে হবে। আপাতত সেটাই তাঁর চ্যালেঞ্জ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন: বিএনপির যে প্রার্থীদের সঙ্গে লড়বেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের যেসব আসনে নির্বাচন করার কথা রয়েছে, সেখানেও প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আরো পড়ুন:

বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নেই তারকারা

কুষ্টিয়ায় মনোনয়নবঞ্চিত সোহরাব- সমর্থকদের বিক্ষোভ

বিএনপির ঘোষিত আসনভিত্তিক তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা-১১ (বাড্ডা-ভাটারা-রামপুরা) আসনের তাদের প্রার্থী এম এ কাইয়ুম। এই আসনে নির্বাচন করতে পারেন এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।

রংপুর-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ এনামুল হক ভরসা। এই আসনে নির্বাচন করতে পারেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ নওশাদ জমির। এই আসনে নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের।

কুমিল্লা-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। এই আসনে নির্বাচন করতে পারেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

চাঁদপুর-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী করা হয়েছে মো. মমিনুল হককে। এই আসনে নির্বাচন করতে পারেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “এখন পর্যন্ত আমাদের দলের আসনভিত্তিক মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়নি। যখন চূড়ান্ত করা হবে, আপনাদের জানানো হবে।”

এর আগে রবিবার (৩ নভেম্বর) সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা ৩০০ আসন ধরে এগোচ্ছি। ঢাকা থেকেই আমি দাঁড়াব। আর কে কোন আসনে দাঁড়াবেন, আমরা প্রার্থী তালিকা এ মাসেই দিতে পারি।”

অবশ্য বিএনপি ও এনসিপি চূড়ান্ত মনোনয়ন না দেওয়া পর্যন্ত যে কোনো আসনে যেকোনো সময় পরিবর্তন আসতে পারে বলে তারা ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। 

ঢাকা/রায়হান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ