নড়াইলের গৃহবধূ সুরাইয়া শারমিন দৃষ্টি (৩৩) হত্যায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার তাদের নড়াইল ও বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তির বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, বিয়েতে রাজি না হওয়ায় দৃষ্টিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে সাঈদুর রহমান নামের এক সেনাসদস্য। পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দৃষ্টির দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুত্বের কথা জানালেও পুলিশের ভাষ্য, তাদের মধ্যে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।

সাঈদুর রহমান নড়াইল শহরের দুর্গাপুরের বাসিন্দা। গ্রেপ্তার অন্যরা হলো বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা মাহিন্দ্রা চালক নয়ন ও তার সহযোগী শহিদুর। নয়নের স্ত্রী আঁখির সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল দৃষ্টির।

নিহত দৃষ্টি নড়াইল শহরের আলাদাতপুর এলাকার মৃত আব্দুল করিম মোল্যার মেয়ে। তাঁর স্বামী মাহফুজ রহমানের বাড়ি লোহাগড়ায়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাহফুজ কয়েক বছর ধরে হৃদরোগে ভুগছেন। দৃষ্টি ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকেন। তিনি নড়াইল সদর হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মী।

স্বজনরা জানান, ৩১ জানুয়ারি যশোরে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন দৃষ্টি। পরে তাঁর সন্ধান না পেয়ে ১ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি দৃষ্টির লাশ পাওয়া যায় বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায়। ওই উপজেলার নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের একটি পুকুরে মেলে তাঁর লাশ। শরীরে ইট বাঁধা ও গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস দেওয়া ছিল। ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বিকেলে দৃষ্টির গলিত মরদেহ নড়াইলের বাড়িতে আনা হয়। জানাজা শেষে নড়াইল পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় দৃষ্টির মা সবেজান বেগম মঙ্গলবার বাগেরহাটের ফকিরহাট থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। তাঁর সন্দেহের তালিকায় সাঈদুরের নাম রয়েছে। সবেজান বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সাঈদুরের খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল। মেয়ে যা কিছু করত সাঈদুরের সঙ্গেই পরামর্শ করত। দৃষ্টিকে হত্যার পেছনে সাঈদুরের হাত রয়েছে।’ 

নড়াইল সদর থানার ওসি মো.

সাজেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় সাঈদুর রহমানকে ধরে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। ফকিরহাট থানায় হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে নিয়ে গেছেন। 

গেরহাটের ফকিরহাট মডেল থানার ওসি এস এম আলমগীর কবীর আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে জানান, সাঈদুরের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে দৃষ্টির সম্পর্ক। তারা বিয়ের পরিকল্পনা করে জয়পুরে দৃষ্টির বান্ধবী আঁখির বাড়িতে আসে। সেখানে কোনো বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এ সময় দৃষ্টিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে সাঈদুর। পরে মরদেহ সরানোর জন্য নয়ন ও শহিদুরের সাহায্য নেয়। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনী জোটবদ্ধ হবেন না, যাদের কাছে সাহাবায়ে কেরামের সম্মান নিরাপদ নয়

যাদের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে পূর্বপুরুষরা সতর্ক করে গেছেন, যাদের কাছে সাহাবায়ে কেরামের সম্মান নিরাপদ নয় তা‌দের স‌ঙ্গে ‌নির্বাচনী জোটবদ্ধ হওয়া থে‌কে বিরত থাকার আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকা‌লে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

জামায়াতকে ইঙ্গিত ক‌রে বাবুনগরী ব‌লেন, “আগামী নির্বাচনে এমন কারো সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া যাবে না যাদের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে আমাদের পূর্বপুরুষরা সতর্ক করে গেছেন।”

“আপনারা তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবেন না, যাদের কাছে সাহাবায়ে কেরামের সম্মান নিরাপদ নয়, নবীজী বলেছেন, আমি আর আমার সাহাবারা যে পথ ও পন্থার ওপর আছি, সেটাই মুক্তির একমাত্র পথ।”

তাই সহি আকিদার সব দল জোটবদ্ধভাবে ইসলামের খেদমত করার আহ্বান জানান তি‌নি।

যাদের মাধ্যমে ইসলামের ক্ষতি হবে তাদের সঙ্গে ঐক্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানি‌য়ে হেফাজতের আমির আবারও বলেন, “তাদের সঙ্গেও ঐক্যবন্ধ হওয়ার চিন্তাও করবেন না, যাদের বিষয়ে আমাদের আকাবিরে কেরাম সতর্ক করে গেছেন, তাদের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে তারা অনেক বই পুস্তকও রচনা করে গেছেন।এসব ভ্রান্ত আকিদার কোনো দলের সঙ্গে আপনারা জোট বন্ধ হবেন না। ইলমে ওহি ও ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত আপনারা গ্রহণ করবেন না।এদেশের দাওয়াতে তাবলিগ, মসজিদ মাদরাসা যেনো কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকেও আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।”

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপন নিয়ে তিনি বলেন, “ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপন দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই এদেশে মানবাধিকার কমিশনের অফিস প্রত‌্যাহার কর‌তে হ‌বে।”

জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুকের সভাপ‌তি‌ত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী, হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ড বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ