‘কটাক্ষ থেকে বাঁচতে’ তিন মেয়েসহ ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ খেয়ে মায়ের মৃত্যু
Published: 6th, February 2025 GMT
নাটোরে এক নারী নিজে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট (একপ্রকার কীটনাশক) খাওয়ার পর তিন মেয়েকেও খাওয়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে শারমিন বেগম (৩২) নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে যমজ দুজনসহ তিন বোনকে। বুধবার মধ্যরাতে সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের দুর্গম বড়গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া শারমিন বেগম বড়গ্রামের মুরাদ হোসেনের স্ত্রী। তাঁদের অসুস্থ মেয়েরা হচ্ছে জিম খাতুন (৮), মিম খাতুন (৮) ও সিনহা খাতুন (৩)। তাদের বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বারবার মেয়ে হওয়া নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কটাক্ষের হাত থেকে বাঁচতে শারমিন এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শারমিন বেগম নিজে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে। এর পরপরই কৃমিনাশক ট্যাবলেটের কথা বলে ঘুমন্ত তিন মেয়েকে জাগিয়ে তিনি একই ট্যাবলেট সেবন করান। কিছুক্ষণের মধ্যে সবাই অসুস্থ হতে শুরু করলে স্বজনেরা তাদের প্রথমে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তাৎক্ষণিক তাদের বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই শারমিন বেগম অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে মারা যান। পরে অসুস্থ তিন মেয়েকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তারা চিকিৎসাধীন ছিল।
মারা যাওয়া শারমিনের বাবা আবদুল ছালাম বলেন, বিয়ের পর থেকে শারমিনকে নির্যাতন করতেন স্বামী মুরাদ হোসেন। কিছুদিন বিদেশে থাকার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। ইতিমধ্যে শারমিনের তিনটি মেয়েসন্তান জন্ম নেওয়ায় স্বামীসহ শ্বশুরড়াবির লোকজন গালমন্দ করতেন। সারাক্ষণ কটাক্ষের মধ্যে তাকে বসবাস করতে হতো। তিনি আরও বলেন, ‘মেয়ের দুই যমজ মেয়ের একটা (জিম) আমার কাছে থাকত। বুধবার আমি তাকে ওর বাবা–মার কাছে রেখে আসি। এরপর রাতেই গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ার ঘটনা ঘটে।’
ঘটনার পর থেকে মুরাদ হোসেন পলাতক। তবে তাঁর বড় ভাই নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সময় তিনি ও তাঁর ভাই মুরাদ গ্রামের বাজারে ছিলেন। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে অসুস্থ শারমিন ও মেয়েদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। পথে মুরাদের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তবে মেয়েরা হাসপাতালে ভালো আছে। মেয়েসন্তান জন্ম নেওয়ার কারণে কটাক্ষ করার অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘এ রকম কিছু হলে তো আমার জানার কথা ছিল। আমার ভাইবউ এমন অভিযোগ আমার কাছে করেননি।’
সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাহেদুল ইসলাম জানান, রাতে অসুস্থদের হাসপাতালে যখন আনা হয়েছিল, তখন তাদের অবস্থা খারাপ ছিল। তাই তাৎক্ষণিক তাদের বগুড়া বা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ য স ট য বল ট
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি বেঁচে আছি’, বললেন কোরীয় অভিনেত্রী
হঠাৎ এক বন্ধুর ফোন। কাঁদতে কাঁদতে শিন এ–রার কাছে জানতে চাইলেন, ‘তুমি বেঁচে আছ?’ আকাশ থেকে পড়লেন। পরে জানলেন, ইউটিউবে তাঁর মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছে। এরপর একের পর এক ফোন পেতে থাকেন।
বাধ্য হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় শিন এ-রা লিখেছেন, ‘আমি বেঁচে আছি।’
নিজের মৃত্যুর গুজব নিয়ে রীতিমতো বিপত্তিতে পড়েছেন এই দক্ষিণ কোরীয় অভিনেত্রী।
ভিডিও বার্তায় শিন বলেন, ‘আমি মারা যাইনি। আমার এক বন্ধু কাঁদতে কাঁদতে ফোন করে জানতে চায়, আমি কি সত্যিই মারা গেছি। কীভাবে মানুষ এতটা ভিত্তিহীন খবর ছড়াতে পারে?’
আরও পড়ুনবাসে ওঠার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন দক্ষিণি নির্মাতা০২ জুন ২০২৫শুধু শিন নয়, কোরিয়ায় আরও কয়েকজন তারকার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিন লিখেছেন, ‘এটা শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়। ইউটিউবে দেখলেই বোঝা যাবে—অনেক তারকাকে মৃত দেখিয়ে ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে। এমন কিছু দেখলে দয়া করে নামটা গুগলে সার্চ করুন। এসব বিশ্বাস করবেন না।’
শিনের পোস্টে অভিনেত্রী ইউন ইউ-সান মন্তব্য করেছেন, ‘সত্যি! আমাকেও কয়েকজন একই প্রশ্ন করেছে। এখন তো মিথ্যা খবরের ছড়াছড়ি—আমাদের সত্য-মিথ্যা চিনতে শিখতে হবে।’
শিনের এ ঘটনায় অনেক ভক্তই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেউ লিখেছেন, ‘আপনাকে দেখে স্বস্তি লাগছে।’ কেউ আবার বলেছেন, ‘এভাবে গুজব ছড়ানো অপরাধ হওয়া উচিত।’