জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ তরুণ এক্সকাভেটর দিয়ে ওই কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেন।

উপজেলা পরিষদসংলগ্ন আদিপৈত এলাকায় অবস্থিত আধা পাকা ভবনের কার্যালয়টি গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ভাঙচুর করা হয়েছিল। আজকে পুরো কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা পরিষদের বিপরীত পাশেই উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি অবস্থিত। শুক্রবার রাত আটটার দিকে ৩০ থেকে ৪০ জনের একদল বিক্ষুব্ধ তরুণ এক্সকাভেটর নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে যান। পরে এক্সকাভেটর দিয়ে কার্যালয় ভাঙা শুরু করা হয়। ধীরে ধীরে এক্সকাভেটর দিয়ে দেয়াল ভেঙে কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চলে ভাঙচুর। এ সময় সেখানে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

এদিকে আজ রাত আটটার দিকে ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল বিক্ষুব্ধ তরুণ ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দোতলা কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে ভেতরে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মীর ইসহাক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে আমাদের কোনো কমিটি নেই। ফলে সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ নাই। যাঁরা এসব করছেন, তাঁদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা এসব কর্মকাণ্ড রোধ করার চেষ্টা করছি। ফলে সেখানে কে বা কারা এসব ঘটাচ্ছেন, সেই বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।’

এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব