Prothomalo:
2025-11-03@09:11:46 GMT

প্রবেশপথে বারোয়ারি পসরা

Published: 8th, February 2025 GMT

অমর একুশে বইমেলার প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। স্টল নির্মাণ নিয়ে হাতুড়ি–বাটালির ঠুকঠাক এখনো চলছে। বারোয়ারি মেলার আবহ আবার ফিরতে শুরু করেছে প্রবেশপথে। বিশেষ করে টিএসসির পাশের ফটকের সামনে থেকে মেলার মূল প্রাঙ্গণ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে বসেছে হরেক পণ্যের পসরা। সেখানে কচি ডাবের পুডিং থেকে শুরু করে চুড়ি, ফিতা, ইমিটেশনের গয়না, ভিউকার্ড, কাপড়ের পুতুলসহ বিকোচ্ছে অনেক কিছু।

গতকাল শনিবার বিকেলে দেখা গেল, মেলার ভেতরেও চলছে ফেরিওয়ালাদের অবাধ বেচাকেনা। গাছে গাছে এখন আমের মুকুল দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কে জানে কোথা থেকে এসব ফেরিওয়ালা ডালাভরা কাঁচা আম এনে বিক্রি করছেন কাসুন্দি মাখিয়ে। আছে চিনাবাদামওয়ালা, ঝালমুড়িওয়ালা এমন নানা পদের ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতার দল। একাডেমি তাদের প্রতি সদয় হলেও বই বিক্রেতাদের অনেকেই এ নিয়ে বেশ উষ্মা প্রকাশ করলেন। অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বললেন, এভাবে চলতে থাকলে বইমেলা আবার বারোয়ারি মেলায় পরিণত হবে।

গতকাল মেলার তথ্যকেন্দ্রে নতুন বইয়ের নাম এসেছে ১০২টি। প্রবীণ অভিনয়শিল্পী দিলারা জামান বিকেলে স্বপ্ন-৭১–এর স্টলে আমিনা মাহমুদ মিনার কবিতা তোমাকে চাই বারবার–এর মোড়ক উন্মোচন করেন। তিনি বললেন, বয়সের কারণে এত ভিড়ের মধ্য বইমেলায় আসতে পারেন না। অনেক দিন পর মেলায় এসে পুরোনো দিনের অনেক স্মৃতি মনে পড়ছে। মেলার পরিবেশ বেশ ভালো লেগেছে তাঁর।

মেলায় এবারের নতুন বইয়ের মধ্যে আগামী প্রকাশনী এনেছে হাসনাত আবদুল হাইয়ের উপন্যাস জুলাই ক্যালাইডোস্কোপ। প্রথমা প্রকাশন এনেছে মাসউদ আহমাদের অদ্বৈত মল্লবর্মণের জীবন ও সময়কেন্দ্রিক উপন্যাস তিতাসের বুনো হাঁস, ভাষা প্রকাশ এনেছে লোকসাহিত্যবিষয়ক বই যাকির সাইদ সংগৃহীত ও সম্পাদিত মুন্সীগঞ্জের মেয়েলি গীত, রিদম প্রকাশনা সংস্থা এনেছে জসিম মল্লিকের উপন্যাস তোমার স্বপ্নের হাতে, বিশ্বসাহিত্য ভবন এনেছে রকিবুল হাসানের প্রবন্ধ সংস্কৃতি পরম্পরা: অভিঘাত অভিজ্ঞান, ঐতিহ্য এনেছে মেসবাহ্ কামালের কবিতা পৃথিবী শোষণহীন একদিন, বাংলা প্রকাশ এনেছে ড.

মাহবুব হাসানের প্রবন্ধ গদ্যের ম্যাজিক, অনন্যা এনেছে মতিন রায়হানের নির্বাচিত কবিতা, বৈতরণী এনেছে নিজাম বিশ্বাসের কবিতা জলমাকড়ের নৌকাবাইচ, কথাপ্রকাশ এনেছে দন্ত্যস রওশনের কিশোর গল্প গল্পবেলা, স্বপ্ন–৭১ এনেছে তৌহিদুল ইসলামের রম্যরচনা বিয়ে বাড়িতে ইয়ে, পাঞ্জেরী এনেছে রফিকুর রশীদের কিশোর উপন্যাস সেই এক ভুতুড়ে ক্লাব, বাংলা একাডেমি এনেছে আজাদ রহমানের বাংলা খেয়াল তৃতীয় খণ্ড, সময় এনেছে দীপু মাহমুদের উপন্যাস উষ্ণতা।

গতকাল প্রথমা প্রকাশনের স্টলে শিশুতোষ বই বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে আছে বাদল সৈয়দের মৃথিবী ও ইসমাইল আরমানের আজব কারিগর। বিক্রেতারা জানালেন, বড়দের বইয়ের মধ্যে ফারুক চৌধুরীর আত্মজীবনী জীবনের বালুকাবেলায়, মতিউর রহমানের রাজনীতিবিষয়ক বই মুক্ত গণতন্ত্র রুদ্ধ রাজনীতি, আতাউর রহমান খানের স্বৈরাচারের দশ বছর, মিজানুর রহমানের ঢাকা পুরাণ–এর কাটতি বেশি ছিল।

আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল শনিবার শিশুপ্রহর থাকবে না। তবে গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ছিল শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতা। আর বিকেলে মেলামঞ্চে ছিল ‘একজন মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। মূল প্রবন্ধে বিশিষ্ট অনুবাদক রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী বলেন, মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ ছিলেন একাধারে শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, প্রশাসক, কবি, লেখক, অনুবাদক ও সুফিবাদ চর্চাকারী। তাঁর লেখালেখির জগৎ বিচিত্র। তিনি ভাষা, সমাজ, শিক্ষা প্রসঙ্গে জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ যেমন লিখেছেন, তেমনি রচনা করেছেন সুখপাঠ্য ভ্রমণকাহিনি। অনুবাদের ক্ষেত্রেও তিনি তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। খালিকুজ্জামান ইলিয়াসের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আবদুস সেলিম ও মোহাম্মদ হারুন রশিদ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র উপন য স প রবন ধ রহম ন গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।  

এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর  মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।

এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব  হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।

সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ