খুলনা জেলা কারাগারে বন্দী আওয়ামী লীগের এক নেতা মারা গেছেন। আজ রোববার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এই সময় সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আক্তার শিকদার খুলনার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৮ সালে বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারি হেলালের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগে গত ৪ নভেম্বর তেরখাদা থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার আসামি ছিলেন তিনি। আক্তার শিকদার গত ২৭ জানুয়ারি খুলনার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই থেকে খুলনা কারাগারে ছিলেন আক্তার শিকদার। আক্তার শিকদার দুপুরের দিকে মারা গেলেও ঘটনাটি জানাজানি হয়েছে রাত সাড়ে আটটার পর।

খুলনা জেলা কারাগারের জেলার মো.

আবু সায়েম প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা দেড়টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন আক্তার শিকদার। এরপর তাঁকে প্রথমে কারাগারের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেলার আরও বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, স্ট্রোকের কারণে আক্তার শিকদার মারা গেছেন। লাশের সুরতহাল করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। আগামীকাল ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে আক্তার শিকদারের লাশ হস্তান্তর করা হবে।’

আক্তার শিকদারের চাচাতো ভাই মিলন শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, তেরখাদা থানায় হওয়া একটি মামলায় আক্তার শিকদারসহ আরও ১০-১৫ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই থেকে খুলনার কারাগারে ছিলেন আক্তার শিকদার।

মিলন শিকদার আরও বলেন, আক্তার শিকদারের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর স্ত্রী ঢাকায় মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। বেলা তিনটার দিকে ঘটনা শোনার পর তিনি খুলনার উদ্দেশে রওনা হন।

তেরখাদা থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের মোকামপুর বাজার খেয়াঘাট এলাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারি হেলালের গাড়িবহরে হামলা করা হয়। ওই ঘটনায় গত বছরের ৪ নভেম্বর রাতে উপজেলা বিএনপির সদস্য আজিজুল হাকিম বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে ২০৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।

তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, কারাগারে যে ব্যক্তি মারা গেছেন, তিনি এই মামলার আসামি ছিলেন। এই মামলায় জামিনের আবেদন করে তিনি কারাগারে গিয়েছিলেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
 
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।

বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ