মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময় তারা সেখান থেকে এক দালালকে আটক করেন তারা।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। 

আটক দালালের নাম এমদাদ হাওলাদার (৫০)। তিনি সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের পাতিলাদী গ্রামের আব্দুর রফিক হাওলাদারের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে দুদকের অভিযান 

অফিসে ঢুকে ধমক দেওয়ায় থানায় অভিযোগ দিলেন পাসপোর্টের ডিডি

দুদক সূত্র জানায়, মাদারীপুর আঞ্চলিক সাপপোর্ট অফিস ও তার আশপাশে বেপরোয়া হয়ে উঠছে দালালচক্র। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ছদ্মবেশে সেখানে অভিযান চালায় দুদক। পরে পাসপোর্ট অফিসের সামনে গোপনে কথোপকথন ভিডিও করেন কর্মকর্তারা। পাসপোর্ট করে দেবার শর্তে এক সেবা প্রত্যাশীর কাছ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা দাবি করেন এমদাদ হাওলাদার। পরে তাকে হাতেনাতে ধরা হয়। এরপর মুচলেকা দিয়ে স্ত্রীর জিম্মায় এমদাদকে ছেড়ে দেয় দুদক।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, “মাদারীপুর পাসপোর্ট অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। দালালের মাধ্যমে টাকা দিলেই কেবল সেবা পাওয়া যায়। দালালরা পাসপোর্ট ফাইলে সাংকেতিক চিহ্ন দিয়ে দেয়। সেই চিহ্ন না থাকলে সেবা পাওয়া যায় না।”

তিনি আরো বলেন, “শুধু দালাল ধরলেই হবে না। ধরতে হবে অফিসারদের। তাহলে কাঙ্খিত সেবা পাবে মানুষ।”

দুদক মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক মো.

আক্তারুজ্জামান বলেন, “ভবিষ্যতে পাসপোর্ট অফিস ও তার আশপাশে এমন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না থাকার শর্তে আটক এমদাদকে তার স্ত্রীর জিম্মায় মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হয়রানি বন্ধে পাসপোর্ট অফিসে অভিযান নিয়মিত চলমান থাকবে।”

মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, “পাসপোর্ট অফিসের বাইরে থেকে এক দালালকে আটক করেছে দুদকের কর্মকর্তারা। পরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।”

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক অফ স র পর চ ল এমদ দ

এছাড়াও পড়ুন:

সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাঝপথে জ্বালানি শেষ স্পিডবোটের, ২৭ যাত্রী নিয়ে ভেসে ছিল আড়াই ঘণ্টা

সন্দ্বীপ চ্যানেলে দুর্ঘটনায় পড়া একটি স্পিডবোট আড়াই ঘণ্টা সাগরে ভেসে থাকার পর কূলে পৌঁছেছে। বোটটিতে ৩ শিশু, ২ নারীসহ মোট ২৭ জন যাত্রী ছিলেন।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা বোটটি বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট কুমিরা উপকূলে পৌঁছায়। বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস।

বোটের কয়েকজন যাত্রী প্রথম আলোকে জানান, কুমিরা ঘাটের কাছাকাছি আসতেই বোটটির গতি কমে যায়। এরপর প্রবল ঢেউ ও স্রোতের মুখে বারবার পানিতে আছড়ে পড়তে থাকে। চালক তখন যাত্রীদের জানান, বোটের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে বোটের সামনের অংশে পানি ঢুকতে দেখা যায়। আতঙ্কিত যাত্রীরা তখন চিৎকার করতে থাকেন। পরে বোটটি ভাসতে ভাসতে কূলে পৌঁছায়।

বোটে থাকা যাত্রী ফুয়াদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোটের তলা ফেটে পানি ঢুকছে আর আমরা এক কিলোমিটার দূরে উত্তাল সাগরে ভাসছি। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল বেঁচে ফিরতে পারব না, এমনকি সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার কথাও ভাবছিলাম। কিন্তু ভাগ্য ভালো, শেষ পর্যন্ত কূলে পৌঁছাতে পেরেছি।’

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সবাই নিরাপদে কূলে নামতে সক্ষম হন বলে জানান ফুয়াদ।

বিকেলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রাণহানির আশঙ্কায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টির কারণ জানতে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

জানতে চাইলে বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বোটের জ্বালানি শেষ হয়নি। তীব্র স্রোতের কারণে বোটটি কুমিরা ঘাট থেকে উত্তরে সরে গিয়ে তীরের কংক্রিট ব্লকে ধাক্কা খায়। এতে বোটের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যাত্রীরা সবাই নিরাপদে কূলে পৌঁছাতে সক্ষম হন।’

বৈরী আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বোট চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সার্ভিস বন্ধ ছিল। তবে বিদেশগামী কয়েকজন যাত্রীর অনুরোধে এই একটি ট্রিপ চালু করতে হয়েছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই সময়ে বোট চলাচলের অনুমতি ছিল না। তিনি বলেন, মাঝ সাগরে জ্বালানি শেষ হওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তার দায় চালক ও মালিকের। ইতিমধ্যে স্বত্বাধিকারীদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। চালকের লাইসেন্স স্থগিত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ