ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব বন্ধ বা স্থগিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি: ডিএমপি
Published: 16th, February 2025 GMT
ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব বন্ধ বা স্থগিত করতে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এই উৎসব বন্ধ হওয়ার কারণ ডিএমপির বোধগম্য নয় বলে জানানো হয়েছে।
ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস) মুহাম্মদ তালেবুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ রোববার এ কথা জানানো হয়েছে।
ডিএমপি বলেছে, ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব ২০২৫ স্থগিত সম্পর্কে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিবৃতি তাদের নজরে এসেছে। তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে নাট্যোৎসব বন্ধ বা স্থগিত করা সম্পর্কে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যেকোনো ধরনের সৃজনশীল ও শৈল্পিক কর্মকাণ্ডকে ডিএমপি সব সময় উৎসাহিত করে। তবে কী কারণে ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব স্থগিত হয়েছে, তা তাদের বোধগম্য নয়। ওই নাট্যোৎসব ঘিরে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ডিএমপি তৎপর রয়েছে বলে জানানো হয়।
‘শিল্পের আলোয় ভরে উঠুক মঞ্চের আঙিনা, দর্শকই স্বজন, দর্শকই প্রেরণা’, এমন প্রতিপাদ্য নিয়ে গতকাল শনিবার ঢাকার মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব শুরুর কথা ছিল। বাংলাদেশ মহিলা সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, রমনা থানা থেকে ফোনে নাট্যোৎসব বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
পুরো ঘটনা নিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন ঢাকা মহানগর নাট্য পর্ষদের আহ্বায়ক ঠান্ডু রায়হান। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, ‘ঢাকার ৮৫টি নাট্যদলের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে, গণঅর্থায়নে যখন উৎসবের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছেন, ঠিক তখন আমাদের জানানো হলো, উৎসব বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ মহিলা সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, যে রমনা থানা থেকে ফোনে নাট্যোৎসব বন্ধ করতে বলা হয়েছে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘শুক্রবার রাতে কে বা কারা অন্ধকারে মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তন থেকে উৎসবের সাজসজ্জা খুলে নিয়ে যায়। এরপরও নাটকের স্বার্থে আমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করি। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সবার নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ভালোবাসায় আয়োজন করা প্রাণের নাট্যোৎসব আপাতত স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছি।’
তবে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলো তারা কিছুই জানে না বলে জানায় পুলিশের রমনা বিভাগ। এখন ডিএমপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করা হলো।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড এমপ র ন ট য ৎসব ড এমপ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’