গর্ভাবস্থায় ফাইব্রয়েড টিউমার কতটা ভয়ের?
Published: 17th, February 2025 GMT
ফাইব্রয়েড টিউমার জরায়ুর একটি অতি পরিচিত টিউমার। এই টিউমারের লক্ষণগুলো হলো, মাসিকের সময় অধিক রক্তপাত ও ব্যথা হওয়া। যদিও ৭৫ শতাংশের ক্ষেত্রে এই টিউমার কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। অবস্থানভেদে এই টিউমার তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন– সাব-সেরাস, ইন্ট্রা মুরাল ও সাব-মিউকাস। এর মধ্যে সাধারণত সাব-মিউকাস টিউমারই অধিক জটিলতার কারণ হয়ে থাকে। গর্ভধারণের আগেই যদি এই টিউমার ধরা পড়ে, তবে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। টিউমার অপসারণ করা দরকার হবে যদি দীর্ঘদিন চেষ্টার পরও গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে এবং বন্ধ্যত্বের আর কোনো কারণ না পাওয়া গেলে।
তিন বা এর অধিকবার গর্ভপাত হলে।
বন্ধ্যত্ব সমস্যার জন্য টিউমার অপারেশন করার আগে কিছু শর্ত পূরণ করা জরুরি। যেমন বন্ধ্যত্বের জন্য অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা দেখে নেওয়া, হিস্টারো স্যালফিংগোগ্রাম বা ল্যাপারোস্কপি করে ফেলোপিয়ান টিউব (ডিম্বনালি) খোলা কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে, স্বামীর শুক্রাণু বা বীর্য নরমাল থাকতে হবে। জরায়ুতে টিউমার থাকা অবস্থায় গর্ভধারণ হয়ে থাকলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা কোনো অসুবিধা করে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিউমারের
কারণে মা এবং সন্তানের বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে, যেমন–
গর্ভপাতের আশঙ্কা বেশি থাকে, বিশেষ করে টিউমারটি যদি সাব-মিউকাস হয়। কারণ সাব-মিউকাস টিউমার জরায়ুর ভেতরে অবস্থিত হওয়ায় ভ্রূণ এবং প্লাসেন্টার স্থাপনকে বাধাগ্রস্ত করে। গর্ভধারণের কারণে এই টিউমারেরও কিছু পরিবর্তন হয়, যা জটিলতা তৈরি করে। যেমন– জরায়ু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিউমারের আকার ও সাইজ পরিবর্তন হতে পারে। অনেক সময় টিউমারের মধ্যে রক্তক্ষরণ হয় অথবা পানি জমা হয়ে পেটে
প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। প্লাসেন্টা যদি টিউমারের ওপর অবস্থিত হয়, তবে অনেক সময় প্লাসেন্টা সেপারেশন হয়ে অ্যান্টিপারটাম হেমোরেজ (রক্তপাত) হতে পারে। এ ছাড়া বাচ্চার ওজন কম হওয়া, প্লাসেন্টা প্রিভিয়া (গর্ভফুল নিচের দিকে থাকা), সময়ের আগে ডেলিভারি হওয়া ইত্যাদি জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফাইব্রয়েডের কারণে অনেক সময় নরমাল ডেলিভারির পথ বাধাগ্রস্ত হয় এবং সিজারের প্রয়োজন হতে পারে। তা ছাড়াও ডেলিভারির সময় এবং এর পরে অধিক রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে। টিউমার ফেলে দেওয়া হবে কিনা তা নির্ভর করে টিউমারটি কোথায় অবস্থিত এবং এর আকার-আকৃতির ওপরে। আবার ডেলিভারির পর অনেক টিউমার আকারে ছোট হয়ে যায় এবং পরে কোনো অপারেশন নাও লাগতে পারে। v
[গাইনি বিশেষজ্ঞ]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?