ভারতকে হারানোর মন্ত্রে মাঠে নামবে বাংলাদেশ
Published: 19th, February 2025 GMT
“এই সংস্করণে আমাদের দল বেশ ভারসাম্যপূর্ণ এবং আমরা বিশ্বাস করি, এই টুর্নামেন্টে যে কোনো দলকে আমরা হারাতে পারি”-যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির লড়াইয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতকে হারানোর মন্ত্র নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় দুবাইয়ে ভারতের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজের দল।
ভারতের মতো দলের বিপক্ষেও শান্ত কেন এতটা আত্মবিশ্বাসী? সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার, “সব দলই ট্রফি জয়ের সামর্থ্য রাখে। তবে আমি এমন একজন, প্রতিপক্ষ নিয়ে খুব বেশি যে ভাবে না। আমরা যদি নিজেদের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে পারি যথাযথভাবে, যেকোনো দিনে যেকোনো দলকে হারাতে পারি আমরা।”
আরো পড়ুন:
রোহিতের ২০ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে কোথাও নেই ‘বাংলাদেশ’
ভারত-বাংলাদেশ: উত্তেজনা এক পাশে রেখে সবার মনোযোগ মাঠে
দুই দল এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে ৪১ বার। ৩২ বারই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রোহিত শর্মার দল। বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৮টিতে। ১টি ম্যাচ পরিত্যাক্ত হয়েছে। আইসিসি ইভেন্টে বাংলাদেশের সবশেষ জয় ২০০৭ সালে। সেবার ভারত গ্রুপপর্ব থেকেই বাদ পড়ে।
এরপর ২০১১ ওয়ানডে ও ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষে ছিল বাংলাদেশ। দুবারই জয় দিয়ে শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়। দলটির অভিজ্ঞ ব্যাটার বিরাট কোহলিও বাংলাদেশকে পেয়ে যেন হাততালি দিচ্ছেন!
স্টার স্পোর্টসকে এই তারকা ক্রিকেটার বলেন, “বাংলাদেশের বিপক্ষে যতবার জয় দিয়ে আসর শুরু করেছে ভারত, ততোবারই শিরোপা জিতেছে।’’ ২০১১ এবং ২০২৪ সালের আসরের ম্যাচ দুটোর কথা মনে করিয়ে দিলেন কোহলি। এবারও তেমনই আশা করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আসর শুরু করাটা সবসময় আমাদের জন্য ভালো কাজ করেছে। এবারও আমরা একই প্রত্যাশা করছি।”
বাংলাদেশের একাদশ কেমন হতে পারে? তিন পেসার নাকি তিন স্পিনার? তবে শান্ত জানিয়েছেন, এটা ম্যাচের আগেই বোঝা যাবে। তবে অলরাউন্ডারদের নিয়ে দেখছেন স্বপ্ন, “অলরাউন্ডাররা সবসময় দলকে ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে। আমাদের ভালো কিছু অলরাউন্ডার আছে। আশা করি, তারা আগামীকাল পারফর্ম করবে এবং দলের জন্য নিজেদের মেলে ধরবে।”
বাংলাদেশ দলের জন্য বাড়তি সুবিধা দেবে জাসপ্রিত বুমরাহর মতো উইকেট শিকারি বোলার না থাকা। কিন্তু শান্ত মনে করেন ভারত দলে অনেক ক্রিকেটার আছেন যারা বুমরাহর অভাব পূরণ করতে পারবেন।
“কোনো একজন ক্রিকেটারকে নিয়ে ভাবছি না আমি। ওদের মানসম্পন্ন ক্রিকেটার আরও অনেক আছে। আমরা ভাবছি কীভাবে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি।”
ঢাকা/আমিনুল/রিয়াদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এ দেশে খুচরা ব্যাংকিং বন্ধ করে দিচ্ছে এইচএসবিসি
বাংলাদেশে খুচরা (রিটেইল) ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংক দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি)। ফলে বহুজাতিক এই ব্যাংকে আর কোনো ব্যক্তি আমানত ও ঋণসংক্রান্ত সেবা পাবেন না। তবে খুচরা ব্যাংকিং ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্তটি হুট করে কার্যকর করা হবে না। ধাপে ধাপে গ্রাহকদের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করে এই সেবা বন্ধ করা হবে। এইচএসবিসির গ্লোবাল এক পর্যালোচনায় বাংলাদেশ থেকে খুচরা ব্যাংকিং ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যাংকটি আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
খুচরা ব্যাংকিং সেবার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত হিসাব, গাড়ির ঋণ, বাড়ি কেনার ঋণ, বিমাসেবা, মেয়াদি বিনিয়োগ, ব্যক্তিগত অর্থায়ন। এর মধ্যে প্রচলিত ও শরিয়াহ দুই ধরনের সেবা রয়েছে। এসব সেবায় এখন নতুন গ্রাহক যুক্ত করা বন্ধ করে দিয়েছে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির ওয়েবসাইটেও এ–সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৪ সাল শেষে এইচএসবিসি বাংলাদেশের আমানত ছিল ২২ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা এবং ঋণ ও অগ্রিম ছিল ১৮ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। গত বছর ব্যাংকটির মুনাফা বেড়ে হয় ১ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। সারা দেশের ৮টি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় ব্যাংকটির ব্যবসাকেন্দ্র রয়েছে। সারা দেশে শাখা ও উপশাখা রয়েছে সাতটি। এ ছাড়া পাঁচটি ‘সিলেকট’ সেন্টারের মাধ্যমে বিশেষ ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে বহুজাতিক এই ব্যাংক। সারা দেশে ব্যাংকটির এটিএম বুথ রয়েছে ১১টি।
এক বিজ্ঞপ্তিতে এইচএসবিসি জানিয়েছে, ব্যাংকটি বাংলাদেশে তাদের রিটেইল ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ করছে। এই প্রক্রিয়া এ বছরের দ্বিতীয় অংশে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে। বাংলাদেশে রিটেইল ব্যবসায় এইচএসবিসির বাজার অবস্থান ও এই ব্যবসার কৌশলগত অবস্থানকে বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রিটেইল ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ধাপে ব্যাংকটি তাদের গ্রাহকদের অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে করপোরেট ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবসা এ ঘোষণার আওতামুক্ত থাকবে। বাংলাদেশের কমার্শিয়াল ব্যাংকিং ব্যবসাটি এইচএসবিসির আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে গুরুত্বপূর্ণ একটি মার্কেট হিসেবেই থাকছে। এইচএসবিসি গ্রুপ বাংলাদেশের করপোরেট ও ইনস্টিটিউশন ব্যাংকিং তথা করপোরেট গ্রাহকদের সেবা প্রদানকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং ওই ব্যবসায় ট্রেড ও ইনভেস্টমেন্টে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী গ্রুপটির কার্যক্রম আরও সহজতর করার একটি অংশবিশেষ, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে ঘোষণা করা হয়। যেসব দেশে এইচএসবিসির পরিষ্কার প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা রয়েছে, সেই সব দেশে ব্যাংকটি তার গ্রাহকদের ব্যবসা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদানে গুরুত্ব অব্যাহত রাখবে।
জানা যায়, খুচরা ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করলেও বাংলাদেশে আমদানি-রপ্তানিসহ করপোরেট ও কমার্শিয়াল ব্যাংকিং ব্যবসার প্রসার অব্যাহত রেখেছে ব্যাংকটি। ফলে ব্যাংকটির মুনাফাও বাড়ছে। এইচএসবিসি বাংলাদেশ তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০২৪ সালে এক হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। ২০২৪ সালে ব্যাংকটির মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। বহুজাতিক ব্যাংকটি ২০২৩ সালে ৯৯৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। ২০২২ সালে এইচএসবিসির নিট মুনাফা ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা।
ব্যাংকের ২০২৪ সালের প্রকাশিত আর্থিক বিবরণীতে বলা হয়েছে, সুদের আয় বৃদ্ধি, আমানতের খরচ কমা এবং বিনিয়োগ থেকে ভালো আয় হওয়ায় রেকর্ড মুনাফা করা সম্ভব হয়েছে। ২০২৪ সালে ব্যাংকটির নিট সুদ আয় ৩৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকায়। আমানতের ওপর সুদ ২০ শতাংশ কমে হয়েছে ৬১৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ঋণ থেকে সুদের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।
এ ছাড়া ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় এইচএসবিসি আয় করেছে ৯৯২ কোটি টাকা, যার মধ্যে মূলধন লাভও রয়েছে। এ আয় আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সাল শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬৮ শতাংশে।
এইচএসবিসি ১৯৯৬ সালে ঢাকায় প্রথম শাখা চালু করে। ব্যাংকটির মূল প্রতিষ্ঠান এইচএসবিসি হোল্ডিংস পিএলসি। বাংলাদেশে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় গুলশানের লিংক রোডে।