অস্ত্র দিয়ে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হলেন তিন বন্ধু
Published: 21st, February 2025 GMT
মেহেরপুরের গাংনীতে কয়েক বছর ধরে প্রতিবেশীর সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে বিরোধ চলছিল রতন আলী নামের এক ব্যক্তির। দুই বছর আগে তাঁকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছিল প্রতিপক্ষ। এবারে তাঁর বাড়িতে দেশি অস্ত্র রেখে ফাঁসাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন তিন বন্ধু। গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টায় উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ছাতিয়ান গ্রামের তরিকুল ইসলাম (৩০), জেনারুল ইসলাম (২৫) ও সামিম আজাদ ওরফে বাবুল (৩৮)।
র্যাব-১২–এর গাংনী ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, ছাতিয়ার গ্রামের রতন আলী নামের এক ব্যক্তির উঠানে একটি দেশি একনলা বন্দুক পুঁতে রেখে র্যাবকে গোপনে খবর দেন ওই তিন বন্ধু। এতে র্যাবের কর্মকর্তাদের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। গাংনী র্যাবের একটি দল রতন আলীর বাড়িতে গিয়ে ওই বন্দুকটি উদ্ধার করে। এ সময় রতন আলীর সঙ্গে র্যাবের কর্মকর্তারা কথা বলে জানতে পারেন আগের ঘটনা। তাঁর সঙ্গে কাঠের ব্যবসা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল কয়েক বছর ধরে। এরপর র্যাবের কর্মকর্তারা ওই তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁরা সেখানে অস্ত্র পুঁতে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে তাঁদের নামে অস্ত্র আইনে মামলা দিয়ে গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ক্যাম্পের কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার এনামুল হক বলেন, প্রতিবেশী রতন আলীকে ফাঁসাতে তরিকুল ইসলাম, জেনারুল ইসলাম ও সামিম আজাদ একটি দেশি একনলা ছোট আকারের বন্দুক পুঁতে রাখেন। পরে তাঁরা র্যাবের কাছে খবর দেন। ঘটনাটি তদন্ত করে র্যাব জানতে পারে যে ওই তিন বন্ধুই প্রকৃত অপরাধী।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, অস্ত্রসহ তিন ব্যক্তিকে থানা হেফাজতে দিয়েছে র্যাব তাঁদের নামে অস্ত্র মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রামুতে অস্ত্রসহ শাহীন বাহিনীর ‘ম্যানেজার’ গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়া থেকে পাঁচটি অস্ত্রসহ নুরুল আবছার (৩৪) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে বিজিবি। গ্রেপ্তার নুরুল আবছার সীমান্তে মাদক ও গরু চোরাচালান চক্রের প্রধান শাহীন বাহিনীর অন্যতম সহযোগী বলে বিজিবি জানিয়েছে। তিনি শাহীন বাহিনীর ‘ম্যানেজার’ হিসেবে পরিচিত।
আজ মঙ্গলবার ভোরে গর্জনিয়া ইউনিয়নের বোমাংখিল গ্রামে এ অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তার নুরুল আবছার বোমাংখিল গ্রামের বাসিন্দা ফরিদুল আলমের ছেলে। অভিযানের সময় দেশে তৈরি ৪টি একনলা বন্দুক, ১টি দোনলা বন্দুক, ৮ রাউন্ড গুলি, ৬টি খালি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস কে এম কফিল উদ্দিন বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত শাহীন বাহিনীর অন্যতম সহযোগী নুরুল আবছার গরু ও মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। তিনি ডাকাত শাহীনের চোরাই গরু সংরক্ষণ ও বিক্রির বিষয়টি তদারকি করেন বলে ‘ম্যানেজার’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
দুপুরে গ্রেপ্তার নুরুল আবছারকে জব্দ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদসহ রামু থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। আবছারের বিরুদ্ধে আগে থেকে মাদক, হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
বিজিবির কর্মকর্তা বলেন, ২১ জুলাই মিয়ানমার থেকে পাচারের সময় নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি সীমান্তে বিজিবি অভিযান চালিয়ে নুরুল আবছারের ৯ হাজার ৬৬০টি ইয়াবার চালান জব্দ করেছিল। অভিযানের সময় আবসার পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ওই দিন নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় দায়ের করা মামলায় নুরুল আবছারকে আসামি করা হয়। এর আগে ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ রামুর গর্জনিয়ায় শাহীন ডাকাত বাহিনীর গুলিতে খুন হন স্থানীয় আবু তালেব নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনায়ও নুরুল আবছার জড়িত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, গত ৫ জুন সকালে গর্জনিয়া ইউনিয়ন চোরাচালান চক্রের প্রধান এবং রামুর গর্জনিয়ার যুবলীগ নেতা শাহীনুর রহমান ওরফে ‘শাহীন ডাকাতকে’ (৩২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ । এ সময় একটি এ কে ২২ রাইফেল, তিনটি একনলা বন্দুক, ২০ হাজার ইয়াবা, ১০টি ধারালো অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। শাহীনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অস্ত্র, মাদকসহ ২০টি মামলা রয়েছে। তাঁর নামে গঠিত শাহীন বাহিনীর প্রায় ৪০-৪৫ জন সদস্য রয়েছে, যাঁদের কাছে রয়েছে ভারী অস্ত্র, মাদক ও বিপুল পরিমাণ টাকা। বর্তমানে শাহীন কারাগারে রয়েছেন।