অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সমতা আনার বড় হাতিয়ার হলো শিক্ষা। শিক্ষা না থাকলেও অর্থ অর্জন করা যায়; কিন্তু শিক্ষা থাকলে তা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারে না। শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা কেউ কেড়ে নিতে পারে না।

শনিবার রাজধানীর কুড়াতলীতে নিজস্ব ক্যাম্পাসে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) ২২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে তিনি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ২ হাজার ৫৪৭ শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। এ ছাড়া কৃতিত্বপূর্ণ ও সেরা ফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজনকে আচার্য স্বর্ণপদক, ৭৯ জনকে সুম্মা কাম লাউড স্বর্ণপদক, ২০ জনকে ডা.

আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ পদক, ১২৮ জনকে ম্যাগনা কাম লাউড রৌপ্যপদক, ২৩ জনকে উপাচার্য পদক এবং ৩৯ জনকে কাম লাউড ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারেন; কিন্তু দেখেন, অনেক টাকার মালিকেরা কেউ পালিয়ে বেড়াচ্ছে, কারও ব্যাংক লুট হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি সরকারে থেকে দেখলাম, ব্যাংক বাজেয়াপ্ত করে লাভ হবে না; যদি না সঠিক শিক্ষা নিশ্চিত করা হয়।’

সমাবর্তনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেন, ভালো–মন্দের বিচার সবাই করতে পারে, তবে শিক্ষিত ও আলোকিত মানুষেরা সেটি আরও ভালোভাবে করতে পারে। তোমাদের সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

সমাবর্তন বক্তা শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, বিদ্যা শেখার উদ্দেশ্য হলো পৃথিবীর সামনে মুক্ত মানুষ হিসেবে নিজেকে দাঁড় করানো। পৃথিবী সম্পর্কে যদি কোনো খবরই না রাখেন, অন্যায়–অবিচার নিয়ে কিছু না বলেন; শুধু চাকরির দক্ষতা অর্জন করলে সেটা সম্পূর্ণ হয় না।

এআইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাদিয়া অনোয়ার বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষা হলো জ্ঞান অর্জন এবং নেতৃত্ব তৈরি করা। আজ ডিগ্রি অর্জনের মধ্য দিয়ে সমাজে অর্থপূর্ণ প্রভাব রাখার বড় দায়িত্বও তোমাদের ওপর বর্তাবে।’

সমাবর্তনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এআইইউবির উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, সহ–উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবদুর রহমান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হাসানুল আবেদীন হাসান, ইশতিয়াক আবেদীন প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে কারখানা চালু করল সুইজারল্যান্ডের সিকা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে নতুন কারখানা চালু করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক রাসায়নিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিকা বাংলাদেশ। আজ সোমবার দুপুরে সোনারগাঁয়ের টিপরদী এলাকায় মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এমআইইজেড) প্রতিষ্ঠানটির কারখানা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগলি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। এ ছাড়া সিকা বাংলাদেশের প্রধান সঞ্জীবন রায়, সিকা এশিয়া প্যাসিফিক ম্যানেজমেন্টের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ইউমি কানসহ মেঘনা গ্রুপ ও সিকা বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিকা বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড সঞ্জীবন রায় বলেন, ‘সিকা বাংলাদেশ’ হলো সিকার ১০০তম সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যা আমাদের জন্য এক গৌরবের মাইলফলক। সিকা এখন বিশ্বজুড়ে টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের প্রতীক। নির্মাণ ও শিল্প খাতে স্থায়িত্ব, শক্তি এবং উপকরণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা নিরন্তরভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের নির্মাণ খাতের রাসায়নিক বাজার বর্তমানে প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলারের। এ বাজারে সিকার অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৫০ কোটি সুইস ফ্রাঁ বিনিয়োগে নতুন কারখানা করেছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায় ৮ হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে স্থাপিত কারখানাটিতে দুটি আধুনিক উৎপাদন লাইন রয়েছে। যার মধ্যে একটি লিকুইড অ্যাডমিক্সচার ও অন্যান্য কংক্রিট পণ্য উৎপাদনের জন্য এবং অপরটি পাউডারভিত্তিক পণ্য তৈরির জন্য। বিশ্বজুড়ে নির্মাণ ও মোটরগাড়ি শিল্পের জন্য বন্ডিং, সিলিং, রিইনফোর্সিং, প্রটেকশন ও ড্যাম্পিং পণ্যে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সিকা বর্তমানে ১০০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম রয়েছে।

সিকা বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত রেটো রেংগলি বলেন, সিকা মানেই গুণগত মান, উদ্ভাবন এবং আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণ। ‘সিকা’ বিশ্বজুড়ে নির্মাণ খাতে উচ্চমানের উদ্ভাবনী পণ্য এবং সমাধান দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার।

সিকার এই যাত্রা মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বাংলাদেশের জন্য গর্বের বলে উল্লেখ করেন এমজিআইয়ের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘নির্মাণ খাতে সিকা বিশ্বে নেতৃত্বদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান। সিকার বিনিয়োগ আমাদের অঞ্চলের সমৃদ্ধি বয়ে আনতে সহায়ক হবে। মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল বিনিয়োগ নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য অবকাঠামোসহ যাবতীয় সুযোগ–সুবিধা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের পাশে থাকবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ