সেদিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষ্ণপক্ষ ব্যান্ডের সঙ্গে কী ঘটেছিল
Published: 25th, February 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গাইতে গিয়ে একদল লোকের বাধার মুখে পড়েছে কৃষ্ণপক্ষ ব্যান্ড। ১৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাসন্তিক’ নামে আয়োজনে গান শেষে করে মঞ্চ ছাড়ার আগমুহূর্তে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পড়েছিল ব্যান্ডটি। কনসার্ট আয়োজন করেছিল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা সংসদ।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোচ্চার হয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে কৃষ্ণপক্ষ এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, ১৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটের পর প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঘন জংলার ছোট্ট মাটির সঙ্গে অবরুদ্ধ হয়ে লুকিয়ে ছিলেন ব্যান্ডের সদস্যরা। পরদিন সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন ব্যান্ডের সদস্যরা।
সেই রাতের ঘটনার আদ্যোপান্ত ফেসবুকে লিখেছে কৃষ্ণপক্ষ। শুরু থেকে সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। একের পর এক গান পরিবেশন করেছে ব্যান্ডটি। শেষ গান ‘ভাঙা সাইকেল’ পরিবেশন করে মঞ্চ থেকে নামার আগমুহূর্তে ‘মবের’ মুখে পড়েন তাঁরা।
ব্যান্ডের ভাষ্য, ‘মঞ্চের বিপরীত প্রান্ত থেকে উন্মত্ত চিৎকার–চেঁচামেচি ও বিচ্ছিন্ন গালাগাল শোনা যায়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা সংসদের আয়োজকদের চোখেমুখে আমি মূর্তিমান আতঙ্ক দেখি। লাঠিসোঁটা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটা মব চেয়ার ভাঙচুর শুরু করে এবং মঞ্চের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতে থাকে। আমাদের কাছে মোটেও এদের সাধারণ শিক্ষার্থী মনে হয়নি। চিরচেনা পাওয়ার এক্সারসাইজ গ্রুপ এরা, পেশিশক্তির প্রদর্শন এত স্পষ্ট ছিল, আমার মনে হয়েছে, লাঠি হাতে গালি দিতে থাকা এরা সবাই অসাধারণ শিক্ষার্থী।’
এরপর কী ঘটেছে, তা–ও লিখেছে কৃষ্ণপক্ষ, ‘আয়োজকেরা দ্রুত আমাদের সেখান থেকে নামিয়ে নিয়ে যান। তাড়াহুড়ায় কারও গিটার, কারও মুঠোফোন, কারও ব্যাগ সেখানেই পড়ে থাকে। আমরা গিয়ে আমাদের ভাড়া করে আনা গাড়িতে উঠে পড়ি। আয়োজকদের ভেতর কয়েকজনই আমাদের সঙ্গে থাকেন পুরোটা সময়। গাড়ি পিছিয়ে নিয়ে ঘুরে আমরা গভীর জংলার একটা রাস্তায় লুকিয়ে পড়ি। গাড়ির হেডলাইট বন্ধ, আমাদের কথা বন্ধ। প্রথম কিছুক্ষণ এমন ছিল, নিশ্বাস নেওয়াটাও বন্ধ হয়ে গেলে ভালো মনে হচ্ছিল। তাহলে আওয়াজ হতো না। আর কেউ শুনে ফেলে চার্জ করতে আসত না। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বন্ধুদের সহায়তায় আমরা রাত ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করি।’
এমন পরিস্থিতিতে কনসার্টের আয়োজক বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা সংসদের সদস্যরা ব্যান্ডের পাশেই ছিলেন। আয়োজকদের ভূমিকার প্রশংসা করেছে কৃষ্ণপক্ষ। আয়োজকদের নিয়ে কৃষ্ণপক্ষ লিখেছে, ‘গোটা সময়ই তাঁরা ভীষণ অনুতপ্ত ছিলেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন বারবারই। গোটা সময়ই আমাদের ছেড়ে যাননি তাঁরা। সঙ্গেই ছিলেন। আমার একটা পর্যায়ে তাঁদের চোখমুখ দেখে ভীষণ মায়া হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ই উপযুক্ত: সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ই সবচেয়ে উপযুক্ত হবে। এর পরে দেশের আবহাওয়া প্রতিকূল থাকে। তা ছাড়া বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা হয়। নির্বাচনের জন্য এর পরের সময়টা উপযুক্ত নয়।
আজ শুক্রবার যুক্তরাজ্যে সফররত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় প্রথম আলোকে এসব কথা বলেন জোনায়েদ সাকি।
বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের অর্থনীতি ও জনজীবনের সংকট দূর হবে। আমরা আগেই প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছিলাম, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজন করতে। কিন্তু এত দিন সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সরকার এপ্রিলে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিল, যে সময়টা যথাযথ ছিল না।’
নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হলে রাজনীতিতে আস্থাপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসবে বলে মনে করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি দেশের জন্য এই পরিবেশ বজায় থাকা জরুরি। সংস্কারের জন্য এই পরিবেশ সহায়ক হবে। এত দিন নির্বাচনের তারিখ নিয়ে উদ্বেগ থাকায় সংস্কার নিয়ে তেমন অগ্রগতি ছিল না। এখন সংস্কারের অগ্রগতি নিয়ে কাজ করা যাবে।’
সংস্কার কার্যক্রমকে জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে মীমাংসা করবে উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা করছি। সর্বোচ্চ মতামতের ভিত্তিতে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হবে, তার ওপর জুলাই সনদ তৈরি হবে। এসব বিষয়ে আরও আলাপ–আলোচনা দরকার।’ তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই হত্যার বিচার শুরু হয়েছে, এটা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। এই পরিস্থিতি ধরে রাখতে হবে।’