আরো বেশি ফেডারেল কর্মী ছাঁটাইয়ের নির্দেশ ট্রাম্পের
Published: 27th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে আরো বেশি সংখ্যায় কর্মী ছাঁটাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের নবগঠিত সরকারি কর্মদক্ষতা দপ্তরের (ডিওজিই) দায়িত্বপ্রাপ্ত ধনকুবের ইলন মাস্ক মন্ত্রীসভার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্প তাকে আরো বেশি কঠোর পদক্ষেপ নিতে ও সরকারি ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা নিয়ে মন্ত্রীসভায় আলোচনা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
এবার তুরস্কে বৈঠকে বসছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ নিয়ে চুক্তিতে রাজি ইউক্রেন
মার্কিন প্রেসিডেন্টের নতুন একটি আদেশে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ১৩ মার্চের মধ্যে ‘ব্যাপক আকারে’ কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা জমা দেওয়ার নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। ইলন মাস্কের ডিওজিই দপ্তর এর আগে বেশ বড় আকারে ফেডারেল কর্মী ছাঁটাই ও বেশ কিছু সরকারি সহায়তা তহবিল বাতিল করায় বিভিন্ন সংস্থা বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মুখে রয়েছে। নতুন আদেশে ছাঁটাইয়ের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়নি।
এখন পর্যন্ত, প্রবেশনারি কর্মীরা বেশি ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। নতুন আদেশের ফলে বেসামরিক অভিজ্ঞ কর্মীরাও ছাঁটাইয়ের মুখে পড়তে পারেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থার প্রশাসক লি জেলডিন তার ১৫ হাজারেরও বেশি কর্মীর মধ্যে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাঁটাই করার পরিকল্পনা করছেন।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, মার্কিন মৎস্য ও বন্যপ্রাণী পরিষেবা এবং ভারতীয় বিষয়ক ব্যুরোর মতো সংস্থাগুলোকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইলন মাস্ক মন্ত্রিসভা-স্তরের কোনো সরকারি কর্মকর্তা নন এবং মার্কিন সিনেটের কোনো অনুমোদনের মুখোমুখি হননি। তারপরও ট্রাম্প তাকে মন্ত্রীসভার বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান। বৈঠকে ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, তিনি মাস্ক ও কাজে সন্তুষ্ট।
বৈঠক মাস্ক জানান, তিনি ৬ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন বাজেট থেকে এ বছর ১ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় কমাতে পারবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের এই ব্যাপক উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যের ফলে সম্ভবত সরকারি প্রকল্পগুলোতে উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত ঘটবে।
মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে মাস্কের ডিওজিই দপ্তরের সঙ্গে কাজ করার নিদের্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে সব ‘অপ্রয়োজনীয়’ চুক্তি পর্যালোচনা ও বাতিল করা হয়। এছাড়া সরকারের রিয়েল এস্টেট পরিচালনাকারী জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে যেকোনো অপ্রয়োজনীয় সম্পত্তি নিষ্পত্তি করার জন্য পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।