নিরীহ মানুষকে হত্যা ও গুমে জড়িত শেখ হাসিনার বিচার এই বাংলার মাটিতে হবেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু। তিনি বলেছেন, ‘তবে শেখ হাসিনা যে পরিমাণ নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, তাকে যদি ৩১ বারও ফাঁসি দেওয়া হয়, তা–ও তার বিচার শেষ হবে না।’

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনায় উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলার ডা.

ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে বরকতউল্লা বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনাও একইভাবে বাঙালি জাতির সঙ্গে, দেশের মানুষের সঙ্গে বেইমানি করেছে। এ দেশের হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে নির্বিচার হত্যা করেছে, এ দেশের রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে গুম করেছে।’

বরকতউল্লা আরও বলেন, ‘একাত্তরে শেখ মুজিব পাকিস্তানিদের কাছে জামাই আদরে আত্মসমর্পণ করে আত্মগোপন করেছিলেন। তখন এই বাঙালি জাতিকে দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমান সকল সেনাবাহিনীর সদস্যদের বলেছিলেন “আমরা আজ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম”। আর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জেড ফোর্স গঠন করে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের নেতৃত্ব্ দিয়ে দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’

জিয়াউর রহমানকে বাদ দিয়ে শেখ পরিবার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বদলে দিয়েছে অভিযোগ করে বরকতউল্লা আরও বলেন, ‘যে কারণে আওয়ামী লীগকে এখন আর কেউ বিশ্বাস করেন না। একাত্তরে শেখ পরিবারের কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে থাকে, এমন প্রমাণ যদি কেউ দিতে পারেন, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’

উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আতিকুল আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আক্তারুজ্জামান সরকার।

সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আতিকুল আলমকে সভাপতি ও মো. কাজী আশরাদকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট চান্দিনা উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এ বি এম সিরাজুল ইসলামকে সভাপতি ও সদস্যসচিব মো. আলমগীর খানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট চান্দিনা পৌর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। আগামী দুই বছর এই কমিটি দায়িত্ব পালন করবে।

প্রায় ছয় বছর পর চান্দিনা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে অনানুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়েছিল চান্দিনা উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র ব এনপ র ব এনপ র ক র রহম ন উপজ ল গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের অভিযোগে হাকিমির বিচার দাবি ফরাসি কৌঁসুলিদের

২০২৩ সালে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল পিএসজি তারকা আশরাফ হাকিমির বিচার করার দাবি তুলেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। মরক্কোর এই রাইটব্যাক অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।

নঁতের কৌঁসুলি অফিস বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, তদন্তে নিয়োজিত বিচারককে ধর্ষণের এই অভিযোগ ফৌজদারি আদালতে তোলার অনুরোধ করেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। কৌঁসুলি অফিস থেকে এএফপিকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিজের আদেশ কাঠামোর ভেতরে থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার এখন তদন্তে নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর।’

আরও পড়ুননিষেধাজ্ঞা মেসির পিছু ছাড়ছে না, এবার নিষিদ্ধ হলেন তাঁর দেহরক্ষী৫৭ মিনিট আগে

গত মে মাসে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে পিএসজির ৫–০ গোলের জয়ে বড় অবদান ছিল হাকিমির। পিএসজির প্রথম গোলটি ২৬ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়ের। সর্বশেষ ২০২২ বিশ্বকাপেও প্রথম আরব দেশ হিসেবে মরক্কোর সেমিফাইনালে ওঠায় দারুণ অবদান ছিল হাকিমির। ২০২৩ সালের মার্চে ২৪ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি অভিযোগকারীকে প্যারিসের উপকণ্ঠে বুলান–বিয়ানকুতে অবস্থিত নিজের বাসায় আসার খরচ দেন। তখন হাকিমির স্ত্রী ও সন্তান ছুটি কাটাতে বাইরে ছিলেন। অভিযোগকারী সেই নারী এরপর পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাকিমির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এবং তখন পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। সেই নারী আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করতে না চাইলেও কৌঁসুলিরা হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।

পুলিশকে অভিযোগকারী নারী তখন জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ইনস্টাগ্রামে হাকিমির সঙ্গে তাঁর পরিচয়। সেই রাতে ট্যাক্সি করে হাকিমির বাসায় তিনি গিয়েছিলেন এবং ভাড়াটা পিএসজি তারকাই দেন। পুলিশকে সেই নারী বলেছিলেন, হাকিমি সম্মতি ছাড়াই তাঁর শরীর স্পর্শ করেন এবং তারপর ধর্ষণ করেন। পুলিশের এক সূত্রও তখন এএফপিকে এ কথা জানায়। এক বন্ধুকে ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে আসতে বলেছিলেন সেই নারী। পরে সেই বন্ধু এসে তাঁকে নিয়ে যান।

আরও পড়ুনরিয়াল মাদ্রিদ ছাড়তে চান না কোনো খেলোয়াড়, ‘বেকায়দায়’ ক্লাব কর্তৃপক্ষ২ ঘণ্টা আগে

কৌঁসুলিরা গতকাল হাকিমির বিচারের দাবি তোলার পর তাঁর আইনজীবী ফ্যানি কোলিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এএফপি। তাঁর মতে, কৌঁসুলিদের এ সিদ্ধান্ত, ‘মামলার উপকরণ বিচারে বোধগম্য নয় এবং অর্থহীন। আশরাফ হাকিমিসহ আমরা শান্তই আছি এবং আমরা প্রক্রিয়ার শুরুতে ছিলাম। আমরা অবশ্যই আপিলের সব রকম পথই বের করব।’ কোলিন দাবি করেন, তাঁর মক্কেল, ‘পরিকল্পিতভাবে অন্যায় দাবির শিকার’।

অভিযোগকারী নারীর আইনজীবী র‌্যাচেল–ফ্লোর প্রাদো এএফপিকে বলেছেন, ‘এই মামলার কোনো কিছুতেই অন্যায় দাবির আলামত নেই। আমার মক্কেল এ খবরে (হাকিমিকে বিচারের সন্মুখীন করা) অনেক স্বস্তি পেয়েছে।’

গত মৌসুমে পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল জয়ে দারুণ ভূমিকা ছিল হাকিমির

সম্পর্কিত নিবন্ধ