নতুন বছরের শুরু থেকেই সম্পদমূল্য কমতে শুরু করেছে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের। সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ইলন মাস্কের সম্পদমূল্য ২০২৫ সালে কমেছে ৫ হাজার ২০০ কোটি ডলার।

বিপুল পরিমাণ মূল্য কমলেও বিশ্বের ধনকুবেরদের তালিকার শীর্ষস্থানে বদল হয়নি। মাস্ক এখনো বিশ্বের সবচেয়ে ধনী। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্যানুসারে, আজ ১ মার্চ দিনের শুরুতে ইলন মাস্কের সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৩৫৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৩৫ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার। অবশ্য তাঁর সম্পদমূল্য দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৬২০ কোটি ডলার বেড়েছে।

টেসলা, স্পেসএক্স, এক্সের (সাবেক টুইটার) মতো একাধিক কোম্পানির মালিকানা আছে ইলন মাস্কের হাতে। তবে মাস্কের সবচেয়ে বিখ্যাত কোম্পানি হচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী টেসলা। এই টেসলার শেয়ার দর গত এক মাসে অনেকটা কমেছে। গত মাসে তা কমেছে ২০ শতাংশের বেশি। শেয়ার দর কমার জন্য ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে টেসলার বাজার মূলধন কমেছে এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলার। তারপরও মাস্ক নিজের শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখেত সক্ষম হন।

গত মাসে ইউরোপের বাজারে টেসলার বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ইউরোপে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা ভালোই। টেসলা সেই বাজারের অন্যতম জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। কিন্তু তারপরও গত মাসে ৪৫ শতাংশ বিক্রি কমেছে টেসলার। এর প্রভাব টেসলার শেয়ার দরেও পড়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

মূলত চীনের সস্তা বৈদ্যুতিক গাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কুলিয়ে উঠতে পারছে না টেসলা। সে কারণে টেসলার বিক্রি কমে যাচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই আমেরিকার প্রশাসনে ইলন মাস্কের গুরুত্ব কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। ডিপার্টমেন্ট অব গভর্মেন্ট এফিসিয়েন্সির প্রধান পদে বসেছেন মাস্ক। পাশাপাশি বিশ্বের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও মাস্কের সক্রিয়তা কয়েক গুণ বেড়েছে।

সম্প্রতি টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে বিশেষ ক্ষমতা পাওয়া ইলন মাস্ককে দেখা গেছে। লাল রঙে আচ্ছাদিত প্রচ্ছদে দেখা যাচ্ছে, ইলন মাস্ক হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্টের রেজল্যুট ডেস্কের পেছনে বসে আছেন, হাতে কফির পেয়ালা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ