চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঝোপের ভেতর থেকে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর নাম সবুরা খাতুন (৭২)। তিনি উপজেলার পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের মৃত মাওলা বক্সের স্ত্রী। আজ শনিবার সকালে ওই গ্রামের চেয়ারম্যান বাংলো এলাকা থেকে গলায় দড়ি প্যাঁচানো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার হয়।

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ওই বৃদ্ধাকে তাঁর জামাতা খুন করেছেন। খুনের পর ওই বৃদ্ধার কান ও গলায় থাকা সোনার গয়নাও নিয়ে গেছেন জামাতা। তিনি ঘটনার পর থেকে পলাতক।

নিহত বৃদ্ধার ছেলে মো.

ওবায়দুল হক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছোট বোন একই এলাকায় বন বিভাগের জায়গায় নির্মিত একটি ঘরে স্বামীসহ বসবাস করে আসছেন। সেখানেই থাকতেন তাঁর মা। মাদকাসক্ত হয়ে পড়া এবং বেশ কিছু চুরির ঘটনায় জড়িত হয়ে পড়ায় তাঁর ছোট বোনের স্বামী মোবারক হোসেনকে (৪০) এলাকাছাড়া করেন গ্রামের কিছু লোকজন। দুই মাস আগে তিনিসহ পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে মোবারক এলাকায় আসার সুযোগ পান। তবে আবারও মাদকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়া নিয়ে ঘরে ঝগড়াবিবাদ শুরু হয়। এরই জেরে সবুরা খাতুনকে মোবারক খুন করেছেন।

মো. ওবায়দুল হক আরও বলেন, ‘গতকাল বিকেলে আমার মাকে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে হত্যার পর লাশ ঝোপে ফেলে চলে গেছেন মোবারক। রাত ১০টার দিকে মোবারক এক প্রতিবেশীকে ফোন করে হত্যার বিষয়টি জানান। এরপর রাতভর আমার মায়ের লাশ খোঁজাখুঁজি করেছি। সকালে ঝোপের ভেতর লাশটি পেয়ে পুলিশকে জানাই।’ এ ঘটনায় বোনের স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করবেন বলেও জানান ওবায়দুল হক।

জানতে চাইলে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে। গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ওই বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলমান।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ