বুকে ও পিঠে ফেস্টুন ঝুলিয়ে সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক তরুণ। এতে লেখা কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সচেতনতার বার্তা। জেলা শহরের বিভিন্ন মোড়ে দাঁড়িয়ে একইভাবে পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। সবাই থেমে থেমে শুনছেন তাঁর কথা। তিনি পঞ্চগড়ের তরুণ সাইফুল ইসলাম শান্ত।
কিশোর অপরাধ নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়া তরুণ সাইফুল পঞ্চগড়ের আমলাহার গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। ঘুষ, দুর্নীতি, কুসংস্কার, প্রশ্নফাঁসসহ সমাজের নানা অসঙ্গতি নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে একা মানববন্ধন করেছেন।
ঢাকাসহ সারাদেশে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে এবার সিরাজগঞ্জে সচেতনতার বার্তা দিলেন তিনি। গতকাল রোববার সাইফুল কিশোর গ্যাং সেজে পথচারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি নিজে একজন (প্রতীকী) কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ছিলাম। আমাদের কার্যকলাপ সমাজের জন্য ক্ষতিকর ও বিপথগামী। আমরা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক সেবন ও বিক্রয়, খুনের মতো অপরাধে লিপ্ত হই।’
কিশোর গ্যাংয়ে জড়িত হওয়া মানে সন্তানের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া উল্লেখ করে এ তরুণ বলেন, ‘আপনার সন্তানকে আমাদের (কিশোর গ্যাং) প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সচেতন হন। তাদের সময়মতো বাড়ি ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করুন। কার সঙ্গে মেলামেশা করছে, তা নজরে রাখুন। নিয়মিত কথা বলুন।’
কোনো অভিভাবক চান না, তাঁর সন্তান কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত হোক। তেমনই কোনো শিক্ষক চান না, তাঁর ছাত্র এতে জড়িয়ে পড়ুক। সন্তান কীভাবে কিশোর গ্যাংয়ে জড়াচ্ছে– প্রশ্ন তুলে সাইফুল বলেন, এদের পেছনে রয়েছে ক্ষমতালিপ্সু পক্ষ।  
অল্প বয়সী গ্যাং সদস্যদের হাতে খুন হচ্ছে, রাস্তায় অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে উল্লেখ করে এ তরুণ বলেন, ‘কিশোর গ্যাং সদস্যরা দলবদ্ধ হয়ে নারী ধর্ষণ করছে, পুলিশকে পেটাচ্ছে। কেনই বা রাষ্ট্র কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।’
জেলা শহরের বাজার স্টেশন-সংলগ্ন সিএনজি অটোরিকশা মালিক গ্রুপের সুপারভাইজার আলী জোয়ার্দার বলছিলেন, গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে একা একা সচেতনতার দৃশ্য শহরবাসী দেখলেও খুব একটা সচেতন হয়নি। সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে এ ধরনের কর্মসূচি হাতে নিলে ভালো হতো। 
বাজার স্টেশনের শম্পা মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, ‘পঞ্চগড় থেকে এসে এ ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন দেখে হতবাক হয়েছি।’
তরুণের কথায়, দেশে অন্তত ২৩৭টি কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। 
সাইফুল সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘কিশোর অপরাধ বা কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
 
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।

বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ