বাজারে বড় দরপতন হয়েছে পেঁয়াজের। দেশি পেঁয়াজে ভরপুর থাকায় বাজারে এখন আমদানি করা পেঁয়াজের দেখা নেই। খুচরা পর্যায়ে দেশি ভালো মানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪৫ টাকায়। এ ছাড়া হাইব্রিড প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা দরে।
এমন দরপতনে শুধু ব্যবসায়ী নন, কোনো কোনো ক্রেতার কাছেও অবিশ্বাস্য ঠেকছে। দর কমায় ভোক্তা খুশি হলেও হতাশা বাড়ছে কৃষকের। এদিকে চালের বাজার এখন চড়া, সরবরাহ বাড়েনি ভোজ্যতেলের।
গত বছর এ সময়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হয়েছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৬ থেকে ৩৭ টাকায়। মহল্লায় এ মানের পেঁয়াজ কিছুটা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। সেখানে কেজিপ্রতি খরচ পড়ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। এ ছাড়া হাইব্রিড জাতের পেঁয়াজ কারওয়ান বাজার থেকে কেনা যাচ্ছে ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা দরে, যা মহল্লায় বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়।
ক্রেতা খুশি থাকলেও কৃষকরা হতাশায় ভুগছেন বলে মনে করেন পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা। পাইকারি ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান ফরিদপুর ও পাবনার কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি পেঁয়াজ এনে কারওয়ান বাজারে বিক্রি করেন। তিনি পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩২ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
এদিকে ডিমের বাজারও নিম্নমুখী। প্রথম রোজায় ফার্মের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা দরে। ডজনে ১০ টাকা কমে গতকাল বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়। মহল্লার দোকানে কেউ কেউ ডজনে ৫ টাকা বেশি রাখছেন। মুরগির দর গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা দরে।
আগের মতোই স্বস্তি সবজির বাজারে। উচ্ছে আর ঢ্যাঁড়শ ছাড়া বেশির ভাগ সবজির দর কমেছে। প্রতি কেজি উচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ এবং ঢ্যাঁড়শ ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য সবজি কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। কাঁচামরিচের কেজি ৪০ থেকে ৭০, আর টমেটোর কেজি কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে।
চালের বাজারে এখনও অস্বস্তি রয়ে গেছে। আমদানি শুল্ক কমালেও ভোক্তা সেই সুফল পাচ্ছেন না। বরং কোনো কোনো চালের দর বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। এক মাস ধরে এ দরেই রয়েছে মোটা চাল। গত এক মাসে মাঝারি ও সরু চাল কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। বর্তমানে মাঝারি চাল ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা ও সরু চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে খোলা সয়াবিনের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কোথাও কোথাও বোতলজাত তেলের সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা গেছে। তেজকুনিপাড়ার চাঁদপুর ট্রেডার্সের মালিক রুবেল হোসেন বলেন, খোলা সয়াবিন আছে। বোতলজাত তেলও দিচ্ছে কোম্পানিগুলো। তবে চাহিদার চেয়ে কম।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ রদর
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
ইসরায়েলের হামলার জেরে, সেই সঙ্গে ইসরায়েলের সহায়তায় অন্যরা এগিয়ে এলে হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে পারে ইরান। যদি এটি তারা করেই ফেলে, তাহলে তা বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটাবে, বাড়বে দাম; এমনই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এড হির্স আলজাজিরা বলেছেন, ইরান যদি হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়, তাহলে তা বৈশ্বিক তেলের দামে বিশাল প্রভাব ফেলবে।
ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা ইরিনা জানিয়েছে, ইরানের পার্লামেন্টের নিরাপত্তা কমিশনের সদস্য এসমাইল কোসারি বলেছেন, ইসরায়েলের হামলার জবাবে হরমুজ প্রণালি বন্ধের বিষয়টি ইরান ‘গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে’।
আরো পড়ুন:
রাতভর ইরানের হামলায় ইসরায়েলে নিহত ৭, আহত ২০০
ইরানে নিরাপদে আছেন ৬৬ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী
এ বিষয়ে আলজাজিরাকে এড হির্স বলেন, “হরমুজ প্রণালি দিয়ে প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পরিবাহিত হয় অর্থাৎ বৈশ্বিক তেলের বাজারের প্রায় ২০ শতাংশ এই প্রণালি দিয়ে যায়।”
তিনি আরো বলেন, “সৌদি আরব বা কুয়েতের জন্য এই অঞ্চল থেকে তেল রপ্তানির তেমন কোনো সহজ বিকল্প পথ নেই।”
হির্স ব্যাখ্যা করে বলেন, “যদি এই প্রবাহ অর্ধেকে নেমে আসে, তাহলে বিশ্ববাজারে ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম ১২০ ডলারের ওপরে উঠে যেতে পারে। আর এটি এমন একটি প্রভাব হবে, যা খুব দ্রুতই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।”
তিনি আরো বলেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধের ঘটনা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি অজুহাত দিতে পারে ইরানে হামলার জন্য; যদিও ট্রাম্প ইরানের প্রতি কঠোর অবস্থান বজায় রাখলেও ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাত শেষ করতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।
হির্স বলেন, “যদি ইরান তেল সরবরাহ বন্ধ করে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে সরাসরি আঘাত হানে, তাহলে সেটিই হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে সামরিকভাবে জড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় কারণ বানিয়ে তুলবে।”
ঢাকা/রাসেল