পথেঘাটে নারীকে হেনস্তা করা হচ্ছে কেন, প্রশ্ন সেলিমা রহমানের
Published: 8th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ৫ আগস্টের বিপ্লবে তরুণেরা বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছেন। যেখানে ফ্যাসিস্ট সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে, সেখানে কেন এখনো নারীরা ধর্ষিত হচ্ছেন, বাসে ধর্ষিত হচ্ছেন? কেন পথেঘাটে নারীদের নির্যাতন–হেনস্তা করা হচ্ছে?
সেলিমা রহমান বলেন, একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলছে!
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সেলিমা রহমান। বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী মহিলা দল নারী দিবস উপলক্ষে আজ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শোভাযাত্রাপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সেলিমা রহমান।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় যেটা, সেটা হলো নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈষম্য। অর্থাৎ পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি এখনো আমাদের ওপর আছে। এ কারণে একজন মা, একজন স্ত্রী তার ঘরের সম্মান পায় না। মাগুরাতে যে ঘটনা ঘটেছে, তা ঘটেছে পরিবার থেকে। পরিবারে নারীদের অধিকার দেওয়ার চর্চা নেই।’ নারীনেত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাইকে সচেতন হতে হবে। অধিকার কোনটা, সমতা কোনটা—তা বুঝতে হবে।
সেলিমা রহমান অভিযোগ করেন, ‘১৭ বছর একটা দুঃশাসনে ফ্যাসিস্ট শাসনের অধীন ছিলেন। তখন নারী নির্যাতনকে উৎসাহিত করা হতো। তাদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হতো।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির নেত্রী সেলিমা রহমান বলেন, বলা হচ্ছে মব জাস্টিজ! কিসের মব জাস্টিজ, মাইকিং করে কারা এসব করছে? সরকার কেন চুপচাপ, সরকার কেন কথা বলছে না? তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি, ইউনূস বিশ্ববিখ্যাত নন্দিত নেতা। তাঁর কাছে আশা করেছিলাম, যারা অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করছে, দেশকে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের ওপর কঠিন হবে, তাদের শাস্তি দেবেন।’
ছাত্রদের গঠিত নতুন দল নিয়েও কথা বলেন সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘তোমরা দল করেছ, স্বাগত জানাই। আজকাল ছাত্র–জনতা বলে, বৈষম্যবিরোধী বলে যে কেউ দু–তিনজন করে বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন অফিস–আদালতে বসে থাকছে, তারা ভাগ চাইছে। এখন তোমাদের উচিত, কথা বলে তাদের ফিরিয়ে আনা।’
সরকারের উদ্দেশে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আপনারা অনেক কিছু করছেন, অনেক কথা বলছেন, বলেন, করেন, কিন্তু সমাজে যে অস্থিতিশীলতা, সমাজে যে মব জাস্টিজ, সমাজে যে নারী ধর্ষণ—এসব যদি বন্ধ করতে না পারেন, তাহলে আমাদের বাংলাদেশের জনগণ যে স্বপ্ন নিয়ে এই দেশকে আবার মুক্ত করেছে, সেই স্বপ্ন পূরণ হবে না।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এটি নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র রহম ন ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শাখা সভাপতি এসএম ফরহাদ।
আগামী ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট এই কর্মসূচিগুলো অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনে থাকছে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, বিপ্লবী নাটক, গান, কবিতা, আলোচনা সভা ও বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী। কর্মসূচির সূচনা হবে ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) ভোর ৫টায় প্রতীকী সাইকেল র্যালির মাধ্যমে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে গণভবন পর্যন্ত যাবে।
আরো পড়ুন:
মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি
তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
সকাল ৯টায় টিএসসিতে থাকবে সাধারণ নাস্তার আয়োজন। এর পরপরই প্রদর্শিত হবে ‘জুলাই বিপ্লব’ ভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র। একইসঙ্গে বিপ্লবী গান ও কবিতা পরিবেশিত হবে । সকাল ১০টা থেকে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের মুখে অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা শোনার আয়োজন থাকবে।
দুপুর ২টায় একটি মাইম পরিবেশনা ও নাটক মঞ্চস্থ হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টা ও সাড়ে ৫টায় পরপর আরো দুটি নাটক প্রদর্শিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘প্ল্যানচ্যাট বিতর্ক’ অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি প্রতীকী বিতর্ক, যেখানে গণআন্দোলনে নিহতদের উত্তরাধিকার ও আত্মিক উপস্থিতিকে ঘিরে আলাপ-প্রতিআলাপের একটি রূপক পরিসর গড়ে উঠবে ।
৬ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির শুরুতেই থাকবে রাজনৈতিক ও দার্শনিক আলোচনা সভা। সকাল ১০টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পলায়নের ১ বছর: প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন’ বিষয়ে আলোচনা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তে ইসলাম প্রসঙ্গ’ শীর্ষক মতবিনিময়ের মাধ্যমে পর্দা নামবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির।
কর্মসূচির তৃতীয় দিন ৭ আগস্ট দিনব্যাপী চলবে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। সেখানে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ ও গণআন্দোলন সংশ্লিষ্ট নানা দলিল, ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করা হবে।
সার্বিক বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণজাগরণ ও ছাত্র প্রতিরোধ ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। সেই ঘটনার স্মরণে এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের পথরেখা নির্ধারণের প্রয়াসে ঢাবির টিএসসি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা আয়োজন করতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।”
তিনি বলেন, “এ আয়োজন হবে শিল্প, সংস্কৃতি, স্মৃতি ও রাজনৈতিক ভাবনার এক সংমিশ্রণ। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রেরণা। আর সংস্কৃতির মাধ্যমে আমরা সেই প্রতিরোধ চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী