অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ৫ আগস্টের বিপ্লবে তরুণেরা বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছেন। যেখানে ফ্যাসিস্ট সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে, সেখানে কেন এখনো নারীরা ধর্ষিত হচ্ছেন, বাসে ধর্ষিত হচ্ছেন? কেন পথেঘাটে নারীদের নির্যাতন–হেনস্তা করা হচ্ছে?

সেলিমা রহমান বলেন, একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলছে!

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সেলিমা রহমান। বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী মহিলা দল নারী দিবস উপলক্ষে আজ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শোভাযাত্রাপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সেলিমা রহমান।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় যেটা, সেটা হলো নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈষম্য। অর্থাৎ পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি এখনো আমাদের ওপর আছে। এ কারণে একজন মা, একজন স্ত্রী তার ঘরের সম্মান পায় না। মাগুরাতে যে ঘটনা ঘটেছে, তা ঘটেছে পরিবার থেকে। পরিবারে নারীদের অধিকার দেওয়ার চর্চা নেই।’ নারীনেত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাইকে সচেতন হতে হবে। অধিকার কোনটা, সমতা কোনটা—তা বুঝতে হবে।

সেলিমা রহমান অভিযোগ করেন, ‘১৭ বছর একটা দুঃশাসনে ফ্যাসিস্ট শাসনের অধীন ছিলেন। তখন নারী নির্যাতনকে উৎসাহিত করা হতো। তাদের বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হতো।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির নেত্রী সেলিমা রহমান বলেন, বলা হচ্ছে মব জাস্টিজ! কিসের মব জাস্টিজ, মাইকিং করে কারা এসব করছে? সরকার কেন চুপচাপ, সরকার কেন কথা বলছে না? তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি, ইউনূস বিশ্ববিখ্যাত নন্দিত নেতা। তাঁর কাছে আশা করেছিলাম, যারা অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করছে, দেশকে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তাদের ওপর কঠিন হবে, তাদের শাস্তি দেবেন।’

ছাত্রদের গঠিত নতুন দল নিয়েও কথা বলেন সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘তোমরা দল করেছ, স্বাগত জানাই। আজকাল ছাত্র–জনতা বলে, বৈষম্যবিরোধী বলে যে কেউ দু–তিনজন করে বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন অফিস–আদালতে বসে থাকছে, তারা ভাগ চাইছে। এখন তোমাদের উচিত, কথা বলে তাদের ফিরিয়ে আনা।’

সরকারের উদ্দেশে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আপনারা অনেক কিছু করছেন, অনেক কথা বলছেন, বলেন, করেন, কিন্তু সমাজে যে অস্থিতিশীলতা, সমাজে যে মব জাস্টিজ, সমাজে যে নারী ধর্ষণ—এসব যদি বন্ধ করতে না পারেন, তাহলে আমাদের বাংলাদেশের জনগণ যে স্বপ্ন নিয়ে এই দেশকে আবার মুক্ত করেছে, সেই স্বপ্ন পূরণ হবে না।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এটি নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র রহম ন ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
  • দুবলারচরে পুণ্যার্থীদের যাত্রা শুরু
  • বর্ণিল আয়োজনে ১৯তম সিকৃবি দিবস উদযাপন
  • জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির 
  • মিথ্যা প্রচার দিয়ে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে: মির্জা ফখরুল
  • বাংলাদেশের শত্রুতারা আবার মাথা মাথাচারা দিয়ে উঠতে শুরু করেছে: মির্জা ফখরুল
  • বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাইজিংবিডির রুমন চক্রবর্তী
  • ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
  • ইসমাইল হোসেন (মুরুব্বী) এর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া