এক দিনের সিদ্ধান্তে পেশা বদলে ফেললেন ফায়জা আহমেদ
Published: 8th, March 2025 GMT
ফায়জা আহমেদ তখন একটি অন্দরসজ্জা প্রতিষ্ঠানের মালিক। মাসিক যা উপার্জন, তাতে হেসেখেলে নির্ভার দিন কাটানো যায়। কিন্তু ফায়জার ভেতরটা খচখচ করে। কেন? ‘দেশের ঐতিহ্য মাথায় রেখে নকশা করতে চাইতাম, কিন্তু বেশির ভাগ গ্রাহক বাড়িঘর বা অফিস সাজাতে বিদেশি নকশার কথা বলতেন। তারা হয়তো বলতেন, গুগলের অফিসের মতো করে সাজিয়ে দিন!’ ফায়জার সরল উত্তর।
গ্রাহকের চাহিদামতো কাজটা হয়তো করতেন, কিন্তু মন থেকে মানতে পারতেন না। নিজের সৃজনশীলতা দিয়ে কাজ করতে না পারার আক্ষেপ দিনে দিনে বাড়তে থাকল। একদিন স্থির করলেন, না, এভাবে আর নয়। ফায়জা বলেন, ‘দিনটি ছিল আমার জন্মদিন (২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর)। এক দিনের সিদ্ধান্তে পেশা বদলে ফেললাম।’
পড়াশোনা যেহেতু চারুকলার অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগে করছেন, সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাইলেন। ঠিক করলেন পোশাকেই শিল্পচর্চা করবেন। সামান্য পুঁজি নিয়ে ১৬টি তাঁতের শাড়ি কিনলেন। বাংলা ভাষার বিখ্যাত কবি, লেখকদের কবিতা গান জুড়ে সাধারণ শাড়িগুলোই করে তুললেন ‘অসাধারণ’। বিক্রিও হয়ে গেল। আস্তে আস্তে প্রশংসা পেতে শুরু করলেন। পান্থপথেই ছোট একটা অফিস নিলেন। নাম দিলেন ‘মানাস’। ফায়জা আহমেদের ‘মানাস’ আজ দেশের ফ্যাশন জগতে পরিচিত এক নাম। এক যুগের এই যাত্রা সহজ ছিল না। আলাপচারিতায় নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে ‘একগুঁয়ে’, ‘জেদি’ শব্দগুলো বেশ কয়েকবার উচ্চারণ করলেন ফায়জা আহমেদ। ডিজাইনার হিসেবে ‘মানাস’কে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে তাঁর এই সব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নাকি বেশ কাজে দিয়েছে।
ফায়জা আহমেদ মনের শান্তির খোঁজে গড়ে তুলেছেন ফ্যাশন হাউস ‘মানাস’.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত, থানায় অভিযোগ করায় নানাকে কুপিয়ে হত্যা
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় কয়েক বখাটের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন তার স্বজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর নানা আজগর আলীকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়ভাবে বখাটে হিসেবে পরিচিত আল-আমিন নামে এক যুবক ও তার সহযোগীরা। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আজগর আলী রায়দক্ষিণ গ্রামে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। অভিযুক্ত আল-আমিন একই গ্রামের মৃত কালু প্রামাণিকের ছেলে।
পুলিশ, নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, যে শিশুটিকে উত্ত্যক্ত করত বখাটেরা, তার মা পাঁচ বছর আগে মারা যান। মেয়েটি নানা আজগর আলীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ত। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে শিশুটিকে প্রায় উত্ত্যক্ত এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করত আল-আমিন। এ নিয়ে আজগর আলীসহ মেয়েটির স্বজন বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি। গত সোমবার মেয়েটির নানা আজগর আলী সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার অভিযোগটি তদন্ত করার পর তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয় আল-আমিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আল-আমিন চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে সহযোগীদের নিয়ে আজগর আলীর চায়ের দোকানে যায়। তারা বৃদ্ধ আজগর আলীকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাটিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা চলে গেলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আজগর আলীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাতেই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আজগর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজগর আলীর শ্যালক নজরুল ইসলাম জানান, মাদক সেবন, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত বখাটে আল-আমিন।
সিংগাইর থানার ওসি তৌফিক আজম বলেন, নিহতের বড় ছেলে আইয়ুব খান বুধবার আল-আমিনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আল-আমিন ও তার সহযোগীরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।