গানের পাশাপাশি অভিনয়েও দর্শক-শ্রোতার মনোযোগ কেড়েছেন শিল্পী পড়শী। আসছে ঈদে একই সঙ্গে দেখা মিলতে যাচ্ছে কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেত্রী পড়শীর। সম্প্রতি শিল্পী ও সংগীতায়োজক আভরাল সাহিরের সঙ্গে জুটি বেঁধে দুটি দ্বৈত গান রেকর্ড করেছেন তিনি। এর মধ্যে মহিদুল মহিম পরিচালিত নাটক ‘হৃদয়ের এক কোনে’-এর টাইটেল গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই শিল্পী জুটি। গানটির কথা লেখার পাশাপাশি সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন শিল্পী আভরাল সাহির নিজে।

নাটকের প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফারহান আহমেদ জোভান ও তানজিম সাইয়ারা তটিনী। আসছে ঈদে সুলতান এন্টারটেইনমেন্টের ইউটিউব চ্যানেলে ‘হৃদয়ের এক কোনে’ নাটকের পাশাপাশি এর টাইটেল গানটিও আলাদাভাবে প্রকাশ করা হবে বলে আভরাল সাহির ও পড়শী জানান।  

‘হৃদয়ের এক কোনে’ ছাড়াও পরিচালক মহিদুল মহিমের ‘ফেরারি মন’ নাটকের আরেকটি দ্বৈত গানে কণ্ঠ দিয়েছেন পড়শী ও আভরাল সাহির। গানের শিরোনাম ‘তুই যে আমার’। এর কথা লিখেছেন এসকে দীপ। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন আভরাল সাহির।

এই শিল্পী ও সুরকার জানান, দুটি নাটকের গানই পুরোপুরি ভিন্নধাঁচের। গল্পের কারণেই গান দুটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে। কারণ, একটাই, নাটক ও সিনেমায় চরিত্র ও গল্পের নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে গান তৈরি করতে হয়। তাই সুর-সংগীতায়োজন ও প্লেব্যাক নিয়েও ভাবতে হয় আলাদা করে। চেষ্টা করেছি, নাটকের চরিত্র ও গল্পের নানা বাঁকবদলকে কেন্দ্র করে গান দুটি তৈরি করার। অন্যদিকে পড়শী একজন পরীক্ষিত ও তারকাশিল্পী। 

সব মাধ্যমেই সমানভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই শ্রোতাদের ভালোলাগা, মন্দলাগা সম্পর্কে ধারণাও স্পষ্ট। নাটকের গান দুটিতে নিজের সেরা গায়কী তুলে ধরার চেষ্টায় এতটুকু কার্পণ্য করেননি। তাই আমাদের বিশ্বাস গান ও নাটক দুটি দর্শক-শ্রোতার মনে অনুরণন তুলবে।’

পড়শীর কথায়, ‘‘একই সঙ্গে প্লেব্যাক ও অভিনয়ের অভিজ্ঞতা সত্যি অন্যরকম। গল্প, চরিত্র, নির্মাণ এবং নাটকের গান সবকিছু মিলিয়ে ‘হৃদয়ের এক কোনে’ ও ‘ফেরারি মন’ নাটক দুটি দর্শক হৃদয় জয় করে বলেই আশা করছি।’’

প্রসঙ্গত, ‘ফেরারী মন’ নাটকে পড়শীর বিপরীতে আছেন ফারহান আহমেদ জোভান। ঈদে এসবিই ইউটিউব চ্যানেলে গানটি দর্শকের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পড়শ ন টক র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ