চাষের মাছে বাড়ছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া
Published: 8th, March 2025 GMT
এশ্চেরেশিয়া কোলাইয়ের মতো বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রতিরোধী রোগজীবাণুর উদ্ভব ও বিস্তার বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। বাংলাদেশে বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা বিভিন্ন মাছে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের হার অনেক বেশি। অন্যদিকে প্রাকৃতিক জলাশয়ে পাওয়া একই ধরনের মাছে এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের হার কিছুটা কম।
গত বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ময়মনসিংহে পরিচালিত গবেষণায় গবেষকরা ১৩০টি কই ও শিং মাছ নিয়ে কাজ করেন। এর মধ্যে ৭০টি মাছ মুক্ত জলাশয় এবং ৬০টি চাষ করা বদ্ধ জলাশয় থেকে নেওয়া। নির্বাচিত কালচার, গ্রাম-স্টেইনিং ও বায়োকেমিক্যাল পরীক্ষায় ১১৬টি মাছে ই.
পরীক্ষায় দেখা যায়, চাষকৃত মাছে পাওয়া ই. কোলাইয়ের ৭০ শতাংশ বায়োফিল্ম তৈরি করেছিল, যেখানে মুক্ত জলাশয়ে পাওয়া মাছের ক্ষেত্রে এই হার ছিল মাত্র ২০ শতাংশ। এ ছাড়া, চাষকৃত মাছের ৭ শতাংশ ই. কোলাইয়ের শক্তিশালী বায়োফিল্ম উৎপাদনকারী হিসেবে শনাক্ত হয়।
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ পরীক্ষায় দেখা যায়, এসব মাছে পাওয়া শতভাগ ই. কোলাই অ্যাম্পিসিলিন ও সেফটাজিডিমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ প্রবণতা দেখিয়েছে। চাষের মাছ থেকে পাওয়া ই. কোলাইয়ের প্রায় ৯৭ শতাংশই বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রতিরোধী ছিল, যেখানে মুক্ত জলাশয়ের মাছের ক্ষেত্রে তা ছিল ৬০ শতাংশ।
চাষের মাছ থেকে পাওয়া ই. কোলাই বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিনের সম্ভাব্য ধারক ছিল। এই গবেষণার ফল ইঙ্গিত দেয়, বাংলাদেশের মুক্ত জলাশয়ে পাওয়া ও বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা উভয় ধরনের মাছেই বেটা-ল্যাক্টামেজ প্রতিরোধী এবং বায়োফিল্ম-উৎপাদনকারী ই. কোলাইয়ের উপস্থিতি আছে। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। কারণ, এগুলো জনস্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদের জন্য সম্ভাব্য হুমকি তৈরি করতে পারে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সেই রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যা ঘটেছিল
২৩ আগস্ট রাতে আমাদের গ্রেপ্তার
সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামন, এই লেখক শেখ আবদুল আজিজ ও আবদুস সামাদ আজাদ—এই ৬ জনকে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট একসঙ্গে গ্রেপ্তার করে আমাদের পল্টনে কন্ট্রোল রুমে একটি ভাঙা বাড়িতে নেওয়া হয়। আমরা বসা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ আহমদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জনৈক কর্নেল ফারুককে অনুরোধ করেছিলেন।
কর্নেল ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সবার ট্রায়াল এখানে হবে।’ আমাদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছিল, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইয়োর করাপশন।’ এ কথা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, এটা কোর্ট নয়, আদালত নয়, কীভাবে এখানে বিচার হবে? এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরস্পরের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে মেজর ডালিম এসে এইচ এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগল। কামরুজ্জামান ডালিমকে বলেছিল, ‘এ রকম তো কথা ছিল না!’ তারপর ডালিম চলে গেল। আমাদের সামনে আমাদের সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মচারীরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিছু সময় পর তারা এসে বলল, ‘আপনারা এই গাড়ি ও মাইক্রোবাসে তাড়াতাড়ি ওঠেন; সেন্ট্রাল জেলে যেতে হবে।’ আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করলাম। আমাদের নতুন জেলে থাকার জায়গা করে দেওয়া হলো।