রাজধানীর বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ ডাকাতির চাঞ্চল্যকর ঘটনায় গ্রেপ্তার ছয়জনকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- মো. কাউছার, মো. ফরহাদ, মো. খলিলুর রহমান, মো. সুমন, দুলাল চৌধুরী ও আমিনুল।

আজ রোববার আসামিদের ঢাকার সিএমএম আদালতে উপস্থিত করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক ফরিদুর রহমান। শুনানি শেষে প্রত্যেকের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম।

এর আগে শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া স্বর্ণের মধ্যে ৪ ভরি ৯ আনা স্বর্ণ, বিক্রিত স্বর্ণের মূল্য বাবদ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত একটি ৭.

৬২ এমএম রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এই ডাকাত দলে মোট সাতজন ছিলেন। অন্যজনকে ধরতে অভিযান চলছে বলে রামপুরা থানা সূত্রে জানা যায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, রামপুরার সি ব্লকের অ্যাভিনিউ রোড-৫-এর ‘অলংকার জুয়েলার্স’ দোকানের মালিক মো. আনোয়ার হোসেন প্রতিদিনের মতো গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে দোকান বন্ধ করে ১৬০ ভরি স্বর্ণ (যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২ কোটি ৪৭ লাখ ২৪ হাজার টাকা) ও নগদ এক লাখ টাকাসহ বাসায় ফিরছিলেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে বনশ্রী ডি ব্লক, ৭ নম্বর রোডের ২০ নম্বর, নিজ ভাড়া বাসার গেটের সামনে পৌঁছামাত্র তিনটি মোটরসাইকেলে করে ছয়-সাতজন দুষ্কৃতকারী আগ্নেয়াস্ত্র, চাপাতিসহ তার গতিরোধ করে। তার কাছে থাকা স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় আনোয়ার বাধা দিলে দুষ্কৃতকারীরা তাকে চার-পাঁচ রাউন্ড গুলি করে। ওই গুলি আনোয়ারের বাঁ হাঁটু ও বাঁ পায়ে ঊরুতে আঘাত করে। এ সময় দুষ্কৃতকারীরা তাদের হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে আনোয়ারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে তার সঙ্গে থাকা সাইড ব্যাগে রক্ষিত স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

গুরুতর আহত আনোয়ারকে রামপুরার স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে আনোয়ার হোসেন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী আনোয়ারের স্ত্রী বাদী হয়ে রামপুরা থানায় একটি মামলা করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স বর ণ ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট

সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার আগে হাজতখানার ভেতর থেকে এ বি এম খায়রুল হককে বের করা হয়। এ সময় তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।

হাজতখানার ভেতর থেকে হাঁটিয়ে আদালতের ভেতরের একটি সরু রাস্তা দিয়ে খায়রুল হককে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে আনা হয়। পরে দুজন পুলিশ কনস্টেবল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের হাত ধরে রাখেন। তিনি হেঁটে হেঁটে নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠেন। পরে দোতলা থেকে আবার হেঁটে হেঁটে তিনতলায় ওঠেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়। তখন সময় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট। নিজের দুই হাত পেছনে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তখনো বিচারক আদালতকক্ষে আসেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে থাকেন। কিছুক্ষণ দেখার পর আবার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।

সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতকক্ষে আসেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. ছানাউল্লাহ। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ বি এম খায়রুল হকের নাম ধরে ডাকেন।

তখন রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা শাহবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেক মিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। এসআই খালেক মিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। সেই সংক্ষিপ্ত রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মতপ্রকাশ করেন যে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচন দুটি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলেও সংবিধান সংশোধনের জন্য মত দেন। ওই সংক্ষিপ্ত আদেশটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আদেশের পক্ষে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি), সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) মত দেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের এই তিন বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ মর্মে ঘোষণার বিপক্ষে মত দেন।’

প্রিজন ভ্যানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আজ বুধবার ঢাকার আদালত এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • বিএসবির বাশার প্রতারণার আরও ৯ মামলায় গ্রেপ্তার