কুমিল্লায় ‘শিশু ধর্ষণে’ মীমাংসার সালিস থেকে অভিযুক্ত বৃদ্ধ গ্রেপ্তার
Published: 9th, March 2025 GMT
কুমিল্লা লালমাইয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। পরে গ্রামের কয়েকজন মাতবর ঘটনাটি মীমাংসার জন্য সালিসে আয়োজন করেন। সেখানে ধর্ষণের ঘটনায় ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তবে সালিসের এক পর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, শনিবার রাত ১০টায় লালমাইয়ে ভুক্তভোগী শিশুটির বাড়িতে সালিস বসে। সেখানে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছে শিশুটির মুখে ধর্ষণের বর্ণনা শুনে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটক করে। পরে রোববার বিকেলে শিশুটির মা বাদী হয়ে ওই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন।
শিশুটির চাচা বলেন, নির্যাতিত শিশুটির ধর্ষণের অভিযোগের বর্ণনা শুনে গ্রামের মাতবরেরা অভিযুক্ত বৃদ্ধকে সালিস বৈঠকে নিয়ে আসতে বললে গতকাল রাত ১০টার দিকে গ্রামের কয়েকজন ছেলে তাকে একটি চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। বৈঠকে দুই পক্ষের লোকজন একমত হয়ে ওই বৃদ্ধকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় তার পক্ষে দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে রায় কার্যকরও করা হয়েছিল। খবর পেয়ে রাত দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে এলে সালিস বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়, পরে পুলিশও আসে। অভিযোগের বর্ণনা শুনে তারা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
সালিসে উপস্থিত ফজলুর রহমান মিন্টু বলেন, গ্রামের গণ্যমান্যদের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে শনিবার রাতে সালিস বৈঠক হয়েছে। শিশুটির ওষুধ খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা রায় করেছিল সালিসের বিচারকরা। বৃদ্ধের পক্ষে মাতবরের কাছে ২ হাজার টাকা জমা দিয়ে রায়ও কার্যকর করা হয়েছিল। কিন্তু রাত ২টায় সেনাবাহিনীর টিম গিয়ে বৃদ্ধকে আটক করে নিয়ে গেলে সালিস বৈঠক সমাপ্ত হয়।
স্থানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই রেদোয়ান হোসেন বলেন, লালমাই আর্মি ক্যাম্পের একটি টিম যাওয়ার পর খবর পেয়ে আমরা শিশুটির বাড়িতে যাই। ভিকটিম ও তার পরিবারের কথা শুনে আমরা বৃদ্ধকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে শিশুটির মা মামলা করেছেন। এ মামলায় ওই বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম ওই শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রোববার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ৫০ হ জ র ট ক ওই ব দ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
ঋত্বিকের বাড়ি যেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’
বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার এক বছর পার হয়েছে। একসময়ের ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি এখন কেবলই ইটের স্তূপ আর আগাছায় ভরা এক ধ্বংসস্তূপ। স্মৃতিচিহ্ন বলতে টিকে আছে ভাঙা ইটের পাঁজা আর কয়েকটি ভাঙা দেয়াল, যেখানে গত বছর আঁকা হয়েছিল ঋত্বিকের একটি পোর্ট্রেট। সেই দেয়ালই যেন নির্বাক হয়ে জানান দিচ্ছে এক সাংস্কৃতিক অবহেলার করুণ ইতিহাস।
গতকাল রোববার ঋত্বিকের পৈতৃক ভিটায় গিয়ে দেখা যায়, খসে পড়া দেয়ালে ‘বাড়ী থেকে পালিয়ে’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘অযান্ত্রিক’-এর মতো সিনেমার নাম ও চিত্রকর্ম আঁকা। এর মাঝে মোটা ফ্রেমের চশমা চোখে ছোট চুলের ঋত্বিক ঘটক যেন তাকিয়ে আছেন তাঁরই বাড়ির ধ্বংসাবশেষের দিকে।
অথচ এই বাড়ির সূত্রেই বহু মানুষ রাজশাহীকে চিনেছেন। কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ঋত্বিকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’ দেখার স্মৃতিচারণায় একবার বলেছিলেন, ‘সেই সিনেমা দেখার মুগ্ধতা বুকের মধ্যে মধুর মতো জমে আছে।’ কালের পরিক্রমায় ঋত্বিকের সেই বাড়িই আজ ‘মেঘে ঢাকা তারা’ হয়ে গেছে। স্মৃতি আছে, কিন্তু অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। রাজশাহীর চলচ্চিত্রকর্মীরা চান, এই ধ্বংসস্তূপের ওপরই ঋত্বিকের স্মৃতি সংরক্ষণে টেকসই কোনো উদ্যোগ নেওয়া হোক।
ঋত্বিক ঘটক