Samakal:
2025-08-01@05:05:10 GMT

রো-কো জুটি চলবে আরও

Published: 11th, March 2025 GMT

রো-কো জুটি চলবে আরও

স্টাম্প হাতে নিয়ে দু’জনের ডান্ডি ডান্স, কিংবা ড্রেসিংরুমে ভাংড়া... ছত্রিশের বিরাট কোহলি আর সাঁইত্রিশের রোহিত শর্মাকে কোথাও গিয়ে দু’জনকে এতটুকু সিনিয়র মনে হয়নি। শুভমান-রাহুলদের সঙ্গে সমান তালে উদযাপন করেছেন তারা। নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার পর নিয়ম মেনে সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন। ভারতীয় অধিনায়ক তাঁর দলের সাফল্যের কিছু রহস্যের কথাও শুনিয়েছেন। কিন্তু দুবাইয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের কৌতূহলী মন বুঝে নিতে কষ্ট হয়নি রোহিতের। তাই সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে এসে চেয়ার ছেড়ে উঠে যাওয়া মিডিয়াকে থামিয়ে দেন। 

‘ওহ, আরেকটি কথা। আমি এখনই এই ফরম্যাট থেকে অবসর নিচ্ছি না। এটা এই কারণে জানানো যে ব্যাপারটি নিয়ে যাতে গুজব না ছড়ায়।’ অট্টহাসি তাঁর। এর আগে বিরাট কোহলিও ব্রডকাস্ট ক্যামেরার সামনে ভারতীয় এই দলের পরবর্তী লক্ষ্য নিয়ে কথা বলেন। ‘আপনি যখন দল ছেড়ে যাবেন, চাইবেন যেন দল ভালো অবস্থায় থাকে। আমি মনে করি, আমাদের ভালো একটা দল আছে। যারা আগামী আট বছর বিশ্বক্রিকেট শাসন করার সামর্থ্য রাখে। শুভমান, শ্রেয়াস, কে এল রাহুল, হার্দিক দারুণ ব্যাটিং করেছে।’ দুই দুইয়ে চার করে ভারতীয় মিডিয়ার নতুন কৌতূহল– তাহলে কি ২০২৭ বিশ্বকাপেও চলবে রো-কো জুটি (রোহিত আর কোহলিকে মিলিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় এ জুটির নামকরণ)।

সর্বশেষ আইসিসির তিনটি টুর্নামেন্টে যে দল ২৪ ম্যাচের মধ্যে ২৩টিতে জয় পেয়েছে, সেই দলের অধিনায়ক যদি বলেন আরও খেলবেন, তাতে প্রশ্ন তোলার মানুষ কোথায়। যে দল গত আঠারো মাসে দু-দুটি শিরোপা জিতেছে, সেই দলের তারকা ব্যাটার কোহলি যদি পরের বিশ্বকাপেও খেলার লক্ষ্য রাখেন, তাকেই বা থামাবেন কে? 

আসলে এই বয়সেও কোহলি যে ফিটনেস ধরে রেখেছেন, যে দক্ষতায় তিনি ইনিংস টেনে নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে করে দক্ষিণ আফ্রিকায় পরের বিশ্বকাপে তাঁকে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আর রোহিতের স্মৃতিতে টি২০ বিশ্বকাপ আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থাকলেও ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের কোনো মুহূর্ত নেই। তাই তিনিও চালিয়ে যেতে পারেন আরও দুই বছর। তবে এজন্য শুধু নিজেকে নয় দলকেও সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য তৈরি করতে হয়। যেটা কয়েক বছর ধরেই করে চলেছে ভারতীয় দল। এটাতো কেউ অস্বীকার করবে না যে এবারে দুবাইয়ের এক ভেন্যুতে পাঁচটি ম্যাচ খেলার সুবিধা পেয়েছে ভারত, তবে এটাও ঠিক গত ২০২৩ বিশ্বকাপে তারা ভিন্ন ভিন্ন ৯টি ভেন্যুতে খেলেছে। গত বছর টি২০ বিশ্বকাপে তারা নিউইয়র্কে শুরু করে শেষ ছয়টি ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাঁচটি ভিন্ন ভেন্যুতে খেলেছে। ২৩টি জয় এসেছে তাদের ষোলোটি ভেন্যুতে। 

‘আমাদের দলের মান ঠিক কী, তা এই পরিসংখ্যানই বলে দেয়। অনেক কম দলই দেখেছি, যারা কিনা টানা দুটি আইসিসি টুর্নামেন্ট জিতেছে অপরাজিত থেকে। সেখানে কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ছিল না, যা হোক হবে– এভাবেই আমরা এগিয়ে গিয়েছি। তবে আমাদের দলে সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ক্রিকেটার রয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই দেখুন, দলের এগারো জনের যে যখন ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছে, সে তার সেরাটা দিতে চেষ্টা করেছে। দলের মধ্যে বোঝাপড়াটা বেশ ভালো আমাদের। টুর্নামেন্টের আগেও বলেছি বাইরে থেকে অনেক চাপ ছিল। যদি আমরা এখানে একটি ম্যাচ হেরে যেতাম, তাহলে বাইরে থেকে অনেক কথা হতো। কিন্তু সেসব বাইরে ঠেলে ছেলেরা তাদের খেলায় মনোযোগ ধরে রেখেছে, তারা আনন্দ খুঁজে নিয়েছে ম্যাচ থেকে। এভাবেই দু-তিন বছর ধরে খেলছি আমরা আর এ কারণেই আজ এখানে।’ 

গর্বিত অধিনায়ক রোহিত। তারা যে আসলেই সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য তৈরি, তার একটা উদাহরণ বোধহয় এবারের ঋষভ পন্ত। কোচ গৌতম গম্ভীর তাঁর মতো ফর্মে থাকা ব্যাটারকে বসিয়ে রেখে এবার কে এল রাহুলকে খেলিয়েছেন। কেন? তার উত্তর কে এল রাহুল দিয়ে দিয়েছেন সব ম্যাচেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র ট ক হল আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাণিজ্যবিরোধ: ভারত কেন ট্রাম্পের নিশানায়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের বাণিজ্যনীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর হোয়াইট হাউসের শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তুতি নেওয়ার পর থেকেই এ আক্রমণের মাত্রা বেড়েছে।  

ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করছে এবং এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রাম্প যখন বিশ্বের বহু দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছিলেন, তখনই ভারতকে উদ্দেশ করে তাঁর এমন কঠোর অবস্থান সামনে উঠে আসে।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

‘ভারতের শুল্ক বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ’, গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন মন্তব্য করেন ট্রাম্প। জবাবে ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের বক্তব্য ‘লক্ষ্য করেছে’ এবং এর ‘প্রভাব মূল্যায়ন’ করবে।

যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্যবিরোধ: পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়ে

আজ থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ধার্য করা ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক গত ২ এপ্রিল হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে ঘোষিত সম্ভাব্য শুল্ক থেকে মাত্র ১ শতাংশ কম।

এ হার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ শুল্কের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে  চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশ শুল্কের চেয়ে কিছুটা কম।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, ভারত মার্কিন পণ্যকে বাজারে ঠেকাতে অতিমাত্রায় শুল্ক আরোপ করছে। সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ জ্বালানি কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এ শুল্ক ভারতের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা আরও জটিল করে তুলতে পারে। একাধিক দফা আলোচনার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ১২তম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার ভারত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়া অনেক কোম্পানির নতুন গন্তব্য হয়েছে দেশটি। মে মাসে অ্যাপলের সিইও টিম কুক জানান, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য আইফোন এখন ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে; যাতে উচ্চ শুল্ক এড়ানো যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ওটিআর) তথ্যমতে, গত বছর ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ১২৯ বিলিয়ন (১২ হাজার ৯০০ কোটি) ডলার। ভারতের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পোশাক, রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি ও কৃষিপণ্য।

ট্রাম্প কেন ভারতকে নিশানা করছেন

সম্প্রতি ট্রাম্প একাধিকবার বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভারতের ‘অতি উচ্চ’ শুল্ক আরোপের সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যও রয়েছে।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, ‘বছরের পর বছর আমরা ভারতের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ, তাদের শুল্ক অত্যন্ত বেশি।’

এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতে ভারত কিছু পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ করেছে।

ওটিআরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পণ্যবাণিজ্যে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন (৪ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের ঘাটতি দেখেছে। এটি আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। তুলনামূলকভাবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে প্রায় ২৯৫ বিলিয়ন (২৯ হাজার ৫০০ কোটি) ডলারের বাণিজ্যঘাটতিতে ছিল।

আরও পড়ুনভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা, ইরানের পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ ৩১ জুলাই ২০২৫

ট্রাম্প আরও ক্ষুব্ধ যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে।

‘এ মুহূর্তে যখন সবাই চায় ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ হোক, তখন ভারত চীনের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানির সর্ববৃহৎ ক্রেতা’, বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন ট্রাম্প।

ভারতের প্রতিক্রিয়া

এ সপ্তাহে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ভারত সরকার ট্রাম্পের ওই বক্তব্যে তুলনামূলকভাবে মৃদু, তবে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ভারতের ওপর ধার্য করা শুল্কহার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশের চেয়ে বেশি। তবে গত মে মাসে চীনের ওপর আরোপিত ৩০ শতাংশের চেয়ে কিছুটা কম।

বুধবার দেওয়া এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কয়েক মাস ধরে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।’

আগস্টের শেষ দিকে দুই দেশের মধ্যে আরেক দফা বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’৩০ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কে ভারতের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কী বলছেন অর্থনীতিবিদেরা১৪ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ