বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেছেন, “দেশে একটি মহল অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে এবং বিএনপিকে দোষারোপ করে জনবিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে, তবে তাদের এই অপচেষ্টা সফল হবে না।”

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহীর একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে বিভাগের বিভিন্ন জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘একটি মহল দেশে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা চেষ্টা করছে বিএনপিকে দোষারোপ করে জনবিচ্ছিন্ন করার। কিন্তু সেই অপচেষ্টা সফল হবে না। আওয়ামী লীগ অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু বিএনপির ক্ষতি করতে পারেনি। অন্য কেউও পারবে না।’’

আব্দুস সালাম বলেন, ‘‘গত ৫ আগস্টের সাত মাস পরও দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। মানুষ জানতে চায়, নির্বাচন কবে হবে, কীভাবে হবে এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আগে ছিল, এখনো চলছে। যারা নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায়, তাদের বিষয়ে সন্দেহ আছে। তারা কি আবারও আওয়ামী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়?’’

বিএনপি নেতাকর্মীদের সংগ্রামের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘বিএনপির নেতাকর্মীরা ১৭ বছর ধরে লড়াই করছেন, নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তবু তারা ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রতিশোধপরায়ণ হননি, যেন দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির অবনতি না হয়।’’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম ও ওবায়দুর রহমান চন্দন, কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।

সভায় রাজশাহী বিভাগের বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষকদল, মহিলাদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অংশ নেন। সেখানে ৫ আগস্টের পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা হয়।

ঢাকা/কেয়া/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স থ ত ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। 

শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।

২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।

এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ