দু-একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বিলম্বিত করার পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান। আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর নাম উল্লেখ করেননি তিনি।

আহমেদ আজম খান বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, দু–একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য নানা ধরনের পাঁয়তারা করছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আমরা মনে করি, কারও ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থে আমরা জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেওয়া যাবে না। এ মুহূর্তে নির্বাচন বিলম্বিত করা মানেই জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেওয়া। তাই প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলব, তাঁর জন্য সুবর্ণ সুযোগ, একটি অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেওয়া।’

আজম খান বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি, দু-একটি রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিয়ে ইফতার করছে। তারা একবার বলছে ফ্যাসিবাদের দোসরদের ক্ষমা করে দেবে, আরেক সময় বলছে তাদের বিচার করবে। একেক দিন একেক কথা বলে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে, জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। সব রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে বলব, এমন কোনো দায়িত্বহীন বক্তব্য দেবেন না, যাতে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয়।’

এ বছরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আজম খান বলেছেন, নির্বাচিত সরকারই দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

আজম খান বলেন, ‘এ বছরের ভেতরই অবাধ এবং নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করাতে হবে। দীর্ঘ সাত মাসে আমরা লক্ষ করছি, সংস্কার খুব মন্থরগতিতে এগোচ্ছে। সংস্কারের কিছু প্রস্তাবনা জমা হয়েছে বটে, কিন্তু এর বাস্তবায়ন নিয়ে এখনো একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়নি।’

আজম খান আরও বলেন, ‘বাইরের উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্রগুলো মনে করছে, নির্বাচিত সরকারের সময়ই তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। এ মুহূর্তে বিদেশি বিনিয়োগ একবারে শূন্যের কোঠায়। কাজেই বিদেশি বিনিয়োগসহ দেশকে অর্থনৈতিকভাবে দাঁড় করাতে হলে এ মুহূর্তে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন। যেটা আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছি।’

সংবাদ সম্মেলনের আগে চট্টগ্রাম বিভাগীয় নেতাদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা

এদিকে সাংবাদিকদের ‘অবাঞ্ছিত’ বলে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বিএনপি নেতা আহমেদ আজম খান। নগরের কমিউনিটি সেন্টারে সকাল থেকে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় মতবিনিময় সভা চলেছে। বেলা একটার দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের জানানো হয়, বেলা দুইটায় সংবাদ সম্মেলন হবে। নির্দিষ্ট সময়ে সাংবাদিকেরা সেখানে গেলেও যথাসময়ে শুরু হয়নি সংবাদ সম্মেলন। একপর্যায়ে বিএনপির কর্মীরা সাংবাদিকদের সভাস্থলের পাশে বসার ব্যবস্থা করেন। এ সময় সাংবাদিকদের দেখেই মঞ্চে বসা আহমদ আজম খান বলেন, এখানে যাঁরা অবাঞ্ছিত, তাঁরা বের হয়ে যান, না হলে বের করে দেওয়া হবে। এমন আচরণে সাংবাদিকেরা বিব্রত হন। অনেকে দ্রুত সভাস্থল ত্যাগ করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ আজম খ ন আজম খ ন ব ব এনপ র ত কর র

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ