Samakal:
2025-08-01@21:55:25 GMT

চেতনে-অবচেতনে

Published: 13th, March 2025 GMT

চেতনে-অবচেতনে

আমাদের জাতীয় জীবনে রাস্তার চেয়ে বড় বন্ধু নেই। একটা দেশের স্বাধিকার, স্বাধীনতা, স্বৈরাচার উৎখাত এই রাস্তা থেকেই হয়েছে। এ দেশে যাদের কথা শোনার জন্য কেউ ছিল না, এই রাস্তা তাদের কথা শুনেছে বছরের পর বছর। যুগের পর যুগ। 
কাঁচা হোক, পাকা হোক কিংবা আধাপাকা, রাস্তা সব সময়ই দেশ ও মানুষের মমতামাখা অবলম্বন হিসেবেই ছিল।
এসব থেকে বলা যায়, দুনিয়ার সব রাস্তা পরিকল্পনাবিদরা তৈরি করলেও বাঙালির রাস্তা তৈরি করেছে তার প্রয়োজন।
আমরা সেই প্রয়োজনে তৈরি রাস্তা ধরে প্রতিদিন হেঁটে যাই। থামি। কারও সাথে দেখা হয়। কারও কাছ থেকে বিদায় নিই।
এই রাস্তাতেই হঠাৎ হঠাৎ ঘটে যায় কত বিচিত্র ঘটনা। কত মানবিক উপাখ্যান। ভুলতে না পারা কত অমানবিক গল্প। 
আমাদের রাস্তার গল্পগুলো কী দারুণই না ছিল। রাস্তার পাশে দ্বিধাহীন দাঁড়িয়ে শরবত বিক্রি দেখেও অনায়াসে কাটিয়ে দেওয়া যেত একটা নির্মোহ দুপুর। এখন মানুষেরা অস্থির, রাস্তারা দুশ্চিন্তার। রাস্তারা এখন বহুমাত্রিকও। একটু গভীরভাবে তাকালেই এই হঠাৎ রাস্তা হয়ে ওঠে কত উপলব্ধির জায়গা। 
যেমন– সেদিন রাতের গুলিস্তানের রাস্তা গমগম করছিল। চিৎকার করে ডাকছিল আঙুর ব্যবসায়ী মফিজুল। বারবার হুংকার দিচ্ছে, থাকমু না বেশিক্ষণ। মিষ্টি আঙুর থাকবে না। বেচা হইয়া যাইতেছে। নিলে নিয়া যান।
এদিকে বেচাবিক্রি নিয়ে আগ্রহ নেই খেজুর বিক্রেতা মিনহাজ সরদারের। সে এক কোট-টাই পরা ব্যাংকারের সাথে আলোচনা করছে, আমাদের আজকে এই অবস্থা কেন?
ব্যাংকার ভদ্রলোকও খেজুর না কিনে খেজুরে আলাপকেই এখন তার ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। তার সমস্ত জ্ঞান ঢেলে দিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার হাতে অফুরন্ত সময়। যে বাসে তিনি যাবেন, সে বাস চালিয়ে এখনও কাউন্টারে পৌঁছাতে পারেনি ড্রাইভার।
সবচেয়ে মুডে আছে চা বিক্রেতা নাজমুল। উচ্চ স্বরে শ্রেয়া ঘোষাল বাজিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে মুডের অবস্থা। মুম্বাইয়ের শ্রেয়া ঘোষাল জানে না ঢাকার রাস্তার পরিস্থিতি। সেও গেয়ে যাচ্ছে অবিরাম। তবে শ্রেয়ার গান ভেদ করে কানে আসছে, অদূরের স্লোগান। দিল্লি না ঢাকা?
ঢাকা, ঢাকা।
গোলামি না আজাদি?
আজাদি, আজাদি।
যারা স্লোগান দিচ্ছে, তারা শুধু স্লোগানেই ব্যস্ত নয়, তারা কিছু ভাঙচুরও করছে। 
আশপাশে এই ঘটনার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে। যারা বিষয়টাতে খুশি তারা উচ্চ স্বরে বলছে, ঠিকই আছে। যারা অখুশি, তারা ফিসফাস করছে, দেশে যে কী হইতেছে।
হঠাৎ পাশ কেটে গেল পুলিশের গাড়ি। সবাই ভাবল কিছু একটা হবে। কিন্তু কাউকে কিছু না বলে গাড়ি চলে গেল। রাস্তার সব গল্প অবশ্য সবাই দেখে না। তবে অর্ধ কিলোমিটার এই রাস্তায় কতকিছুর যে মিশ্রণ, তা এই দেশে না থাকলে বোঝা যেত না।
২.


‘হঠাৎ রাস্তায় আপিস অঞ্চলে
হারিয়ে যাওয়া মুখ চমকে দিয়ে বলে
বন্ধু, কী খবর বল?
কতদিন দেখা হয়নি’
কথাগুলো আমার নয়, কবীর সুমনের। কবীর সুমন মনে করিয়ে দেয়, এই রাস্তাতেই হারিয়ে যাওয়া মুখের সাথে দেখা হয় কদাচিৎ। বাতাসে ভেসে আসে পুরোনো কোনো ভায়োলিনের সুর। এক অদ্ভুত অনুভূতি ছুঁয়ে যায় আমাদের। যে অনুভূতি হয়তো বুঝিয়ে বলা সম্ভব নয়।
স্মৃতিরা হাতড়ে বেড়ায়। কত গল্প ভেসে আসে মনের জানালায়। চাইলেই বন্ধ করে দেওয়া যায় না সেই জানালা। বহু বছর পর যেদিন দেখা হয়েছিল আমার বন্ধু রাসেলের সাথে। আমি দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে পারিনি। অথচ এই রাস্তায় কী শঙ্কাহীন কাঁধে হাত রেখে হেঁটে গেছি স্কুলের দিনগুলোতে। রাস্তা কি আমাদের মনে রাখে কিনা জানার উপায় নেই। রাস্তার কাছে থাকে কিনা স্কুলের মতো কোনো হাজিরা খাতা? পুরোনো কেউ হেঁটে গেলে ক্লাসটিচার ফজলুল হক স্যারের মতো টিক চিহ্ন দিয়ে রাখে?
জানি না। 
আচ্ছা ফজলুল হক স্যারই-বা কেমন আছে? তার সাথে কী কখনও এই রাস্তায় দেখা হয়ে যেতে পারে?
৩. 
রাস্তাতে যেমন পাবার গল্প আছে, হারাবার গল্পও কম না। রাস্তায় চলার পথে কারও কিছু হারিয়ে গেছে শুনলে, আলাদা একটা বিষণ্নতা ভর করে।
একদিন রাস্তায় এক পরিপাটি ভদ্রলোককে দেখলাম, মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে একা একা কী যেন খুঁজছেন সদ্য বিদায়ী শীতের রাতে। কেউ নেই আশপাশে। ইচ্ছে হচ্ছিল জানতে চাই, কী হারিয়েছে?
কিন্তু জানতে গেলে একটা সমস্যাও আছে। শুধু উত্তর না একটা দায়ও চলে আসবে। রাস্তা থেকে দায়ের গল্প নিয়ে বাড়ি ফেরা কঠিন। স্বস্তিতে থাকা যায় না বাড়ি ফিরে। লোকটাকে রেখেই একটা সময় পা বাড়ালাম। নিজেই অবাক হলাম, কী অবলীলায় বিপদগ্রস্ত মানুষকে রেখে চলে এলাম। হয়তো আমার বেলায় ঘটলেও অন্য সবাই এমনই করত। রাস্তায় যার হারায়, সে মূলত একাই হয়ে যায়।
রাস্তার অনেক ক্ষমতা থাকলেও এই একা হয়ে যাওয়া ঠেকানোর ক্ষমতা তার নেই। 
৪.
একদিন দেখলাম, দৌড়ে ধরে এক ছিনতাইকারীকে মারছে সবাই। মার দেওয়া একজনের কাছে জানতে চাইলাম, কী করেছে ভাই?
খুব কনফিডেন্স নিয়ে বলল, নিশ্চয়ই খারাপ কিছু করছে, নইলে তো সবাই মারত না। 
জানতে চাইলেন, আপনি মারলেন কেন? 
আরও কনফিডেন্স নিয়ে বললেন, অন্যায়ের সাথে কোনো আপস নাই। কোনো ছাড় নাই। এইভাবে বেঁচে থাকার রাস্তা আমার পরিবার দেখায়নি। 


আমি কিছুই মেলাতে পারলাম না। তবে নতুন এক রাস্তার সন্ধান পেয়ে চুপ হয়ে গেলাম। 
রাস্তায় এমন গল্প বেড়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। আমরা হয়ে পড়েছি বিবেচনাবোধহীন। এই রাস্তা পরিহার করা ছাড়া সামাজিক জবাবদিহিতার জায়গাটাও তৈরি করা যাবে না। জানি না কীভাবে হবে, তবে হতে হবে এটা জানি। এর কোনো বিকল্প নেই।
আমাদের প্রচলিত রাস্তা আনুক শান্তির কোনো রাস্তার সন্ধান।

৫. 
হঠাৎ রাস্তায় অনেক মন খারাপ করা গল্পেরও অভাব নেই।
একদিন এক কিন্ডারগার্টেন স্কুল শিক্ষককে পেলাম এক শরবতের দোকানে টুলে বসে আছেন। খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। মাথার ওপর প্রখর রোদ। আশপাশে হুহু করে হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছে বিবেকহীন চালকসমাজ। তবে কিছুই তাকে স্পর্শ করছে না বোঝা যাচ্ছে। তিনি হয়তো তখন অন্য কোনো সমাজে অবস্থান করছেন।
একটা সময় ফোন বের করে, কাকে কাকে যেন ফোন দিলেন।
প্রথমে দুজনকে ফোন দিলেন। বললেন, মাহবুব সাহেবের অসুখ। অফিসে আসেন না। আর হেডস্যারও আসেন না। ঝামেলায় পড়ে গেছি। কাল কিছু টাকা লাগত। ৫০০ টাকা বিকাশে দিতে পারবা নাকি?
কেউ হয়তো রাজি হলো না। রাজি হলে যে উজ্জ্বল মুখের দেখা মিলত তা হয়নি। চেহারা এখনও সমান বিষাদগ্রস্ত।
আমি আরও গভীরভাবে তাকালাম। মোটামুটি প্রৌঢ় একজন মানুষ। হালকা পাকা দাড়ি। চেহারায় রাজ্যের প্রশ্ন। উত্তর অজানা। 
এবার তৃতীয়জনকে ফোন দিলেন। সে লোক শিক্ষক মহোদয় এবং আমাকে একসাথেই বুঝিয়ে দিল, পৃথিবী বড়ই নিষ্ঠুর। টাকার কথা শুনে ধুম করেই কেটেই দিল।
শিক্ষক মহোদয় ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। তারপর আরও মিনিট তিনেক দেখলেন। ফোন ব্যাক করে কিনা। 
এলো না। কী মনে করে তিনি উঠে দাঁড়ালেন। হাঁটতে হাঁটতে মিলিয়ে গেলেন রাস্তায়।
একটা হাহাকারের পাথর আমার বুকে চেপে রইল। আমার পকেটে তখন বেশ কিছু টাকা। একটা কাজের টাকা পেয়েছি। কয়েকজনকে নিজের হাতে টাকা দিয়েও এসেছি। খুব ইচ্ছে করছিল, ওনাকে থামাই। জিজ্ঞাসা করি, স্যার, কী এমন বিপদ আপনার মাত্র ৫০০ টাকা লাগবে?
করতে পারলাম না। শিক্ষক মানুষ, বেশি আত্মসম্মানবোধ থাকলে ফিরিয়েও দিতে পারেন। এমন দ্বিধায় কী করণীয় জানা নেই। বলা হলো না। মন খারাপকেই বেছে নিতে হলো। দীর্ঘশ্বাস চেপে ধরল।
মনে হলো, ফোন নাম্বারটাও যদি রাখতে পারতাম কিছুটা বেদনা কমত। কাল সকালে একটা ফোন দিয়ে জানতে পারতাম, স্যার টাকাটা কি ম্যানেজ হয়েছে?

৬.
তবে রাস্তার সব ঘটনাই মন খারাপের না। কিছু আছে আনন্দও দেয়। হাসায়। মন ভালো করে। এমন একটা গল্প বলে লেখাটা শেষ করি। গতকাল সন্ধ্যার ঘটনা। এফডিসি রেলক্রসিংয়ে সিগন্যাল পড়েছে। 
হঠাৎ ব্যাপক শব্দে গোটা বিশেক মোটরসাইকেল এসে আমার চারপাশে থামল। সামনে একটা প্রাইভেট কার। সম্ভবত কোনো নেতা। আমার পাশের রিকশায় এক মধ্যবয়স্ক চাচা বিষয়টায় খুব আতঙ্কিত। একবার চারপাশে তাকান। একবার আমার দিকে।
কিছুক্ষণ চারপাশ অবলোকন করে স্বর নিচু করে জানতে চাইলেন, এত মোটরসাইকেল কেন? ব্যাপার কি চাচা?
আমি কী বলব ভেবে না পেয়ে বললাম, পাঠাওয়ের মালিক যাচ্ছে সম্ভবত।
চাচা কিছু বললেন না। বিশ্বাস করে ফেলছেন সম্ভবত। বিশ্বাস করা ছাড়া উপায়ও নেই। এই গতির রাস্তায় এক বিষয় নিয়ে পড়ে থাকলে যেমন নিজে আগানো যায় না। তেমনি দেশও আগায় না।
সিগন্যাল উঠে গেল। তিনি এগিয়ে যাবার জন্য প্যাডেলে পা          চাপলেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এই র স ত আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ