কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘আমাদের কথা শোনা যখন থেকে বন্ধ করে দিয়েছে বিএনপি, তখন থেকে পতন শুরু হয়েছে। এখনো পর্যন্ত যারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি, আজ হোক, কাল হোক তারা হারিয়ে যাবে।’ আজ শনিবার দুপুরে যশোর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আয়োজনে ‘জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে তরুণদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

মধ্যপন্থার রাজনীতির সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমি শুনেছি, তরুণেরা মধ্যপন্থার রাজনীতি করবে, মধ্যপন্থা কী? মধ্যপন্থী মানে সুবিধাবাদী। সব প্রকার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধ লড়াই চালাতে হবে। এখানে মধ্যপন্থার সুযোগটা কোথায়?’

কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইকে পূর্ণ বিজয়ের দিকে নিয়ে যাব। যত রকম ফ্যাসিবাদ আছে, সেটা সেকুলার, ধর্মীয়, যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদ হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, এই গণ–অভ্যুত্থান কখনোই সফল হতো না, যদি খালেদা জিয়া আপসহীনভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে না থাকতেন।

বর্তমান সরকার বিষয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ড.

ইউনূসকে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বসানো হয়েছে। রক্ত দিয়ে তাঁকে নির্বাচিত করা হয়েছে। তাহলে ভোট গুরুত্বপূর্ণ নাকি রক্ত গুরুত্বপূর্ণ?’ তিনি বলেন, ‘একাত্তরে আমরা বিপ্লব করিনি, স্বাধীনতা অর্জন করেছি। একাত্তর পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান জনঅভিপ্রায় বাস্তবায়ন করেননি। তা ছাড়া গণপরিষদ ভোটও হয়নি। ফলে রাষ্ট্র গঠনও করা সম্ভব হয়নি। অথচ রাষ্ট্রগঠনে গণপরিষদ ভোট স্বীকৃত পদ্ধতি। ফলে বাহাত্তর সালের সংবিধান কখনো, বাংলাদেশের জনগণের সংবিধান ছিল না। সেটা ছিল পাকিস্তানের সংবিধান। কারণ, সেটা যারা প্রণয়ন করেছে, তারা পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। তারা যুদ্ধের সময় ছিল না। যে কয়েকজন ছিল, তারা দিল্লির সঙ্গে সহযোগিতা করে বাংলাদেশকে দিল্লির হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন।’

তরুণদের উদ্দেশে এ কবি ও চিন্তক বলেন, ‘সংস্কার বলে কিছু নেই। সংবিধান আমরা তো বানাইতে পারি নাই। আমরা যদি দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলি, তাহলে এ পর্বে আমরা রাষ্ট্র গঠন করতে না পারলে আবারও ৫০ বছর পিছিয়ে যেতে হবে। ফলে ছাত্রদের রাষ্ট্রগঠনে গণপরিষদ ভোটের দাবি সঠিক। কিন্তু তারা এটা ব্যাখা করতে পারে না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রাচ্যসংঘ যশোরের প্রতিষ্ঠাতা লেখক বেনজীন খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ, মোহাম্মাদ রোমেল, যশোর বৈষম্যবিরোধী কমিটির মুখপাত্র ফাহিম আল ফাত্তাহ, মারুফ কবীর, যশোর নাগরিক কমিটির নেতা আশালতা প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার এ–সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ব্রাজিলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে দাঁড়াল। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, ব্রাজিল সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দমন–পীড়ন, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি, সেন্সরশিপ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো ও তাঁর হাজার হাজার সমর্থকের বিরুদ্ধে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। এগুলো ব্রাজিলে আইনের শাসনকে দুর্বল করে দিয়েছে।

ঘোষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ব্রাজিলের অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রমী নীতি ও পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো, মার্কিন নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতির ক্ষতি করছে। ঘোষণায় বলসোনারোর বিচারে যুক্ত ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে মোরায়েসের নামও আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শতাব্দীপ্রাচীন বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। ব্রাসিলিয়ার সঙ্গে ওয়াশিংটনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ২৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তবে ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্ক কবে থেকে কার্যকর হবে, তা হোয়াইট হাউসের ঘোষণায় জানানো হয়নি। এর আগে ১ আগস্ট থেকে শুল্ক কার্যকরের কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

সম্পর্কিত নিবন্ধ