আমি পাগলের মতো কেঁদেছিলাম: ঐশ্বরিয়া
Published: 18th, March 2025 GMT
১৯৯৭ সালে তামিল সিনেমার মাধ্যমে রুপালি জগতে পা রাখেন ঐশ্বরিয়া। একই বছর বলিউডে যাত্রা শুরু করেন। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য দর্শকপ্রিয় ও প্রশংসিত সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি।
বলিউডের প্রথম সারির সব নায়কের সঙ্গে কাজ করেছেন ঐশ্বরিয়া। কাজের সুবাদে একাধিক নায়কের সঙ্গে সম্পর্কেও জড়ান এই প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী। কখনো কখনো অন্যের প্রেম ভাঙার অভিযোগও উঠে তার বিরুদ্ধে। এমন এক ঘটনা ঘটেছিল অভিনেত্রী মনীষা কৈরালার সঙ্গে। তারপর পাগলের মতো কেঁদেছিলেন ঐশ্বরিয়া।
১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় মনীষা কৈরালা অভিনীত ‘বোম্বে’ সিনেমা। এতে তার অভিনয় দেখে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। রাজীব মুলচান্ডানির সঙ্গে মনীষা কৈরালার প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পেছনের নারী ঐশ্বরিয়া। এ খবর জানার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এই অভিনেত্রী। বেশ আগে শোটাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান ঐশ্বরিয়া।
‘হাম দিল দে চুকে সনম’ তারকা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন বলেন, “আমি তামিল ভাষার ‘বোম্বে’ সিনেমা দেখে এটিকে অসাধারণ মনে হয়েছিল। ১ এপ্রিল বোম্বে পৌঁছাই। কাকতালীয়ভাবে রাজীব আমাকে ফোন করেন। ‘বোম্বে’ সিনেমায় মনীষা কতটা দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন, তা আমি চিৎকার করে বলছিলাম। মনীষাকে অভিনন্দন জানাতে তাকে ফুলের তোড়া পাঠাতে চাই— এ কথাও রাজীবকে বলি।”
পরের ঘটনা বর্ণনা করে ঐশ্বরিয়া রাই বলেন, “তারপর রাজীব আমাকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তুমি কি খবরের কাগজ পড়েছো? মনীষা অভিযোগ করেছে, সে একটি প্রেমপত্র খুঁজে পেয়েছে, যা আমি তোমাকে (ঐশ্বরিয়া) লেখেছি।’ এটি আমাকে ভীষণভাবে আহত করে।”
একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে ঐশ্বরিয়া রাই বলেন, “যদি এই প্রতিবেদনের কোনো সত্যতা থাকে, তাহলে ১৯৯৪ সালের জুলাই মাসে কেন বের হয়নি? কয়েক মাসের মধ্যে এই কারণে যদি রাজীবের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়, তাহলে পুরো নয় মাস ধরে এটি নিয়ে কেন চিন্তা করছিলেন? তারপর কেন এটি প্রকাশ্যে আনলেন?”
এ ঘটনার পর পাগলের মতো কেঁদেছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “মনীষার এই ঘটনা আমার উপরে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। আমি পাগলের মতো কেঁদেছিলাম। যা কিছু ঘটেছিল তার জন্য সত্যিই খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। এতকিছু বলার পর সে (মনীষা) বারবার বলে, ‘তার উদ্ধৃতি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’ সেই বিচ্ছেদের পর তার (মনীষা) অসংখ্য সম্পর্কের খবর প্রকাশ করে মিডিয়া।”
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা
ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।
ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।
ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।
গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে। এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।