কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে রাব আল-খালি মরুভূমির নিচে থাকা পাঁচ হাজার বছরের পুরোনো সভ্যতার সন্ধান পেয়েছেন আবুধাবির খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। লোকচক্ষুর অন্তরালে বালুর নিচে থাকা প্রাচীন এ সভ্যতার সন্ধান পেতে নিজেরাই সিনথেটিক অ্যাপারচার রাডারে (এসএআর) তোলা ছবি পর্যালোচনা করতে সক্ষম এআই অ্যালগারিদম তৈরি করেন তাঁরা। সিনথেটিক অ্যাপারচার রাডারের মাধ্যমে পৃথিবীর পৃষ্ঠের ছবি তোলার সুযোগ থাকায় ছবিগুলো পর্যালোচনা করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সারুক আল-হাদিদ অঞ্চলে বালুর নিচে থাকা প্রাচীন এক মানববসতির খোঁজ দিয়েছে এআই অ্যালগরিদমটি।  

খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ডায়ানা ফ্রান্সিস বলেন, জলবায়ুর কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনেক অংশই মরুভূমি। মাটিতে মরুভূমির মধ্যে জরিপ করা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। সেই কারণে স্যাটেলাইট থেকে ছবি তোলা ব্যবহার করেছি আমরা। সারুক আল-হাদিদ অঞ্চলের প্রাচীন স্থানের ছবি বিশ্লেষণ করে অজানা প্রাচীন মানববসতি সম্পর্কে জানা গেছে।

রুব আল-খালি বিশ্বের বৃহত্তম বালিময় মরুভূমির একটি। নতুন তৈরি মেশিন-লার্নিং অ্যালগরিদমটি স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে ভূপৃষ্ঠের গভীরে বালুর নিচে চাপা পড়ে থাকা লুকানো প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান শনাক্ত করতে পারে। রাডার ইমেজের মাধ্যমে পৃথিবীর পৃষ্ঠকে গভীরভাবে চিত্রিত করা যায়। আর তা বিশ্লেষণ করে দিচ্ছে এআই।

নতুন এই স্থান আবিষ্কার প্রত্নতত্ত্ব–সংক্রান্ত গবেষণার জন্য একটি বিশাল পদক্ষেপ হতে পারে। এআই ও রিমোট সেন্সিং ব্যবহার করে জটিল সব ভূখণ্ডে প্রাচীন বসতি খুঁজে বের করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। মানুষের উপস্থিতি ছাড়াই দ্রুতগতি ও দক্ষতায় এআই বিপুল পরিমাণ ডেটা প্রক্রিয়া করে এসব তথ্য জানাতে পারে। বিজ্ঞানীরা আরব উপদ্বীপ ও বাইরের প্রাচীন সভ্যতা সম্পর্কে এআই দিয়ে আরও গভীরভাবে জানতে আগ্রহী এখন। উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন মরুভূমিতে সভ্যতার অস্তিত্ব জানাতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ