উত্তর গাজাকে দক্ষিণ থেকে বিভক্তকারী নেতজারিম করিডোরের ফের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। গাজায় যুদ্ধের ‘বাফার জোন’ সম্প্রসারণের কথা বলে এ ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। অন্যদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য ‘শেষ সতর্কতা’ জারি করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। 

এক্সে একটি পোস্টে ইসরায়েলি বাহিনী লিখেছে, গাজা উপত্যকার কেন্দ্র এবং দক্ষিণে একটি কেন্দ্রীভূত স্থলে অভিযান শুরু করেছে তারা। গত ২৪ ঘণ্টা ধরে ‘নিরাপত্তা এলাকা সম্প্রসারণ এবং উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে একটি আংশিক বাফার অঞ্চল তৈরির লক্ষ্যে এ অভিযান চলছে। এরই অংশ হিসেবে ফের নেতজারিম করিডোরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়েছে।’ গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে এই করিডোর থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি হামলার শিকার রাফায় একটি গাড়ির ভেতরে মানুষের ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ দেখে হতবাক একটি চিকিৎসক দল। তারা বলেন, আল-ইয়াসমিন মলের সামনে হামলার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। আমরা অবাক হয়ে যাই, লক্ষ্যবস্তু ছিল একটি গাড়ি। যানবাহনটিতে বেসামরিক নাগরিকদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ বলেন, ‘গাজার বাসিন্দাদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরামর্শ অনুসরণ এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের প্রত্যাবর্তন ও হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। গাজার বাসিন্দারা, এটি আপনাদের জন্য শেষ সতর্কবার্তা।’ 

দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে রাতভর বিমান হামলা চালিয়ে অন্তত ২৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। পবিত্র রমজান মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে দখলদার ইসরায়েলের গাজায় চালানো নির্বিচার হামলায় গত দু’দিনে অন্তত ৯৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৫৪৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া মঙ্গলবার ভোরে গাজায় ফের বোমাবর্ষণে নিহত ৪৩৬ জনের মধ্যে ১৮৩ শিশু রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হামাস কর্মকর্তা তাহের আল-নোনো বলেছেন, গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ সত্ত্বেও তারা আলোচনার দরজা বন্ধ করেননি। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, স্বাক্ষরিত চুক্তি থাকলে নতুন চুক্তির প্রয়োজন নেই। 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার রাতে বলেছেন, গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে পূর্ণ শক্তিতে আবার যুদ্ধ শুরু করেছে তাঁর দেশ। ‘এটা কেবল শুরু।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল কর ড র মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ